মো. জিল্লুর রহমান : মানবিক রাজনীতির তরুছায়া

  হোসেন আবদুল মান্নান

২৩ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ

উনিশশো পঁচাত্তরের পরে দীর্ঘ একুশ বছর। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রথমবারের মত গণপ্রজাতন্ত্রী  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। মন্ত্রিসভা গঠিত হলে সবচেয়ে জনসম্পৃক্ত ও জনগণ-বান্ধব স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্পন করা হয় জননেতা মো.জিল্লুর রহমানের হাতে। সেসময় প্রায় দু'বছর সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে তাঁর মন্ত্রণালয়ে কাজ করার বিরল সুযোগ হয়েছিল বিধায় তিনি আমাকে চিনতেন এবং আমার নিজ গ্রামের ঠিকানাসহ জানতেন। পিতৃতুল্য স্নেহময়তার ছায়ায় দেখতেন। মনে পড়ে, দাপ্তরিক কোনো নথিপত্রসহ বেলীরোডস্হ মন্ত্রী পাড়ার সরকারি বাসায় ভয়ে ভয়ে যখনি গিয়েছি- তিনি হাসিমুখে বলে উঠতেন, 'এসো এসো- হাই সাহেব বুঝি পাঠিয়েছেন' (সচিব, হাসনাত আবদুল হাই)? মনে পড়ে  তখন বিশিষ্ট নারী সংগঠক ও নেত্রী মিসেস আইভি রহমানও দুয়েকবার আমাকে বসতে বলেছেন। চা-নাস্তা পাঠিয়েছেন। 

২.
বিগত শতাব্দীর ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ ও প্রতিকূলমুখী রাজনীতির কষ্টিপাথরে পরীক্ষিত আপসহীন জননেতা, ভাষা সৈনিক, স্থিতধী ও পরমতসহিষ্ণু  অসামান্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। রাজনীতির অঙ্গনে জিল্লুর রহমান ছিলেন একজন অসাধারণ দেশপ্রেমিক, বিবেকবান, সাহসী ও সংবেদনশীল মানুষ। তবে বিগত  ২০০৭-২০০৮ সালে ১/১১ এর তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সমগ্র জাতি তাঁর দৃঢ়চেতা মানসিক শক্তি প্রত্যক্ষ করেছিলেন। যাঁর অকুতোভয় এবং অনড় সিদ্ধান্তের কারণে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন প্রলম্বিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকেও দ্রুত গনতান্ত্রিক ব্যবস্হায় ফিরে আসতে হয়েছিল। ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়া এবং  পরবর্তীতে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে তিনি শক্তহাতে হালধরা এক দক্ষ নাবিকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অতি ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহযোদ্ধা তথা সহচরও ছিলেন তিনি।

৩.
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক মো. জিল্লুর রহমান ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জানুয়ারি ২০০৯ মাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করা হলে তাঁকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করা হয়। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহন করেন এবং তাঁর শপথ গ্রহনের মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জ-৬ (কুলিয়ারচর-ভৈরব) আসনটি শূন্য হয়ে যায়। উল্লেখ করা যায়, জনাব জিল্লুর রহমান একই আসন থেকে ষাটের দশক এবং তৎপরবর্তীকালে ১৯৭০,৭৩ সহ পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তাঁর এই শূন্য আসনে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেসময় তাঁরই স্নেহভাজন কুলিয়ারচর গ্রুপের কর্ণধার জনৈক শিল্পপতির নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্তে তাঁর পুত্র বিশিষ্ট ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ও সংগঠক জনাব নাজমুল হাসান পাপনকে প্রার্থী করা হয় ।

৪.
আমি তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র শিক্ষা ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ'র একান্ত সচিব। আমার অফিস প্রধানমন্ত্রী'র কার্যালয়ে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে ঘটে যাওয়া পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের রেশ তখনও কাটেনি। অসংখ্য সামরিক অফিসার কিছু উশৃংখল সিপাহিদের হাতে নিহত হন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি থমথমে এবং সর্বত্র শোকাবহ পরিবেশ বিরাজমান।

মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ের কথা।  সেদিন ছিল শনিবার। সরকারি ছুটির দিন। সকাল ১০টার দিকে উপদেষ্ঠা মহোদয় আমাকে জানালেন, 'নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে নমিনেশন ফরম সংগ্রহ করে তোমাকে বঙ্গভবনে পৌঁছে দিতে হবে'। তিনি আরও বললেন, মহামান্য জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে নাজমুল হাসান পাপন নির্বাচন করবেন, জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার মনে হল, তিনি একই সঙ্গে রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলে হয়তো তাঁকে এমন দায়িত্ব দিয়েছেন।  আমি আজিমপুরের সরকারি কোয়ার্টার থেকে তাৎক্ষণিক বের হয়ে  সোজা আগারগাঁওস্হ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গিয়ে হাজির হই। ছুটির দিনেও কিছু কিছু দাপ্তরিক কাজকর্ম চালু ছিল। খোঁজ নিয়ে জানলাম, এ নমিনেশন ফরম ঢাকা থেকে নেয়া যাবে না। যিনি যে এলাকা থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হবেন সেখানকার উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দপ্তর থেকে নিতে হবে। অর্থাৎ আমাকে এখন যেতে হবে ভৈরবে। কালবিলম্ব না করে ভৈরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। ভাবছি, অফিস বন্ধ নির্বাচন অফিসারকে কোথায় পাব? যেতে যেতে ভৈরবের নেতৃস্থানীয় আমার দু'একজন বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করছিলাম। ভৈরব আমার নিজের জেলাভূক্ত এলাকা বলে কথা। সেদিন আমার পৌঁছার পূর্বেই তারা অফিসারের সাথে কথা বললেন। তাকে তাঁর বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনা হলো। অবশ্য এক্ষেত্রে আমার নয়, মহামান্যের দোহাই যাদুর মতন কাজ করেছিল। বেলা তিনটার দিকে ভৈরবের থানা নির্বাচন অফিস খোলা হল। নির্বাচন কর্মকর্তা ফরমসহ সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্র আমার হাতে তুলে দেন। প্রার্থীর পক্ষে আমি নিজেই স্বাক্ষর করে নিই। এবং বিকেল চারটায় ভৈরব থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করি। সন্ধ্যার পর পর সরাসরি বঙ্গভবনের সিংহদুয়ারে হাজির হলাম। অনুমতি পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করি। খানিকক্ষণ অপেক্ষা। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান এর সামনে আমি দাঁড়িয়ে। তিনি আমার সারাদিনের কর্মকান্ডের ফিরিস্তি শুনে আনন্দার্থে বিস্ময় প্রকাশ করলেন। তাঁর চোখেমুখের ভাষায় সেদিন আমি আশ্চর্য তৃপ্তির দ্যোতি অবলোকন করেছিলাম। আমাকে পাশে বসিয়ে আমার প্লেটে নিজ হাতে খাবার তুলে দিয়ে যেভাবে আপ্যায়ন করেছিলেন জীবদ্দশায় তা ভুলি কেমন করে? হতে পারে এটি আমার ক্ষুদ্র চাকরি জীবনের স্মরণীয় মুহূর্তের এক নির্বাচিত অধ্যায় । তাঁর মোলায়েম ও অভিজাত কন্ঠস্বরটি আজো আমার কানে প্রতিধ্বনিত হয়, মনে হয় তিনি একাধিকবার বলেছিলেন, "আহা, বাপু তুমি কতটা কষ্ট করেছো। তোমার জন্য দোয়া করি আরও বড়ো হও"।

সেদিন বঙ্গভবন থেকে বিদায় নেয়ার সময় মহামান্য রাষ্ট্রপতি বললেন, "আজ তোমাকে আরো একটু কষ্ট দিব, বাসায় যাওয়ার আগে কাগজগুলি যদি সরাসরি আমাদের পাপনের হাতে পৌঁছে দিতে তাহলে খুব ভালো হতো। দেখো তো সম্ভব কিনা"!

আমি বললাম, নিশ্চয় স্যার, অবশ্যই পৌঁছে দিব। স্যার, আমি এখনি যাচ্ছি।

আমি তখন সোজা গুলশানে যাই। ওয়েস্টিন হোটেলের বিপরীতে ঢুকে ডানদিকে মহামান্যের নিজস্ব বাসভবন আইভি টাওয়ারে পৌঁছি। লিফট ব্যবহার করে চারতলায় গিয়ে নাজমুল হাসান পাপনের হাতে হস্তান্তর করি। জনাব পাপনও পিতার মতো অত্যন্ত মানবিক এবং বিনয়ী মানুষ। তিনিও আমাকে সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ জানালেন।

সেদিন অনেক রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে ফিরলেও আত্মতুষ্টির দীর্ঘ  দিনমান ছিল আমার আনন্দে ভরপুর । লম্বা জার্নির ধকল এবং সারাদিনের ক্লান্তি ও অবসাদ নিমিষে মুছে গিয়েছিল মহামান্য রাষ্ট্রপতির কমনীয় ও মুগ্ধতাভরা সান্নিধ্যে।

৫.
মো, জিল্লুর রহমান এর কাছাকাছি  আরও একবার যাই। আমি তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলাপ্রশাসক। ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়। তিনি ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তাঁর জন্মস্থান ও মাতুলালয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর  পৈরতলা দর্শন করবেন। জেলাপ্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যােগ। স্হানীয় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনে তাঁর নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন হল। যথারীতি যথাসময়ে যাবতীয় ব্যবস্হা গ্রহন করা হল। মহামান্যের সফরকে সফল ভাবে সম্পন্ন করার নিমিত্ত বঙ্গভবনে এ-সংক্রান্তে এক প্রস্তুতি সভারও আয়োজন করা হল। জেলার পুলিশ সুপারসহ আমি সেখানে উপস্থিত হই। সেদিনও মহামান্যের সাথে অন্তরঙ্গ আলোচনার সুযোগ পেয়ে যাই। কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করি। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রবীন রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনদের প্রায় সবাইকে জানেন এবং চিনেন । সংবর্ধনা সভায় উপস্থিতি এবং আসন বিন্যাস নিয়েও পরামর্শ গ্রহন করি। এ বিষয়ে তাঁর এপিএস তথা নিকট আত্মীয় লুৎফর রহমান যথাসম্ভব সহযোগিতা করেছেন। তিনি জেলার রাজনৈতিক দিকটা সামলে নিয়ে আমাকে যথাযথ পরামর্শ দিয়েছেন।

৬.
জেলাপ্রশাসক হিসেবে আমার চাকরি তখনও নব্বই দিন পূর্ণ হয়নি। তবে দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট পরিমাণে আত্মবিশ্বাসী এবং সপ্রতিভ ছিলাম। এর পেছনে মূল প্রেষণা ছিল বোধহয় দুটো- প্রথমতঃ প্রধানমন্ত্রী'র কার্যালয় থেকে সরাসরি এখানে পদায়ন এবং আমার নিজজেলা কিশোরগঞ্জ যা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমানালগ্ন। মানুষের মনোজাগতিক ভাষা-সংস্কৃতিতে তেমন কোনো প্রভেদ ছিল না। তাছাড়া সাধারণ মানুষও কমবেশি প্রশাসন-বান্ধব। তবে রাষ্ট্রপতির সফরের ঠিক পূর্বদিন অডিটোরিয়ামের আসন বিন্যাস নিয়ে আকস্মিক জটিলতা দেখা দিল। কোন নেতা কোথায় চেয়ার পাবেন, মহামান্যের দু'পাশে কারা থাকবেন। জেলার একমাত্র প্রতিমন্ত্রী তখন ক্যাপ্টেন (অবঃ) তাজুল ইসলাম। সিনিয়র সংসদ সদস্যদের মধ্যে জনাব লুৎফল হাই সাচ্চু, এডভোকেট সায়েদুল হক ও জনাব শাহ আলম। এবং সাবেক এমপিএ এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট এমদাদুল বারী প্রমুখ। বিষয়টির স্হানীয়ভাবে সমাধান না পেয়ে খসড়া সিটিং অ্যারেন্জম্যান্টের প্রিন্ট কপি ফ্যাক্স যোগে বঙ্গভবনে পাঠিয়ে মহামান্যের সম্মতিসূচক স্বাক্ষর আনিয়ে তবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিই। মহামান্য হেলিকপ্টার যোগে এসে স্হানীয় নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে অবতরণ করলেন। রাষ্ট্রাচার, প্রটোকল, গোয়েন্দা সংস্থাসহ শতভাগ তৎপরতার সঙ্গে সকল দায়িত্ব পালন করা হল। সবকিছু যথাযথ নিয়মেই চলে। মহামান্য তাঁর নানাবাড়ির যে ঘরে ৯ মার্চ ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহন করেছিলেন ঠিক একই স্থানে তাঁকে চেয়ার-আসনে উপবিষ্ট করানো হলো। তিনিও শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করে আনন্দ পাচ্ছিলেন। তাঁর মামারা বয়সে ছোট কিন্তু তাঁদের প্রতি কী শ্রদ্ধা, মমতা এবং আন্তরিকতা তা সত্যিই বিরল। টেলিফোনে তিনি মাঝেমধ্যে আমাকে বলতেন, "তাঁরা আমার খুব কাছের স্বজন- তবে  আপনি কিন্তু সবসময় আইনানুগ ভাবে ব্যবস্হা নিবেন। সম্ভব হলেই সহযোগিতা করবেন"। আমি বিস্মিত হয়ে ভাবতাম, বিনয়ী ও কোমলপ্রাণ মানুষের অনুরোধই মনে হয় সবচেয়ে কঠোর নির্দেশনা।

৭.
জেলাপ্রশাসক সম্মেলন ছাড়াও আরও দুয়েকবার দাপ্তরিক কাজের কারণে আমাকে বঙ্গভবনে যেতে হয়েছিল। ২০১২ সালের শেষ দিকে  একবার বঙ্গভবনে প্রবেশ করি। আমি তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে কাজ করি। মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সাথে এটা আমার শেষবার দেখা। তিনি আমাকে ক্রিডেন্সিয়াল কক্ষের রাজকীয়  চেয়ারে বসতে দিয়েছিলেন। আমি খুব ইতস্তত ও বিব্রতবোধ করছিলাম। তিনি অভয় দিয়ে আমাকে বসালেন এবং আপ্যায়নের নির্দেশ দেন। চট্টগ্রামের রাজনীতির কিংবদন্তি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং অন্যান্য প্রয়াত নেতৃবৃন্দের বিষয়েও আলোচনা করছিলেন। মনে পড়ে, তিনি বলেছিলেন, "চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবরই আগ্রহ আছে। এর জন্য কারও তয়-তদবিরের প্রয়োজন হবে না"। সেদিন তিনি চট্টগ্রামের চলমান রাজনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি নিয়েও নানা গল্প করেছিলেন। এমনকি সেখানে জেলাপ্রশাসক হিসেবে আমার পদায়ন হওয়ায় তিনি বেশ খুশি হয়েছিলেন। সবসময় সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করার বিষয়ে চমৎকার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

৮.
নশ্বর এ পৃথিবীতে মানুষের জীবন অনেক ছোট, তবে কর্ম অনেক বড়ো। এই ত্রিকালদর্শী মানুষগুলো মূলতঃ তাঁদের ফেলে যাওয়া বর্ণিল আলোকরশ্মির মতন গৌরবময় অতীত দিয়েই অনবরত রচনা করে যান মানবিকতার গল্পকথা । অনাগত কালের ইতিহাসে এঁদের নিজের আসন চিহ্নিত করার দায়িত্ব অন্য কাউকে দিতে হয় না বা দেয়ার প্রয়োজনও নেই।

 

লেখক : গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।

এই বিভাগের আরো সংবাদ