"দংশনের অভিধান, বিষাক্ত ইতিহাস"
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০১৮, ১৩:৫৭
মশিউর রহমান, ০৫ জুলাই, এবিনিউজ: ইতিহাস! তাকে কি ইচ্ছা করলেই ভূলে যাওয়া যায়? এতো ঠুনকো শক্তির নাম তো ইতিহাস নয়? টুনকো শক্তি হলে তার নাম তো হবে পাতিহাঁস! আপনিই বা ইতিহাসকে ভূলিয়ে ফেলার কে? ইতিহাস কিন্তু সেরকম গুলিয়ে মিশিয়ে ফেলার জিনিস নয়? দিন যতই যাবে ইতিহাসের শক্তির গতি ততই বাড়বে দ্বিগুণ হারে। এটাই ইতিহাসের ধর্ম। এর ব্যত্যয় ঘটার কোন ইঙ্গিত কোন কালের ডিকশনারিতে নাই। পাওয়ায় যাবে না, গেলেও সেটি ভুল ইতিহাস।
যা হোক আসল প্রসঙ্গে আসি। মুসলিম লীগের ষড়যন্ত্র সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানের সৃষ্টি। যে আশা আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বাঙালিরা ব্রিটিশ ভারত
বিভাজন আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা রেখেছিল বাঙালিদের সেই আশা ভঙ্গ করে দিয়েছিল মুসলিম লীগ ধর্মীয় নামের সাম্প্রদায়িকতার বেড়াজালে। এজন্য ৪৭ সালেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এই স্বাধীনতা স্বাধীনতা নয় শুধু প্রভুর পরিবর্তন। ব্রিটিশদের জায়গায় এসেছে পাকিস্তানিরা। এই ষড়যন্ত্রকারীদের ভিটামিনেই বেড়ে ওঠে তাদেরই আদর্শে গড়া আরেক ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি। পাকিস্তানি মুসলিম লীগের ভাবধারা আর বিএনপির রাজনীতি একই সূত্রে গাথা। দেখুন না বাপ সন্তানের কি মিল?
পাকিস্তানিদের এই ভণ্ডামি আর ছলচাতুরীর জবাব দিতে বাঙালিদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরনের প্রত্যয় নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেয় বাঙালিরা। বিপুল ভোটে জয় পায় বটে কিন্তু বাদ সাজে কুখ্যাত পাকিস্তানিরা। প্রচার করতে থাকে
গণপরিষদে পূর্ব বাংলার সদস্যগণ প্রকৃত প্রতিনিধি নন। কোনভাবেই বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব করতে দেয়া হবে না। এরপর আরো কতো ইতিহাস........? ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত জন প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা না দিয়ে মিথ্যাচার আর ডাকাতির কারণে যেমন ৭০ এর নির্বাচনে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে সাথে রাজনীতিকভাবে মৃত্যু বরণ করে তেমনি সাময়িক সময় মিথ্যাচার আর ভোট ডাকাতি করলেও বিএনপি আজ মুসলিম লীগের মতো জনবিচ্ছিন্ন।
আসুন ইতিহাসের পাতায় হাটি। ৭৫ এর ১৫ অগাস্ট মোশতাক মেজর জিয়া ষড়যন্ত্র করে জাতির পিতাকে হত্যা করে কোন নির্বাচন ছাড়াই অবৈধভাবে বন্ধুকের নলের মাথায় ক্ষমতা দখল করে। মেজর জিয়া ৭৬ এর ৩০ শে নভেম্বর প্রধান সাময়িক আইন প্রশাসক ও ৭৭ এর ২১ শে এপ্রিল নিজে নিজেই রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। আবার তা জায়েজ করার জন্য ফন্দিফিকিরের মাধ্যমে জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিল সাধারণ জনগণের উপর। এসব ইতিহাস মনে হয় ভুলেই গেছে চোরাবাতির প্রতীক বিএনপি আর ভাঙা ঢোল বাজানো ছয় আনার সুশীলগণ? নিজে নিজেই অবৈধভাবে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি জিয়া জোরপূর্বক বৈধতা নিতে জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল ৭৭ সালের ৩০ শে মে হ্যাঁ না ভোট। এমনকি অনির্বাচিত জিয়া যা যা নীতি, কর্মসূচী হাতে নিবেন তার বৈধতাও জোরপূর্বক জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে আদায় করে নেয়। মেজর জিয়া অবৈধ পদে থেকে রাষ্ট্রীয় খরচে প্রচারণা চালালেও বিরোধী দলগুলোকে গণভোটের বিরুদ্ধে প্রচারণার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। বন্ধুকের ভয়ে জোর করে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে ভোট দেওয়ায় জিয়া। এসব ইতিহাস কিন্তু একজন খলনায়কের চরিত্রের ইতিহাস। ভোলা কি যায়?
৭৭ সালের জুন মাসে কিসের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছিল তা কি মনে আছে বিএনপি আর নামীদামী সুশীলদের? মেজর জিয়া এতোকিছু করেছিল কিন্তু সেনাবাহিনীর চাকুরীতে বহাল থেকে।
৭৮ সালের ঢাকা সিটির মেয়র হওয়ার কথা ছিল আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিমের। তখন ঢাকায় মোট ৫০টা ওয়ার্ড ছিল। নিয়ম ছিল ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলাররা মেয়র নির্বাচন করবে। আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিমের পক্ষে ছিল ৩৬ জন কমিশনার। ভোটের আগের দিন ১২ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ভোটার বানিয়েছিল মেজর জিয়ার বিএনপি এবং ভোটের দিন ২০ জন কমিশনারকে(আওয়ামী লীগের নেতা)
ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি মেজর জিয়ার বিএনপি। এভাবেই মেয়র বানিয়েছিলেন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আবুল হাসনাতকে।
৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি সামরিক আইনের অধীনে মেজর জিয়ার নির্বাচনের কথা মনে হয় এদেশের আকাশ বাতাস পন্থি সুশীলগণ ভুলে গেছে? মনে তো পড়ার কথা কিভাবে ৭৯ সালের ৫ই এপ্রিল জাতীয় সংসদকে কলুষিত করে তাঁর ১৫ই আগষ্ট, ৭৫ থেকে ৯ই এপ্রিল ৭৯ পর্যন্ত সকল অবৈধ কর্মকাণ্ড বৈধ করেছিল? বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে বেঈমানি, মুক্তিযোদ্ধা, অমুক্তিযোদ্ধাদের দ্বন্দ্ব, রাজনীতিতে অস্ত্র, অবৈধ টাকার প্রবেশ, রাজনীতিতে আমলাদের প্রবেশ, ধর্মের ব্যবহার সহ এমন কোন অবৈধ প্রথা নেই যা মেজর জিয়া চালু করেনি?
৭১ এর শক্তি জামাতকে পাকিস্তান থেকে এনে রক্তের ঋণ পরিশোধ করেছিল জিয়া।
মুসলিম লীগের জিয়া, মেজর জিয়ার বিএনপি, বিএনপির বেগম খালেদা জিয়া একই পথে হাটছে অদ্যাবধি। ৯১ এর সূক্ষ্ম কারচুপির নির্বাচন, অতিরিক্ত ভোটার সংযোগ, কালোটাকার প্রভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়েছিল। ৯১ সালে বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী জামাতের সাথে জোট বেঁধে নিষ্ঠুরতা চালায় গণতন্ত্রের উপর। ৯১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর ১১টি নির্বাচনী এলাকায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই উপনির্বাচনে বিএনপির ভোট জালিয়াতি, কারচুপি, সন্ত্রাস, অস্ত্রের ব্যবহার দেখেছে জনগণ।
৯২ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক ওয়ার্ডে গড়ে ১,০০০ ভুয়া ভোটার সংযোগ করেছিল বিএনপি।
ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মহম্মদ হানিফকে নির্বাচিত হওয়ার পরও দুই মাস পরে শপথ নিতে দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন চৌধুরী’র বিজয়ের ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিএনপি। পরাজয়ের পর দিবালোকে ৭ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
ঐতিহাসিক মাগুরার উপনির্বাচনের কথা মনে আছে তো? মনে আছে তো বিচারপতি রউফ মাগুরায় কি উপনির্বাচন উপহার দিয়েছিল? ৯৪ সালের ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত মাগুরার উপনির্বাচনে নিয়ম ভেঙে স্বয়ং তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল মন্ত্রী ও এমপিগণ ঐ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিল। মেজর জিয়ার তৈরি করা সন্ত্রাস আর কারচুপিকে হার মানিয়েছিল মাগুরার উপনির্বাচন। সমস্ত দলের বিরোধিতার শর্তেও নির্বাচন কমিশন বিএনপি প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করেছিল। এরপরও কত টালবাহানা! বিএনপির কারচুপি আর প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে দেশবাসী বারবার।
৯৬ সালের ১৫ই নির্বাচনে জনগণ ছাড়াই যে নির্বাচন বিএনপি করেছিল তাতে যে ৪০টি দলকে বিএনপি অংশ গ্রহণ করিয়েছিল সেই সব দলের
নাম জনগণ তো দুরের কথা নথিপত্রে তাদের নাম আদৌ ছিল কি না সন্দেহের ব্যাপার? ভোট কেন্দ্রে ছিল শুধুই প্রশাসনের লোকেরা। আবার বিবিসির সাংবাদিক আতাউস সামাদ প্রচার করেছিল বিএনপির বিশাল জয়!!!!
যতবারেই আওয়ামী লীগ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তুলেছে ততবারেই নির্বাচন কমিশন ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে
বিএনপি।
আবারো ২০০১ দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তাদের ক্ষমতার আসার ষ্টাইল ছিল একটু অন্যরকম। নির্বাচনের হঠাৎ দুই-এক দিন আগে দলীয় কর্মকর্তাদেরকে পরিবর্তন করে বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। অসংখ্য অতিরিক্ত ভোটার তৈরি করেছিল বিএনপির নির্বাচন কমিশন। ব্যালট পেপারের সংখ্যা ভোটার সংখ্যা অপেক্ষা ছিল অধিকতর। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তা এমন কি বিভিন্ন জেলার এসপি, ডিসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন থানার ওসি পর্যন্ত রদবদল করে নিজ দলীয় লোকদের বসিয়েছিল তারা।
ফলাফল হিসেবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নেয় বিএনপি-জামাত জোট। পাঁচ বছর অরাজকতার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে আবারো কি করে পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা যায় তার সুপরিকল্পিত উপাই খুঁজে বের করে স্বাধীনতার এই অপশক্তি। রচনা করে নির্বাচন নিয়ে ধরাছোঁয়ারর মধ্যে একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল ইতিহাসের নজিরবিহীন কুখ্যাত বিকলংক এক নির্বাচন। যে নির্বাচনে ৭১ এর পরাজিত শক্তির প্রধান পৃষ্টোপোষক বিএনপি নির্বাচন কমিশনে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছিল ঐতিহাসিকভাবে।
প্রতিটি স্তরে নির্বাচনী ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে মরিয়া হয়ে ওঠেছিল বিএনপি। সহিংসতা, মিথ্যাচার, ভোট ডাকাতি, ব্যালট ছিনতাই, প্রশাসনের নির্লজ্জ পক্ষপাত, দলীয় ক্যাডারদের মাস্তানিই যেন বলে দিচ্ছিল পূর্বপুরুষদের চরিত্রের পুরনো ঐতিহ্য। ভোট ডাকাতির নির্লজ্জতা বহি:বিশ্বে দেশকে করেছে বারবার লজ্জিত।
২০০৬ সালে তারা প্রায় দেড় কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করে ঢেলে সাজায় নির্বাচন কমিশনকে। মজার ব্যাপার হলো, এই পুতুল কমিশনের প্রধান হিসেবে তাদের এজেন্ট বিচারপতি এম এ আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে ভুয়া ভোটার লিস্ট তৈরি করে অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় আসার নীল নকশা তৈরি করেছিল বিএনপি। শুধু তাই না, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোলিং এজেন্ট থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে তাদের লোকদের নিয়োগ করেছিল। সবচেয়ে গা শিউরে ওঠার মত ব্যাপার হলো, তাদের নীল নকশার সাথে প্লান বি ও রেডি রেখেছিল তারা। কোন কারনে যদি বিচারপতি এম এ আজিজকে বাদ দেওয়া হয়, তার বিকল্প হিসেবে সম মর্যাদার দশ জন অফিসারদের এমন ভাবে সাজিয়েছিল যেন পরের যে ইসিই আসুক না কেন তারা যেন শুধু জামাত-বিএনপি'র একনিষ্ঠ সমর্থক নয়, নেতা হয়। ক্ষমতার এরূপই অদম্য লোভ তাদের।
বিএনপি জামাতের যে কি ভয়ংকর আর নৃশংসতা রুপ তা কিন্তু দেখেছে মানুষ? ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও পোড়াও এর মাধ্যমে সহিংস পথ বেছে নিয়ে গণতন্ত্রকে ফেলে দিয়েছিল হুমকির মুখে। এভাবেই নির্বাচনকে বার বার কলুষিত, কলঙ্কিত ও বিতর্কিত করার ইতিহাস জামাত-বিএনপি'র। যখনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করছে, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, তখনি বাধা দিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতে ইসলাম আর তাদের ইয়ার বন্ধু বিএনপি। এটাই হচ্ছে তাদের অতীত ইতিহাস, যাকে সচেতন জাতির একটি অংশ হিসেবে আমাদের ভুলে যাওয়া ঠিক না।
পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য কি কেউ ভুলতে পারে? যে রক্তে জন্ম আদো কি সেটি ভোলা যায়? তাদের ধারনা যেকোনো উপায়ে ভোটে জিতলেই ক’দিন পরে মানুষ এসব ভুলে যাবে। ওরে অপয়া এটা যে ইতিহাসের খেলা! ভোট ডাকাতি আর মিথ্যাচার বিএনপির আত্মবিশ্বাসে রুপ নিয়েছে বহুকাল ধরে জন্মসূত্রে। নির্বাচনী ফলাফল কিভাবে পাল্টে দেওয়া যায়, কীভাবে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্ক করা যায়, ভোট চুরির ইতিহাস কিভাবে ধরে রাখা যায় তাই হচ্ছে বিএনপির রাজনীতির গতিপথ।
বিএনপি কখনোই চায়নি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন হোক, যাতে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোটের বাক্সে তার মনোভাব প্রকাশ করতে পারে। যখনই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে স্বচ্ছতা এনেছে, নির্বাচন কমিশনকে দিনে দিনে শক্তিশালী করেছে করার চেষ্ট করেছে তখনই তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে। বিএনপি কখনোই মানযোগ্য কোনো নির্বাচন করতে পারেনি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোট ডাকাতি, জালভোট, ভুয়া ভোটার তালিকা, টাকার প্রভাব, পেশিশক্তির মহড়া এসব বিএনপির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি মুসলিম লীগ থেকে পুষ্ট করেছে মেজর জিয়া। আর তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। এ থেকে বেরিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই।
নির্বাচন কমিশনার জাকারিয়া, বিচারপতি রউফ, আবদুল আজিজের মতো দলদাস, বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনকে দেখেছে বাংলাদেশ। সহিংসতা, মানুষ হত্যা, জ্বালাও পোড়াও, গুন্ডা-হুন্ডা-টাকা-ভয়ভীতির নির্বাচনেই যেন ফিরে যায় বিএনপি বারবার পারিবারিক সূত্রে।
এই সব ইতিহাস কি কোন দিন জাতির সামনে তুলে ধরেছে যুগের পর যুগ সুবিধা খাওয়া সুবিধাভোগীদের বংশধর দুই আনার সুশীলগণ। তারা আবার বক্তব্য দেয় গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নাকি কারচুপি হয়েছে! কিছু সুবিধাবাদী সুশীল সবসময় কিছু পাওয়ায় আসায় ছুটছে অবিরাম পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে ষড়যন্ত্রের জগতে। এরাই আগামী নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে ১/১১ ও ১৪ এর ন্যায় আবারো সোচ্চার। জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশে স্বাধীন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সকল জেলা, উপজেলা, সিটিতে হচ্ছে হয়েছে স্বচ্ছ নির্বাচন।
এখানে বিতর্ক তোলার কোন সুযোগ নেই। সময় এসেছে স্বাধীন বাংলাদেশে কালো ইতিহাস রচনাকারী অপশক্তিদের মুখোশ খুলে দেওয়ার। আর প্রজন্মের সামনে তুলে ধরুন ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কিত আঁকুনিগুলির কথা। তা যেন কোনভাবেই মুঁছে না যায়?
লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটি,
সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
যা হোক আসল প্রসঙ্গে আসি। মুসলিম লীগের ষড়যন্ত্র সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানের সৃষ্টি। যে আশা আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বাঙালিরা ব্রিটিশ ভারত
বিভাজন আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা রেখেছিল বাঙালিদের সেই আশা ভঙ্গ করে দিয়েছিল মুসলিম লীগ ধর্মীয় নামের সাম্প্রদায়িকতার বেড়াজালে। এজন্য ৪৭ সালেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এই স্বাধীনতা স্বাধীনতা নয় শুধু প্রভুর পরিবর্তন। ব্রিটিশদের জায়গায় এসেছে পাকিস্তানিরা। এই ষড়যন্ত্রকারীদের ভিটামিনেই বেড়ে ওঠে তাদেরই আদর্শে গড়া আরেক ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি। পাকিস্তানি মুসলিম লীগের ভাবধারা আর বিএনপির রাজনীতি একই সূত্রে গাথা। দেখুন না বাপ সন্তানের কি মিল?
পাকিস্তানিদের এই ভণ্ডামি আর ছলচাতুরীর জবাব দিতে বাঙালিদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরনের প্রত্যয় নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেয় বাঙালিরা। বিপুল ভোটে জয় পায় বটে কিন্তু বাদ সাজে কুখ্যাত পাকিস্তানিরা। প্রচার করতে থাকে
গণপরিষদে পূর্ব বাংলার সদস্যগণ প্রকৃত প্রতিনিধি নন। কোনভাবেই বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব করতে দেয়া হবে না। এরপর আরো কতো ইতিহাস........? ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত জন প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা না দিয়ে মিথ্যাচার আর ডাকাতির কারণে যেমন ৭০ এর নির্বাচনে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে সাথে রাজনীতিকভাবে মৃত্যু বরণ করে তেমনি সাময়িক সময় মিথ্যাচার আর ভোট ডাকাতি করলেও বিএনপি আজ মুসলিম লীগের মতো জনবিচ্ছিন্ন।
আসুন ইতিহাসের পাতায় হাটি। ৭৫ এর ১৫ অগাস্ট মোশতাক মেজর জিয়া ষড়যন্ত্র করে জাতির পিতাকে হত্যা করে কোন নির্বাচন ছাড়াই অবৈধভাবে বন্ধুকের নলের মাথায় ক্ষমতা দখল করে। মেজর জিয়া ৭৬ এর ৩০ শে নভেম্বর প্রধান সাময়িক আইন প্রশাসক ও ৭৭ এর ২১ শে এপ্রিল নিজে নিজেই রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। আবার তা জায়েজ করার জন্য ফন্দিফিকিরের মাধ্যমে জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিল সাধারণ জনগণের উপর। এসব ইতিহাস মনে হয় ভুলেই গেছে চোরাবাতির প্রতীক বিএনপি আর ভাঙা ঢোল বাজানো ছয় আনার সুশীলগণ? নিজে নিজেই অবৈধভাবে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি জিয়া জোরপূর্বক বৈধতা নিতে জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল ৭৭ সালের ৩০ শে মে হ্যাঁ না ভোট। এমনকি অনির্বাচিত জিয়া যা যা নীতি, কর্মসূচী হাতে নিবেন তার বৈধতাও জোরপূর্বক জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে আদায় করে নেয়। মেজর জিয়া অবৈধ পদে থেকে রাষ্ট্রীয় খরচে প্রচারণা চালালেও বিরোধী দলগুলোকে গণভোটের বিরুদ্ধে প্রচারণার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। বন্ধুকের ভয়ে জোর করে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে ভোট দেওয়ায় জিয়া। এসব ইতিহাস কিন্তু একজন খলনায়কের চরিত্রের ইতিহাস। ভোলা কি যায়?
৭৭ সালের জুন মাসে কিসের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছিল তা কি মনে আছে বিএনপি আর নামীদামী সুশীলদের? মেজর জিয়া এতোকিছু করেছিল কিন্তু সেনাবাহিনীর চাকুরীতে বহাল থেকে।
৭৮ সালের ঢাকা সিটির মেয়র হওয়ার কথা ছিল আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিমের। তখন ঢাকায় মোট ৫০টা ওয়ার্ড ছিল। নিয়ম ছিল ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলাররা মেয়র নির্বাচন করবে। আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিমের পক্ষে ছিল ৩৬ জন কমিশনার। ভোটের আগের দিন ১২ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ভোটার বানিয়েছিল মেজর জিয়ার বিএনপি এবং ভোটের দিন ২০ জন কমিশনারকে(আওয়ামী লীগের নেতা)
ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি মেজর জিয়ার বিএনপি। এভাবেই মেয়র বানিয়েছিলেন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আবুল হাসনাতকে।
৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি সামরিক আইনের অধীনে মেজর জিয়ার নির্বাচনের কথা মনে হয় এদেশের আকাশ বাতাস পন্থি সুশীলগণ ভুলে গেছে? মনে তো পড়ার কথা কিভাবে ৭৯ সালের ৫ই এপ্রিল জাতীয় সংসদকে কলুষিত করে তাঁর ১৫ই আগষ্ট, ৭৫ থেকে ৯ই এপ্রিল ৭৯ পর্যন্ত সকল অবৈধ কর্মকাণ্ড বৈধ করেছিল? বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে বেঈমানি, মুক্তিযোদ্ধা, অমুক্তিযোদ্ধাদের দ্বন্দ্ব, রাজনীতিতে অস্ত্র, অবৈধ টাকার প্রবেশ, রাজনীতিতে আমলাদের প্রবেশ, ধর্মের ব্যবহার সহ এমন কোন অবৈধ প্রথা নেই যা মেজর জিয়া চালু করেনি?
৭১ এর শক্তি জামাতকে পাকিস্তান থেকে এনে রক্তের ঋণ পরিশোধ করেছিল জিয়া।
মুসলিম লীগের জিয়া, মেজর জিয়ার বিএনপি, বিএনপির বেগম খালেদা জিয়া একই পথে হাটছে অদ্যাবধি। ৯১ এর সূক্ষ্ম কারচুপির নির্বাচন, অতিরিক্ত ভোটার সংযোগ, কালোটাকার প্রভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়েছিল। ৯১ সালে বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী জামাতের সাথে জোট বেঁধে নিষ্ঠুরতা চালায় গণতন্ত্রের উপর। ৯১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর ১১টি নির্বাচনী এলাকায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই উপনির্বাচনে বিএনপির ভোট জালিয়াতি, কারচুপি, সন্ত্রাস, অস্ত্রের ব্যবহার দেখেছে জনগণ।
৯২ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক ওয়ার্ডে গড়ে ১,০০০ ভুয়া ভোটার সংযোগ করেছিল বিএনপি।
ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মহম্মদ হানিফকে নির্বাচিত হওয়ার পরও দুই মাস পরে শপথ নিতে দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন চৌধুরী’র বিজয়ের ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিএনপি। পরাজয়ের পর দিবালোকে ৭ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
ঐতিহাসিক মাগুরার উপনির্বাচনের কথা মনে আছে তো? মনে আছে তো বিচারপতি রউফ মাগুরায় কি উপনির্বাচন উপহার দিয়েছিল? ৯৪ সালের ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত মাগুরার উপনির্বাচনে নিয়ম ভেঙে স্বয়ং তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল মন্ত্রী ও এমপিগণ ঐ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিল। মেজর জিয়ার তৈরি করা সন্ত্রাস আর কারচুপিকে হার মানিয়েছিল মাগুরার উপনির্বাচন। সমস্ত দলের বিরোধিতার শর্তেও নির্বাচন কমিশন বিএনপি প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করেছিল। এরপরও কত টালবাহানা! বিএনপির কারচুপি আর প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে দেশবাসী বারবার।
৯৬ সালের ১৫ই নির্বাচনে জনগণ ছাড়াই যে নির্বাচন বিএনপি করেছিল তাতে যে ৪০টি দলকে বিএনপি অংশ গ্রহণ করিয়েছিল সেই সব দলের
নাম জনগণ তো দুরের কথা নথিপত্রে তাদের নাম আদৌ ছিল কি না সন্দেহের ব্যাপার? ভোট কেন্দ্রে ছিল শুধুই প্রশাসনের লোকেরা। আবার বিবিসির সাংবাদিক আতাউস সামাদ প্রচার করেছিল বিএনপির বিশাল জয়!!!!
যতবারেই আওয়ামী লীগ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তুলেছে ততবারেই নির্বাচন কমিশন ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে
বিএনপি।
আবারো ২০০১ দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তাদের ক্ষমতার আসার ষ্টাইল ছিল একটু অন্যরকম। নির্বাচনের হঠাৎ দুই-এক দিন আগে দলীয় কর্মকর্তাদেরকে পরিবর্তন করে বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। অসংখ্য অতিরিক্ত ভোটার তৈরি করেছিল বিএনপির নির্বাচন কমিশন। ব্যালট পেপারের সংখ্যা ভোটার সংখ্যা অপেক্ষা ছিল অধিকতর। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তা এমন কি বিভিন্ন জেলার এসপি, ডিসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন থানার ওসি পর্যন্ত রদবদল করে নিজ দলীয় লোকদের বসিয়েছিল তারা।
ফলাফল হিসেবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নেয় বিএনপি-জামাত জোট। পাঁচ বছর অরাজকতার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে আবারো কি করে পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা যায় তার সুপরিকল্পিত উপাই খুঁজে বের করে স্বাধীনতার এই অপশক্তি। রচনা করে নির্বাচন নিয়ে ধরাছোঁয়ারর মধ্যে একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল ইতিহাসের নজিরবিহীন কুখ্যাত বিকলংক এক নির্বাচন। যে নির্বাচনে ৭১ এর পরাজিত শক্তির প্রধান পৃষ্টোপোষক বিএনপি নির্বাচন কমিশনে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছিল ঐতিহাসিকভাবে।
প্রতিটি স্তরে নির্বাচনী ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে মরিয়া হয়ে ওঠেছিল বিএনপি। সহিংসতা, মিথ্যাচার, ভোট ডাকাতি, ব্যালট ছিনতাই, প্রশাসনের নির্লজ্জ পক্ষপাত, দলীয় ক্যাডারদের মাস্তানিই যেন বলে দিচ্ছিল পূর্বপুরুষদের চরিত্রের পুরনো ঐতিহ্য। ভোট ডাকাতির নির্লজ্জতা বহি:বিশ্বে দেশকে করেছে বারবার লজ্জিত।
২০০৬ সালে তারা প্রায় দেড় কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করে ঢেলে সাজায় নির্বাচন কমিশনকে। মজার ব্যাপার হলো, এই পুতুল কমিশনের প্রধান হিসেবে তাদের এজেন্ট বিচারপতি এম এ আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে ভুয়া ভোটার লিস্ট তৈরি করে অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় আসার নীল নকশা তৈরি করেছিল বিএনপি। শুধু তাই না, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোলিং এজেন্ট থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে তাদের লোকদের নিয়োগ করেছিল। সবচেয়ে গা শিউরে ওঠার মত ব্যাপার হলো, তাদের নীল নকশার সাথে প্লান বি ও রেডি রেখেছিল তারা। কোন কারনে যদি বিচারপতি এম এ আজিজকে বাদ দেওয়া হয়, তার বিকল্প হিসেবে সম মর্যাদার দশ জন অফিসারদের এমন ভাবে সাজিয়েছিল যেন পরের যে ইসিই আসুক না কেন তারা যেন শুধু জামাত-বিএনপি'র একনিষ্ঠ সমর্থক নয়, নেতা হয়। ক্ষমতার এরূপই অদম্য লোভ তাদের।
বিএনপি জামাতের যে কি ভয়ংকর আর নৃশংসতা রুপ তা কিন্তু দেখেছে মানুষ? ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও পোড়াও এর মাধ্যমে সহিংস পথ বেছে নিয়ে গণতন্ত্রকে ফেলে দিয়েছিল হুমকির মুখে। এভাবেই নির্বাচনকে বার বার কলুষিত, কলঙ্কিত ও বিতর্কিত করার ইতিহাস জামাত-বিএনপি'র। যখনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করছে, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, তখনি বাধা দিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতে ইসলাম আর তাদের ইয়ার বন্ধু বিএনপি। এটাই হচ্ছে তাদের অতীত ইতিহাস, যাকে সচেতন জাতির একটি অংশ হিসেবে আমাদের ভুলে যাওয়া ঠিক না।
পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য কি কেউ ভুলতে পারে? যে রক্তে জন্ম আদো কি সেটি ভোলা যায়? তাদের ধারনা যেকোনো উপায়ে ভোটে জিতলেই ক’দিন পরে মানুষ এসব ভুলে যাবে। ওরে অপয়া এটা যে ইতিহাসের খেলা! ভোট ডাকাতি আর মিথ্যাচার বিএনপির আত্মবিশ্বাসে রুপ নিয়েছে বহুকাল ধরে জন্মসূত্রে। নির্বাচনী ফলাফল কিভাবে পাল্টে দেওয়া যায়, কীভাবে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্ক করা যায়, ভোট চুরির ইতিহাস কিভাবে ধরে রাখা যায় তাই হচ্ছে বিএনপির রাজনীতির গতিপথ।
বিএনপি কখনোই চায়নি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন হোক, যাতে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোটের বাক্সে তার মনোভাব প্রকাশ করতে পারে। যখনই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে স্বচ্ছতা এনেছে, নির্বাচন কমিশনকে দিনে দিনে শক্তিশালী করেছে করার চেষ্ট করেছে তখনই তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে। বিএনপি কখনোই মানযোগ্য কোনো নির্বাচন করতে পারেনি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোট ডাকাতি, জালভোট, ভুয়া ভোটার তালিকা, টাকার প্রভাব, পেশিশক্তির মহড়া এসব বিএনপির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি মুসলিম লীগ থেকে পুষ্ট করেছে মেজর জিয়া। আর তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। এ থেকে বেরিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই।
নির্বাচন কমিশনার জাকারিয়া, বিচারপতি রউফ, আবদুল আজিজের মতো দলদাস, বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনকে দেখেছে বাংলাদেশ। সহিংসতা, মানুষ হত্যা, জ্বালাও পোড়াও, গুন্ডা-হুন্ডা-টাকা-ভয়ভীতির নির্বাচনেই যেন ফিরে যায় বিএনপি বারবার পারিবারিক সূত্রে।
এই সব ইতিহাস কি কোন দিন জাতির সামনে তুলে ধরেছে যুগের পর যুগ সুবিধা খাওয়া সুবিধাভোগীদের বংশধর দুই আনার সুশীলগণ। তারা আবার বক্তব্য দেয় গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নাকি কারচুপি হয়েছে! কিছু সুবিধাবাদী সুশীল সবসময় কিছু পাওয়ায় আসায় ছুটছে অবিরাম পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে ষড়যন্ত্রের জগতে। এরাই আগামী নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে ১/১১ ও ১৪ এর ন্যায় আবারো সোচ্চার। জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশে স্বাধীন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সকল জেলা, উপজেলা, সিটিতে হচ্ছে হয়েছে স্বচ্ছ নির্বাচন।
এখানে বিতর্ক তোলার কোন সুযোগ নেই। সময় এসেছে স্বাধীন বাংলাদেশে কালো ইতিহাস রচনাকারী অপশক্তিদের মুখোশ খুলে দেওয়ার। আর প্রজন্মের সামনে তুলে ধরুন ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কিত আঁকুনিগুলির কথা। তা যেন কোনভাবেই মুঁছে না যায়?
লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটি,
সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
এই বিভাগের আরো সংবাদ