আজকের শিরোনাম :

জয়তু ভারত বাংলাদেশ মৈত্রি

  মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম

১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০০ | অনলাইন সংস্করণ

মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রথম লগ্ন থেকে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব কালের ধুলোয় লেখা। এ বন্ধুত্বকে কালিমালিপ্ত করতে প্রথম থেকেই উঠে পড়ে লেগে ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিদ্বেষী পাকিস্তানপন্থী ঐ সকল মুষ্টিমেয় জনগণ ও তাদের কতিপয় নেতা যারা কোনদিনই বাংলাদেশের জন্মকে মেনে নিতে পারেননি। ওই গোষ্ঠী সবসময়ই পাকিস্তানের স্বার্থের সঙ্গে নিজেদের স্বার্থ মিলিয়ে পাকিস্তানকেই তাদের ধ্যান-ধারণা চিন্তা-চেতনা আর জন্ম-মৃত্যুর কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করে বাংলাদেশ সৃষ্টির পরেও পাকিস্তানি ভাবধারাকে তাদের জীবনের অংশ হিসেবে গণ্য করেছে। ২৫শে মার্চ রাত থেকে পাকিস্তানি গণহত্যা বাংলাদেশের প্রতিটি শহরের প্রান্তরে কান্তারে হিংস্র নখর বসিয়ে সংখ্যাহীন মানুষকে হত্যা করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের এই জীবন পাত কিন্তু ওই গোষ্ঠীর প্রাণে সামান্যতম রেখাপাত করেনি। ওদের হৃদয়ে পাকিস্তান গেল পাকিস্তান গেল এই ধ্বনি-ই আবহমান কাল প্রতিধ্বনিত হয়েছে। অথচ এই পাকিস্তান প্রীতির প্রতি পাকিস্তান সৃষ্টির অন্যতম প্রধান নায়ক শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র সৃষ্টির মাত্র কয়েক মাসের মাথায়, উপলব্ধি করেছিলেন যে এই নতুন সরকারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে যে পাঞ্জাবিরা অবস্থান করছে এবং যে বাঙালী শিখন্ডীরা তাদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে তাদের পদতলে থেকেই গদি দখলে লিপ্ত, সে সরকার পূর্ব বাংলা ও বাঙালিদের স্বার্থ কোনক্রমেই রক্ষা করবে না। এ উপলব্ধি থেকেই তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বাঙ্গালিদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা শুরু করলেন, এবং সে স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়ে পথের সন্ধান করতে লাগলেন।

এই পথ চলার ২৩ বছরের দীর্ঘযাত্রায় তিনি যে কাজগুলো করেছিলেন তার একটি সংক্ষিপ্ত চালচিত্র নিম্নরূপে অঙ্কন করা যায়:

১.    ১৯৪৬ সাল থেকেই দারিদ্র্য-পীড়িত, নির্যাতিত ও অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখেছেন এবং স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য মোটা দাগে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তুরের গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার মানুষকে তাদের অধিকার সচেতন করেছেন। এরপর সত্তুরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে দেশের মানুষের পক্ষে একক নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার লাভ করেছেন। সে নেতৃত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে ইয়াহিয়া-ভুট্টো যখন কূটচালের মাধ্যমে তার ন্যায়ানুগ ও অবশ্যম্ভাবী পাকিস্তানি ক্ষমতা লাভের পথ কন্টাকীর্ণ করে বাঙালির ভাগ্য উন্নয়নের ন্যায্য দাবিকে পদানত করতে চাইলো তখন তিনি সর্বব্যপী অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে সারাদেশ ও পৃথিবীব্যপী জনমত সৃষ্টি করে পূর্ব বাংলার সকল সরকার পরিচালনার যন্ত্র বাস্তবিক অর্থে নিজ হাতে তুলে নিয়ে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক আহ্বান.. “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” জানিয়ে এই ভূখন্ডে বসবাসরত সাড়ে সাত কোটি মানুষকে একতাবদ্ধ করলেন।
২.    একতাবদ্ধ এই বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার কালজয়ী উপাখ্যানকে মরমে গেঁথে নিরস্ত্র অবস্থা থেকে সশস্ত্র অবস্থায় উত্তরণের প্রস্তুতি নিলো। 
৩.    এলো ২৫শে মার্চ গভীর রাতের অন্ধকারে পাশবিক জিঘাংসা নিয়ে ঝাপিয়ে পরা পাকিস্তানি অপারেশন “সার্চ লাইট।” গভীর রাতে শ্বাপদের হিংস্রতা নিয়ে ইয়াহিয়া-ভুট্টো জেনারেল নিয়াজি, খাদিম হোসেন রাজা, বিগ্রেডিয়ার জাহানজেব আরবাব, টিক্কা খান, ফরমান আলী, ইয়াকুব খান, পীরজাদা, হামিদ-রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল, জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, পিলখানা ইপিআর লাইন্স, ঢাকার শাখারি বাজার, তেজগাঁও ও কাওরান বাজার বস্তি, ঢাকার সকল পুলিশ স্টেশন ও ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগসহ, গণহত্যা শুরু করলো সীমাহীন নিষ্ঠুরতায়। একই সাথে তাঁকে কারাগারে অন্তরীণ করে প্রয়োজনে হত্যা করে বাংলার মানুষকে স্তব্ধ করে দিতে চাইলো।
৪.    ফলশ্রুতিতে তিঁনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন এবং পাকিস্তানি কারাগারে অন্তরীণ হলেন।  
৫.    নয় মাসে বঙ্গোপসারে প্রবাহিত অনেক জল আর রক্তগঙ্গা পেরিয়ে বিজয় দিবস এলো।  বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলেন ১০ই জানুয়ারি, ১৯৭২।
৬.    দেশগঠনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
৭.    প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হলেন ও বাকশাল গঠিত হল।
৮.    ৭৫’ এর ১৫ই আগস্টের গণহত্যা দ্বারা বাংলাদেশের মানচিত্র উল্টে দিতে চাইলো ষড়যন্ত্রীরা।

অন্যদিকে আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সে সময় যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছিলেন তা ছিল অত্যন্ত সময়োচিত অতি প্রয়োজনীয় এবং মুক্তিযুদ্ধে আমাদের কর্মকান্ডের সম্পূরক বা পরিপূরক। যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে পাকিস্তানিদের গণহত্যার প্রতিবাদস্বরূপ ভারতীয় পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর সারমর্ম নিম্নে উদ্ধৃত করা হলো:

১)    ২৭শে মার্চ লোকসভায় স্বাধীনতাকামী বাংলার জনগণকে সমর্থন করে ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন।
২)    ৩১শে মার্চ বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে দিল্লির পার্লামেন্টে প্রস্তাব উপস্থাপন করলেন।
৩)    ৯ই আগস্ট ইন্দো-রাশিয়া মৈত্রী চুক্তি সম্পাদন করে বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকারের প্রতি পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র-চিনের বিরোধীতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন।
৪)    ১৫ই আগস্ট মুজিবের গোপন বিচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে তারবার্তা পাঠালেন।
৫)    ৩০শে সেপ্টেম্বর ব্রেজনেভ, পদগর্ণি ও কোসিগিনের সঙ্গে আলোচনা করলেন। বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তার পক্ষে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ ২৯টি রাষ্ট্রে কুটনৈতিক সফর করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মুক্তির জন্য বিশ্ব জনমত সৃষ্টি করলেন।
৬)    ২৭শে নভেম্বর মুজিবের মুক্তির জন্য ইয়াহিয়াকে আহ্বান জানালেন।
৭)    ৩রা ডিসেম্বর কোলকাতার বিশাল জনসভায় বাংলাদেশকে পুনরায় সমর্থন দিলেন।
৮)    ৩রা ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করলে ৪ঠা ডিসেম্বর ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে ৬ই ডিসেম্বর তিনি লোকসভায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ঘোষণা দিলেন।
৯)    ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় নিয়াজি বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর নিকট বিনা শর্তে আত্মসমর্থন করল ।
১০)    ৭ই জানুয়ারী ১৯৭২ শরণার্থী ফেরত পাঠানো শুরু হল।
১১)    এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত কারিসমা ও শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর পারস্পকির সহমর্মিতার রাজনৈতিক মিথস্ক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২ মার্চ বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হল।
১২)    ১০ই জানুয়ারী দিল্লীতে রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সকল ক্যাবিনেট শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাত করলেন।
১৩)    ৭ই ফেব্রুয়ারী কোলকাতায় মুজিবকে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাদর অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করলেন।
১৪)    ১৭ই মার্চ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বাংলাদেশে তিন দিনের সফর এবং পঁচিশ বছরের মৈত্রী চুক্তি সম্পাদন।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে যে স্টিম রোলার চালিয়ে পাকিস্তান বাহিনী বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তার বিরুদ্ধে আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম এবং প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয় ডঙ্কা চরম সফলতার সাথে উড্ডয়ন করেছিলাম। প্রতিরোধ যুদ্ধের সেই পর্যায়ে আমাদের প্রধান অস্ত্র ছিল জনগণের হাতে লাঠি সোটা আর পুলিশের হাত থেকে পাওয়া রাইফেল। প্রতিরোধযুদ্ধের পরবর্তী পর্বে পাকিস্তানিরা আমাদের অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র ব্যবহার করে দেশের সীমান্তে পাঠাতে বহুলাংশে সফল হয়েছিল। কিন্তু আমরা বশ্যতা স্বীকার করিনি।  বশ্যতা স্বীকার না করার প্রধান কারণ ছিল আমরা সঙ্ঘবদ্ধ ছিলাম এবং ভারতীয় সীমান্ত পার হওয়ার ব্যাপারে শ্রীমতি গান্ধীর সরাসরি অনুমতি ছিল। এমনকি আমাদের নেতৃবৃন্দকে সসম্মানে গ্রহণ করার জন্য পশ্চিম বাংলার সীমান্ত রক্ষীবাহিনীকে বিশেষভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। আমি নিজে তার সাক্ষী। ২৫শে মার্চ ১৯৭১ রাতের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাকারী বঙ্গবন্ধু কারান্তরিত হওয়ার সংবাদে কিংকর্তব্যবিমূঢ় না হয়ে ঐ মার্চের ২৯-৩০ তারিখে, আমি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠতম চার সহচরদের অন্যতম প্রধান জনাব তাজউদ্দীন আহমেদকে তার আরেকজন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী চ্যাংখালী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কলকাতার পথে স্বসম্মানে হস্তান্তর করেছিলাম। সে সংকটময় মুহূর্তে ঢাকা থেকে সীমান্ত চৌকি পর্যন্ত এ বিশাল যাত্রা পথে তারা পদব্রজে পা ফুলিয়ে, কখনও নৌকায়,কখনও গরুর গাড়িতে, আবার কখনও মোটর সাইকেলে আরোহি হয়ে অতি সঙ্গিন অবস্থায় ঝিনাইদহে আমার যুদ্ধ ক্ষেত্রে উপস্থিত হলেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী জনাব জে কে এম এ আজিজের বাসায় তাঁরা আহার, গোসল আর বিশ্রাম শেষে অতি গোপনে আমার সাথে রওনা হয়েছিলেন আমার বাহনে চড়ে। সেদিন যদি ভারত আমাদের প্রতি  বৈরি থাকতো তাহলে এ পদক্ষেপ কোনক্রমেই গ্রহণ করা যেত না। যুদ্ধ  শুরুর তারিখ  অর্থাৎ ২৫শে মার্চ রাতে যখন আমরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছি তারপরের দিন অর্থাৎ ২৬শে মার্চ থেকেই ২৪ পরগনা অঞ্চলের ভারতীয় সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রচেষ্টা চলতে থাকে। এ প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপারে তৌফিক চিরকুট পাঠিয়েছিল। ২৬শে মার্চ সে ভারতীয় জনগণের উদ্দেশ্যে পাঠানো চিরকুটে লিখেছিল, “ভারতীয় ভাইয়েরা, আমাদের গোলা-বারুদ দিয়ে সাহায্য কর।” নীচে তার সই ও সরকারি সিল বসিয়ে অনেকগুলো অনুলিপি সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছিলো। এ চিরকুটটি ভারতীয়, বিশেষ করে কোলকাতার আনন্দবাজার, যুগান্তর, স্টেট্সম্যান সহ অনেক দেশি বিদেশি পত্রিকায় যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়েছিল। তার উত্তরে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা প্রথমে তৌফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ যোগাযোগের ফলশ্রুতিতে মাত্র সপ্তাহখানেক সময়ের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ বিএসএফের আইজি গোলক মজুমদারের মাধ্যমে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের ঐ দুজন গুরুত্বপূর্ণ অতিথিকে ভারত সরকারের নিকট পাঠিয়েছিলাম। এপ্রিল মাসের ৪ ও ৫ এই দু’দিন জনাব তাজউদ্দিন মিসেস গান্ধীর সাথে তার বাসগৃহে দেখা করে তাকে জানান যে বাংলাদেশে বাঙালিরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে স্বাধীনতার জন্য। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হাতিয়ার, রসদ, গোলাবারুদ, আশ্রয়ের অনুরোধ করেন। এ সময়ে শ্রীমতি গান্ধী প্রথমেই সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। এ যোগাযোগের কারণেই ভারত সরকারের উচ্চতম পর্যায়ে অতি অল্প সময়ে সংযোগ সাধন করা সম্ভব হয়েছিল। আর এ কাজে বিভিন্ন স্তরে উচ্চতম পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছার জন্য সর্বভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান এফআর রুস্তমজি আমাদের প্রতি অকল্পনীয় সহানুভূতি প্রদর্শন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সদিচ্ছার কারণেই উল্লেখিত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

সহানুভূতির ফিরিস্তি এখানেই থেমে থাকেনি। বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যেন দ্রুততার সাথে সরকার গঠন করে তার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। সরকার গঠন করার পর অতিসত্বর ১৭ই এপ্রিল বৈদ্যনাথ তলায় সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থায় সহায়তা করেছেন এবং সরকার যাতে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করতে পারে সেজন্য আন্ত:রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ সরকারের হাতে তুলে দেন। যুদ্ধরত সৈনিকদের আহার বাসস্থানও ভাতার বন্দোবস্ত করেন।

এর কিছুদিন পূর্বেও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কমান্ডের অধীনে মুক্তিবাহিনী যুদ্ধ পরিচালনা করছিল। সরকার গঠনের পর সরকার কেন্দ্রীয় কমান্ডের অধীনে সারাদেশকে এগারটি সেক্টরে বিভক্ত করেন। অত:পর একজন প্রধান সেনাপতি তথা সর্বাধিনায়ক নিয়োগ করে তাঁর অধীনে সার্বিক যুদ্ধ পরিচালনার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর ফলে সারাদেশে যুদ্ধ গতি লাভ করেছে আর পাকিস্তানিরা কয়েক মাসের মাথায় আমাদের কঠিন চাপে পর্যদুস্ত হয়ে ইতোমধ্যে তাদের অধিকৃত সীমান্ত পর্যন্ত অবস্থান ছেড়ে দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে শক্তিশালী বাঙ্কার তৈরি করে বাঙ্কারের মধ্যে নিজেদের অবরুদ্ধ করে রেখে কোন রকমে জীবন রক্ষা করেছে। এভাবে তারা সর্বশক্তিনিয়োগ করে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করলেও প্রকৃত প্রস্তাবে তাদের সময় কেটেছে একটা চরম ভীতির মধ্যে। কারণ পাকিস্তান থেকে পাঞ্জাবি বেলুচ পাঠান সৈনিকদের যখন বাংলাদেশে “কাফির” হত্যা করার জন্য প্রেরণ করা হয়, তখন ওই মূর্খ  অবাঙালি সৈনিকদের মগজ ধোলাই করে বলা হয় যে  পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিকরা সবাই হিন্দু। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের ৯ শতাংশ মানুষ ছাড়া বাকি ৯১ শতাংশ যে খাঁটি মুসলমান এ কথা তারা এই দেশে আসার পরই উপলব্ধি করতে পারে। এবং ১২০০ মাইল দূরে পরিবার পরিজনকে ফেলে রেখে এসে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে তারা নিতান্তই দুর্বল হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে কখন কিভাবে দেশে ফিরে যাবে সে চিন্তা তাদের মানসিকভাবে নিঃশেষ করে দেয়। এমনি মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল একটা বাহিনীর পক্ষে বাঙ্কারে বসে বসে মুক্তিবাহিনীর নিয়মিত অনিয়মিত এবং গেরিলা বাহিনীর কাছে চোরা গুপ্তা মার খাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না। একদিকে পাকিস্তানিদের এই অবস্থা আর অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা তৎপরতা। মাঝে মাঝে সামনা সামনি লড়াই। ফলে প্রকৃতপক্ষে মুক্তিবাহিনী নির্ভয়ে সীমান্তের উভয়দিকে আস্তানা গাড়তে সক্ষম হয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে আগত অসংখ্য মানুষ বাস্তহারা হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ আসাম ত্রিপুরা ইত্যাদি বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় গ্রহণ শুরু করেছে। তাদের জন্য অস্থায়ী রিফিউজি ক্যাম্প তৈরি করা সহ খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা প্রাথমিকভাবে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকেই গ্রহণ করতে হয়। পরবর্তীকালে ছিটেফোঁটা আন্তর্জাতিক সাহায্য এলেও ভারতীয় সরকার এবং জনগণ নির্দ্বিধায় প্রায় এককোটি মানুষ গ্রহণ করে এবং সকল রকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। একই সাথে মুক্তিযুদ্ধে আগ্রহী বিশাল বাহিনীকে যুদ্ধের ট্রেনিং দেয়ার জন্য ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৬০ জন শিক্ষিত যুবকদের অফিসার হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য পাঠানো হয়।

এমনি কর্মকান্ডের মাধ্যমে ৯ মাসের মাথায় ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে বাঙালি প্রথমবারের মত স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ উপলিব্ধ করা শুরু করে। কিন্তু সামান্য সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলে দেশটা পাকিস্তান পন্থিদের হাতে চলে যায় আর শুরু হয় নতুন করে পাকিস্তানি ভাবধারার উত্থান।

এই অবস্থায় ৭১ এর ডিসেম্বরে পরাজিত ঐ পাকিস্তানপন্থীরা ইতিহাসের চাকা উল্টে দিয়ে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি-এর পতাকাতলে সংঘবদ্ধ হয়। এভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভাগ্যাকাশে কালো মেঘের সৃষ্টি করে বিএনপিপন্থী বাংলাদেশ বিরোধীরা। তাদের কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ী শক্তি আওয়ামী লীগ ও তার নেত্রী শেখ হাসিনার কোন অর্জন, কোন পদক্ষেপই ভালো লাগে না। বরঞ্চ তাদের গাত্রদাহন শুরু হয়।

এহেন পরিস্থিতিতে মনে রাখতে হবে বিএনপি পাকিস্তানের বন্ধু, স্বাধীন বাংলাদেশের শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ কোন অবস্থাতেই তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের উন্নতি সাধন করে শেখ হাসিনা যদি আসমান থেকে চাঁদও এনে দেয় তাহলেও খালেদা জিয়া কখনোই সন্তুষ্ট হবে না। খালেদা জিয়ার ক্ষমতা দরকার গদি দরকার। তারা সরকারে থাকলে দেশের মানুষের জন্য কেমন কাজ করে? তার প্রমাণ খুঁজতে কষ্ট করতে হয় না। তারা বিগত বছরগুলোতে যখন ক্ষমতায় ছিল তখন দেশ শাসনের নামে তারেক জিয়ার সংগৃহীত বস্তায় বস্তায় অবৈধ টাকা বিদেশ পাচারের বন্দোবস্ত পাকাপোক্ত করেছিল। তৈরি করেছে হাওয়া ভবন। সেখান থেকে খালেদা জিয়ার সাথে সমন্তরালভাবে দ্বৈত সরকার চালু রেখেছে। ওই হাওয়া ভবনটাকে তৈরি করাই হয়েছিল অবৈধভাবে ব্যবসা করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করার জন্য। তাঁর সাঁঙ্গ পাঁঙ্গরা শত শত সুটকেস ভরে টাকা আর সোনা গয়না  নিয়ে সৌদিআরবে পাচার করেছে বলে জনশ্রুতি ছিল। তাদের অন্তরের চরম জিঘাংসাকে চরিতার্থ করার জন্য এই গোষ্ঠী ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে নাই। আবার ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের পূর্ণ নেতৃত্বকে হত্যা করার জন্য খালেদা জিয়া আর তারেক জিয়ার সরাসরি নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে হাজার হাজার মানুষের জমজমাট সভায় একটি উচু বিল্ডিং এর ছাদের উপর থেকে মাটিতে ট্রাকের উপর দাঁড়ানো শেখ হাসিনাকে পরপর কয়েকটি বিশেষভাবে তৈরী পাকিস্তানি আর্জেস বোমা ছুঁড়ে সভায় সমাগত সকল নেতৃবৃন্দকে হত্যার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গ্রেনেড এর স্প্রিন্টারের আঘাত ট্রাকের ২৪ জনকে হত্যা করে। ৩০০ লোক আহত হয়। নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নারীনেত্রী আই.ভি রহমান ছিলেন। আহতদের মধ্যে ছিলেন শেখ হাসিনা। পৃথিবীর ইতিহাসে বিএনপি এভাবে একটি জঘন্যতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। 

এ সকল হত্যাকান্ডের জন্য সরাসরি দায়ী গোষ্ঠী হত্যাকান্ডের ভিকটিম গোষ্ঠীর সাথে কোনদিনই সহঅবস্থান করতে পারে না। 

পাকিস্তানপন্থী বিএনপি-র আন্তর্জাতিক সমর্থকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের সকল কর্মকান্ড, রাজনৈতিক অভিলাষ এবং দেশের মানুষের জন্য সকল উন্নয়ন প্রচেষ্টা ও সফলতা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য মনে করেনা। জনগণের জন্য যে কোন ভাল কাজ তাদের অন্তর্দাহের কারণ। আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রের চর্চা করলেও তারা বলে  স্বৈরতন্ত্র। তাদের আসল পেট ব্যথা হচ্ছে ক্ষমতায় পৌঁছার ব্যর্থতা। তারা তাদের আন্তর্জাতিক দোসরদের সহায়তায় যেন তেন ভাবে ক্ষমতায় যেতে চায়। গণতন্ত্র শুধু মুখের বুলি। এ প্রসঙ্গে আমাদের মনে রাখা দরকার যে, মুখে যতই আশ্বাস দিক যুক্তরাষ্ট্র কোনদিনই বাংলাদেশের বন্ধুত্বকে পাকিস্তানের উপরে স্থান দেয়নি দেবেও না।

বিএনপি ভুরাজনৈতিক বিবেচনায় পাকিস্তানের নির্ভরযোগ্য বন্ধু। অত্যন্ত কঠিন গাটছরায় বাধা এ বন্ধুত্ব। তারা সুযোগ পেলে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে আবার সংযুক্ত করে তাদের সে বন্ধুত্বের আকুতির মূল্য দেবে। ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন প্রমাণ করেছে যেকোনো সংকটে বিএনপি এবং তার সমমনা দলগুলো সর্বদাই যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের সঙ্গে দেন দরবার করেছে, করবে। তারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এই আশায়। তারা খুব ভালো করেই জানে স্বাধীনচেতা বাঙালি জাতি কোনদিন পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত বিএনপিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে না। 

পাশাপাশি যদি আমরা ইতিহাস ঘাটি তাহলে দেখতে পারবো ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর থেকেই ভারত সরকার এবং ভারতীয় জনগন, বিশেষ করে পশ্চিমবাংলা, ত্রিপুরা, আসাম রাজ্যসমূহের আপামর জনসাধারণ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভারত সরকারের বাঙালি জাতিসত্তার পক্ষে কাজের ফিরিস্তি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার থেকে শুরু। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুহূর্তের জন্য এ কাজে বিরতি দেন নাই। তিনি বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য সারা পৃথিবী চষে বেরিয়েছেন, পাকিস্তানি জিন্দানখানা থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন সহ ২৯টি রাষ্ট্রের সঙ্গে দেখা করে দেন-দরবার করেছেন, কূটনৈতিক সংযোগ স্থাপন করেছেন, এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঐতিহাসিক ভারত-সোভিয়েত মেত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। একাত্তুরের ডিসেম্বরে আমাদের সম্পূর্ণ বৈরী যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে আমাদের স্বাধীনতা প্রাপ্তির সকল সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা করেছিল। আর শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর কূটকৌশল এর কারণে সপ্তম নৌবহরের সকল অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করে দিয়েছিল রাশিয়ান “অষ্টম নৌ-আর্মাডা”। ভারত মহাসাগরের সেদিন যদি সেই কূটনৈতিক চাল পরিচালিত না হত, আর জাতিসংঘে আমাদের বিজয়ের আগের সপ্তাহে যদি ভারতীয় কূটনীতির সমর্থনে সোভিয়েত ইউনিয়ন বারে বারে ভেটো প্রয়োগ না করত, তাহলে পশ্চিমা কূটনৈতিক চালে পরিকল্পিত ভারত পাকিন্তান যুদ্ধের যুদ্ধবিরতি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সুদূর পরাহত করে তুলত, বঙ্গবন্ধুর জীবিত বাংলাদেশে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়তো। 

১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর এর আগের দিন, নিয়াজীকে আত্মসমর্পণে রাজি করানোর জন্য ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি ইন.সি জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার প্রতিনিধি হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর লে. জেনারেল জ্যাকব, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়াজির দপ্তরে গমন করেন। এবং কুটনৈতিক চাল চালিয়ে তাকে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করার জন্য রাজি হতে বাধ্য করান। ফলে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জনসমক্ষে জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নিকট নিয়াজি আত্মসমর্পণ করে ‘ইন্স্ট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার’-এ স্বাক্ষর করেন। একই সময়ে অর্থাৎ বিকাল ৪:৫৫ মিনিটে জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরাও স্বাক্ষর করেন। ফলে ‘ইন্স্ট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার’ দলিল সর্বজন সমক্ষে গৃহীত হয়। 

ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্পর্কিত মতামত:
ভারত বিদ্বেষী মনোভাব থেকেই ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে বাজার অস্থিরের চেষ্টা বিএনপির।- বিএনপির ভারতীয় পন্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। হা হা হা পাগলের প্রলাপ আর কি!! এই বিশ্বায়নের যুগে বিএনপির সকল নেতারা একসঙ্গে মস্তিষ্ক বিকৃতির কবলে আক্রান্ত। তিনদিনও যায়নি। দেখলাম ইত্তেফাকের খবর ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকে আপাতত যুক্ত হতে চায় না বিএনপি। (ইত্তেফাক অনলাইন ডেস্ক। প্রকাশ: ২৭শে মার্চ ২০২৪, ১৩:২৯)

আসলে বিএনপি সবকিছুতেই ভয় পায়। আন্দোলন করতেও ভয় পায়। আবার নির্বাচন করতেও ভয় পায়। তাদের মুরুব্বিরা কবে যে তাদের মুখে গ্রাস তুলে দিবে তা মনে হয় পিটার হাস-ও জানে না।


তথ্যসূত্র:
১)    Surrender at Dhaka, Birth of a Nation.-Lt. Gen. JFR Jacob. (Page: 135-148). UPL, 5th impression, March 20-21, 1st published 1997.
২)    Google
৩)    Wikipedia
৪)    লেখকের প্রত্যক্ষ বর্ণনা।

 

মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম : সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা 

এই বিভাগের আরো সংবাদ