আজকের শিরোনাম :

আবদুল হাই– করে খাই খাই বলে, মারদেকা চাই

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ মে ২০১৮, ১৬:১৬

ফজলুল হক, ২১ মে, এবিনিউজ : মালয়েশিয়ার মাহাথির আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন। আগামী জুলাই মাসে উনার বয়স হবে তিরানব্বই বছর। ৯৩ বছরের এক “তরুণ” মালয়েশিয়াতে রেকর্ড ভেঙেছেন। গত ছয় দশকের ঐতিহ্য ভেঙে মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় এলো বিরোধী জোট। এই রদ বদলের নায়ক মাহাথির। (অনেকে মনে করেন, আনোয়ার ইব্রাহীম।) ইতিমধ্যে মাহাথির মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর থেকে মাহাথির দেশটির হাল ধরেছেন। ওই দেশকে উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরে তুলেছেন। তিনি উন্নত, শক্তিশালী মালয়েশিয়ার রূপকার। ৯ ও ১০ মে থেকে পত্র পত্রিকা, টিভি চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়ায় মাহাথিরকে নিয়ে হৈ চৈ হচ্ছে। মাহাথির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সব সময় ছিলেন। মাহাথিরকে নিয়ে আলাপ আলোচনা সব সময় প্রাণবন্ত হয়। তাতে উদ্দীপনার উপকরণ থাকে। আমি সে সকল বিষয়ের পুনরুল্লেখ করলে আপনারা “বোর” হবেন। আপনারা আমার লেখা পড়তে আগ্রহী হবেননা। গতানুগতিক বিষয়ে এখানে আলোচনা করতে চাইনা।

আপনারা আমার ছোট্ট একটা প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে পারেন। আপনারা বলবেন, আমার এবং মাহাথিরের মধ্যে পার্থক্য কি? (বিস্মিত হলেন?) আমি নিজেকে তুলে ধরতে এই পথ নিয়েছি? আমি এবং মাহাথির এক রকম মানুষ নই। আমার আর উনার মধ্যে কোন মিল নাই। বরং বলতে পারেন, আমরা বিপরীত মেরুতে থাকি। উনি ডাক্তারী পড়েছেন। আমি পেশায় একজন শিক্ষক। উনার সাথে আমার তুলনা চলেনা। (এক) উনি ২২ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সারা বিশ্ব উনাকে চেনে। পুনরায় তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বিশ্বের সেরা মানুষদের একজন উনি। আমি কোন প্রধানমন্ত্রীর ধারে কাছে যাওয়ার যোগ্যতা রাখিনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমি যাওয়ার চান্স পাই নাই। আমার চৌদ্দ গোষ্ঠি পায়নি। কখনো পাবেনা। আমি যদি আমাদের প্রধানমন্ত্রী বা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করতে চাই, সে চান্স আমি পাবোনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যদি চাটগাঁ আসেন, আর আমি উনার কোন প্রোগ্রামে অংশ নিতে চাই, “এস এস এফ” আমাকে ঢুকতে দিবেনা। জেলা প্রশাসক আমাকে আমন্ত্রণ কার্ড দিবেননা। আমি কোথায়? মাহাথির কোথায়? কন্ডে আদিনাথর পা– র, ছ–লে কন্ডে খের খার? কন্ডে আগরতলা আর কন্ডে চইরতলা? (দুই) মাহাথিরের বয়স ৯৩। উনি এক আশ্চর্য তরুণ। আমার বয়স ৬৮। কারো মনে হয়না যে, আমি উদ্দীপ্ত তরুণ। (তিন) স্ট্রেইট টাইম পত্রিকা (সিংগাপুর) মাহাথিরকে বলেছে, আপনাকে তরুণ দেখায় কেন? আমাকে তরুণ দেখায় কিনা, এ নিয়ে কেউ কথা বলেনি। স্ট্রেইট টাইম্‌স না। না– প্রথম আলো, সমকাল না। কোন ম্যাগ্‌, পাক্ষিক, মাসিক পত্রিকার কোন প্রতিবেদক না। (চার) ৯৩ বছর বয়সে মাহাথির কি করে এত তরুণ? কেমন করে বয়স ধরে রেখেছেন? কি করে জরাকে জয় করলেন? মাহাথিরের যৌবন ধরে রাখার কিছুরহস্য তো আছে। (তোঁয়ার মা, তোঁয়ারে কি খাবাইয়েল?”) সারা দুনিয়া এসব কথা ভাবছে। বিশ্বের বুড়োতম সরকার প্রধান তিনি। আমি তার ধারে কাছে নাই। আমাকে মহান আল্লাহতালা পরম করুণাময় এখনো সক্রিয় রেখেছেন, কাজকর্ম করার তৌফিক দিয়েছেন, আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া, কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করেনি, শরীর ভাল রাখার রহস্য কি? মাহাথিরের সাথে আমার পার্থক্য অনেক। আমার মাথায় যখন নতুন কিছু করার চিন্তা আসে, আমি যৌবনে ফিরে যাই। মাথায় চিন্তা ঢুকল– আমি বই লিখব। দিনের পর দিন খেটে, রাতের পর রাত জেগে, বই লিখতে লাগলাম। বই ছাপতে দিলাম। আটটি বই বের হল। তারুণ্যের শক্তি আমাকে এগিয়ে দিয়েছে। মাথায় চিন্তা এলো আমি ৭৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল– দীর্ঘ ৩৩/৩৪ বছর অধ্যাপনা করলাম, মানুষের কি উপকার করেছি? মাথায় এলো, বড় লোকের সন্তানকে মানুষ করেছি। হত দরিদ্রের সন্তান ব্যাপক হারে সরকারি কলেজে পড়তে আসেনা। বুয়া, ভ্যান চালক, মজুর– এসব মানুষের বাচ্চার জন্য স্কুল বানালাম। বড় লোকেরা এগিয়ে এলেন। রাতদিন খাটছি– মনে তারুন্য ভর করেছে। লেখালেখি করি, কষ্টের কাজ, মাস্টারি করি, খাটতে হয়, কষ্ট অনুভব করিনা। নিজেকে তরুণ মনে হয়। নতুন করে যৌবন ফিরে পাই। নতুন কিছু কর, তুমিও তারুণ্য খুঁজে পাবে। কবিগুরু যেমন বলেছেন, “কেশে আমার পাক ধরেছে বটে, তাহার পানে নজর এত কেন? পাড়ায় যত ছেলে এবং বুড়ো, সবার আমি এক বয়সী জেনো।” (পাঁচ) মাহাথির স্ট্রেইট টাইম্‌সকে বলেছেন, তিনি কম খান। কম ক্যালরি খেয়ে যৌবন ধরে রেখেছেন। এবার তিনি নির্বাচন করেছেন, নিজের গড়া দলের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলের হয়ে। মাহাথির বলেছেন, ৩০ বছর আগের শার্ট প্যান্ট আমি ঠিকঠাক এখনো পরতে পারি। ২২ বছর প্রধানমন্ত্রী থেকে পেট মোটা হয়নি, এমনটা শুনেছেন? গবেষকরা বলেন, বানর কম খায়। যে বানর কম খায় সে বেশী দিন বাঁচে। বেশী খাওয়া, মোটা হওয়া, ভুড়ি বাড়ানো, পেট মোটা, এরকম হয়োনা। খাই খাই করোনা। আমি মাহাথিরের মতো না। গরুর নলা দেখলে খেতে চাই। নলার মগজ, খুরার (জলফলি) মাংস না খেলে, ভাত খেয়েছি বলে, মনেই হয়না। আমার বন্ধুরা বলে, আরো কতকিছু আছে, খাসনা কেন? নদী খাব? বন, বৃক্ষ খাব? টেন্ডার খাব? ব্যাংক খাব? যা পাই তা খাব? আনিসুল হক আমার প্রিয় লেখক। লুৎফর রহমান রিটনের ছড়া খুব পছন্দ করি। আনিসুল হকের একটি লেখায় রিটনের ছড়া “কোট্‌” করা হয়েছে। ছড়া শক্তিশালী মাধ্যম। রাশেদ, ছড়া থেকে কনসেনট্রেশন সরাবেন না। রিটনের ছড়া : “আবদুল হাই, করে খাই খাই / এক্ষুনি খেয়ে, বলে– কিছু খাই নাই,/ সে, গরু খায়, খাসি খায়, টাটকা ও বাসি খায়,/ আম খায়, জাম খায়, টিভি প্রোগ্রাম খায়।” (সুত্র দৈনিক প্রথম আলো ১১/০৫/১৮)। ছড়ার শক্তি দেখুন। আমি ছড়া লিখতে পারিনা। পারলে বলতাম, “ছড়ার আমি, ছড়ার তুমি, ছড়াই আমার প্রান।” মনে বুরৎ, তনে বুরৎ, বুরৎ সনাক্তদার। গোপের আমি, গোপের তুমি, গোপ দিয়ে যায় চেনা। ছড়ার অনেক শক্তি। যারা “সর্বভুক” তাদের বিরুদ্ধে ছড়ার শক্তি ব্যবহার করতে পারি। কেউ কেউ সব কিছু খায়। তাদের থামাতেও পারিনা। ছড়াকাররা আমার চাইতে ভাল বুঝবেন। মাহাথির খাননা। পেট মোটা করেননা। ব্যাংক খাননা। শেয়ার বাজার খাননা। ভুমি খাননা। পাহাড় খাননা। যদি মাহাথির হতে চান, দেশটাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবেননা। কিন্তু লোকেরা আমাদের কথা শুনবে? খাই খাই করতেই থাকবে। মহাথিরের নাটকীয় প্রত্যাবর্তন অনেক গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। দক্ষিণ পুর্ব এশিয়ার একটি উদীয়মান অর্থনীতির গনতন্ত্রায়নের জন্য এই নির্বাচনী বিজয় আলোচিত হতে পারে। মারদেকা মানে মুক্তি ও স্বাধীনতা। এটিও দেখার মতো বিষয়। যেমাহাথির যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী জোটে। কেন যোগ দিয়েছিলেন? এই জোটে আছেন, মাহাথিরের এক সময়ের ঘনিষ্ট সহযোগী, রাজনৈতিক সহকর্মী, এবং পরে দূর্নীতি ও সমকামীতার দায়ে কারাবন্দী আনোয়ার ইব্রাহীম। নাজিব রাজ্জাককে মালয়েশিয়ানরা কেন ভোট দেননি? দূর্নীতির গন্ধ হয়ত ছিল। এখন হয়ত তাকে কাঠগড়ায় উঠতে হবে। কিন্তু একদা নাজিব, বাদাবী– মহাথিরের অনুসারী ছিলেন। যারা নদী খাচ্ছেন, বন্দর খাচ্ছেন, তাদের নিয়ে আমরা কি করব? পুরো দেশ যদি খেয়ে ফেলেন, তো আর বাকী থাকবে কি? আমার কাছ থেকে আপনার শেখার কিছু নাই। মাহাথিরের কাছ থেকে আপনার আমার শেখার আছে। যত কম খাবেন, জনগনের আস্থা পাবেন। এক সময় এই শ্লোগান জনপ্রিয় হয়েছিল, “মাহাথির পারে, মাহাথির বোলেহ্‌—-।” কৃষক গরুর মুখে “কাঁউর” লাগায়। গরু খেত খেতে পারেনা। সর্বভূক রাজনীতিবিদদের মুখে “কাঁউর” লাগানো উচিৎ। আমি যখন এই লেখা লিখছি, তখন মহাকাশে যাচ্ছে, স্যাটেলাইট “বঙ্গবন্ধু–১”। জনগন বলছে, “শেখ হাসিনা পারে। শেখ হাসিনা বোলেহ। কাউয়ার মুখে কাঁউর লাগবে।শেখ হাসিনা সেটা পারবে।

১৫ বছর অবসর কাটানোর পর মাহাথির আবার তার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ফিরে এলেন। এই বয়সেও মাহাথির প্রাণবন্ত। তিনি বিশ্বের সব চাইতে বর্ষীয়ান প্রধানমন্ত্রী। এই বুড়ো প্রধানমন্ত্রী যে কাজ করবেন বলে আমরা তাঁর কথা থেকে অনুমান করতে পারি, সেটি হচ্ছে, অর্থনীতি ও বানিজ্য খাত সংস্কার। তার মতে মালয়েশিয়াতে এই খাত, ভয়ানক অবস্থায় চলে এসেছে। তিনি বলেন, আমি বাড়িয়ে বলছিনা। এক ট্রিলিয়ন রিংগিত, ২৫৩ কোটি ডলার দেনায় ডুবে আছি। মালয়েশিয়ার এই অবস্থা, ভেতরের কারণ কি দুর্নীতি? আমাদের দেশেও প্রধান সমস্যা দুর্নীতি। “ওয়ান এম ডিবি” ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল থেকে চুরি যাওয়া ৪৫০ কোটি ডলারের বেশীর ভাগই ফিরিয়ে আনা যাবে বলে মাহাথির আশা প্রকাশ করেছেন। এই অর্থের বড় অংশ নাজিব রাজ্জাক নিজের ব্যাংক একাউন্টে সরিয়ে নিয়েছেন। নাজিব এবং বাদাবী এই দুই প্রধানমন্ত্রী– মাহাথিরের শিষ্য ছিলেন। তারা মাহাথির হতে পারেননি। জনগণ কখনো দুর্নীতিবাজকে ক্ষমা করেনা।

মালয়েশিয়ার উন্নয়নের কথা বলতে ভাল লাগছে। মাহাথিরের কথা বলতেও ভাল লাগছে। মাহাথির সম্পর্কে এমন আলোচনা শুনিনি যে, তিনি দুর্নীতি করেছেন। বাংলাদেশের কথা বলতে না পারলে আমার ভাল লাগেনা। একজন বিশ্লেষক বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারার দুই প্রধান বাধা হচ্ছে, সম্পদের অসম বন্টন এবং দুর্নীতি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর প্রেসিডেন্ট তাকেহিকো নাকাও ৫ মে ম্যানিলায় সংস্থাটির ৫১ তম বার্ষিক সম্মেলনে বলেছেন, এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সফরকালে এডিবির সহায়তায় পরিচালিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্কুলে আইটি শিক্ষা কর্মসুচি দেখতে যান তিনি। সেখানে এক বালিকা তাকে বলেছে, তার স্বপ্ন মহাকাশ প্রকৌশলী হয়ে নাসায় চাকুরী পাওয়া। এডিবির প্রধান ম্যানিলায় বলেছেন, এতে তিনি অবাক হয়েছেন। তবে এটুকু তিনি বুঝেছেন যে, বাংলাদেশে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের একটি স্কুলের এক বালিকা পর্যন্ত এরকম স্বপ্ন দেখতে পারে। এই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে পিছিয়ে থাকতে পারেনা। বাংলাদেশের ৭.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যয় এই স্বপ্নের বহি: প্রকাশ। এখানেই শেখ হাসিনার কৃতিত্ব। এ যেন আর এক মাহাথির। আরো বড়– মাহাথির। এই বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন দেখে মালয়েশিয়া বা সিংগাপুরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।

মাহাথিরের বিজয়ের পেছনে যেটা দেখার বিষয়, তা হচ্ছে একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশে গণতন্ত্রায়নের ধারা জোরদার হওয়া। সাংবাদিক সামান্তা ট্যান (স্যাম), বলেন– এটা হচ্ছে “মারদেকা।” মারদেকা– হচ্ছে মালয় ভাষায় মুক্তি বা স্বাধীনতা। মালয়েশিয়ার মতায় একছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্তি– এটাই এই নির্বাচনের প্রধান লাভ। (সূত্র : লন্ডন থেকে কামাল আহমদ। দৈনিক প্রথম আলো ১১/৫/১৮)। মালয়েশিয়ার নির্বাচন প্রমাণ করেছে, সরকার যত শক্তিশালী হোক, বিরোধী দল গ্রহণযোগ্য বিকল্প কর্মসুচি দিতে পারলে ভোটাররা তাদের সুযোগ দেয়। যে বিরোধী দলের রাজনৈতিক বিকল্প কর্মসুচি দেয়ার ক্ষমতা নেই– সে চিৎকার করে লাভ কি? সরকারী দলকে গঠনমূলক রাজনীতি করতে হবে। বিরোধী দলকেও গঠনমূলক রাজনীতি করতে হবে।

বিরোধী দল “মারদেকা” (স্বাধীনতা, মুক্তি) চায়, সরকার মারদেকা সংকুচিত করছে, বাংলাদেশে কি তা ঘটছে? কেউ কেউ মনে করেন উন্নয়ন, গণতন্ত্রের বিকল্প নয়। উন্নয়ন হচ্ছে, তাই বলে গণতন্ত্র সংকুচিত হবে কেন?মাহাথির কি করেছেন, লি কুয়ান ইউ কি করেছেন, চীন কি করেছে, তা তো দেখতে পাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশে ফুল স্কেল মারদেকার পক্ষে। সকল সরকারি সংস্থায় কাজকর্ম না করে মর্জিমত ঘুরে বেড়াবেন কর্মকর্তা, কর্মচারী– এটা মারদেকা নয়। মারদেকা ও স্বেচ্চাচার এক নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া হবেনা– এটা মারদেকা নয়। ব্যাংক খাওয়া, বন্দর খাওয়া, টেন্ডার খাওয়া– মারদেকা, এটা কে বলেছে? এখানে কঠোর হওয়া “স্বৈরাচার” নয়। দক্ষতা প্রবর্তনের জন্য কঠোর হওয়া পাপ নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী রাজনৈতিক প্রোগ্রাম মারদেকার প্রলেপ দিয়ে “সুগারকোটেড” করলে এবং তা সুকৌশলে উপস্থাপন করলে সেটা মারদেকা, মুক্তি ও স্বাধীনতা নয়। বাংলাদেশে উন্নয়ন– উন্নয়নের জায়গায় থাকবে, গণতন্ত্র থাকবে গণতন্ত্রের যায়গায়। যিনি গণতন্ত্র চান– উনার নিজেরা ভেতরে গণতন্ত্র থাকতে হবে।

যারা ফুল স্কেল মারদেকা চান, তাদেরকে ফুল স্কেল গণতান্ত্রিক ব্যক্তিত্ব হতে হবে। আবদুল হাই, করে খাই খাই। দেশে মারদেকা নাই। বলে, ফুল স্কেল মারদেকা চাই। দেশে উন্নয়ন আছে, কেন মারদেকা নাই?

লেখক : সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, অধ্যক্ষ , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
(সংগৃহীত)

এই বিভাগের আরো সংবাদ