গ্রাহকের টাকা মেরে হজে গেলেন ‘এমটিএফই’র দুই পরিচালক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৩, ২০:০৬

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অনলাইন বিনিয়োগ প্লাটর্ফম ‘এমটিএফই’ অ্যাপে গ্রাহকের বিনিয়োগের শত কোটি টাকা মেরে দিয়ে হজে গেছেন প্রতিষ্ঠানটির দুই পরিচালক। এই ঘটনাই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখ দিয়েছে।

বিভিন্ন হায় হায় কোম্পানির পর এবার বিদেশ থেকে পরিচালিত ‘এমটিএফই’ অ্যাপে প্রায় কুমারখালী উপজেলার দুই হাজার মানুষ খোয়ালেন প্রায় শতকোটি টাকা। এই অ্যাপে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, ড্রাইভার, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিনিয়োগকারীরা বিপুল লভ্যাংশের মাধ্যমে রাতারাতি কোটিপতি হবার আশায় টাকা জমা দেন।

এদিকে বিনিয়োগকারীরা পথে বসলেও তাদের খোঁজ খবর না রেখে হজ করছেন কোম্পানির দুই পরিচালক। তারা ওমরা করতে গেছেন সৌদি আরবে। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবি নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন রকমের মন্তব্য করছেন।

বিনিয়োগকারীদের ভাষ্য, কুমারখালীসহ জেলার প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার জন গ্রাহক ৮ হাজার থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিযোগ করেন। গত শুক্রবার থেকে এই অ্যাপসটির সকল কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সিঙ্গার প্লাজার দ্বিতীয় তলায় অফিস নিয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছিল মাসুম ও মিজান। এই দুইজনের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার মানুষ বিনিয়োগ করেছিল। টার্গেট পূরণ সাপেক্ষে মিজানুর কুষ্টিয়ার প্রতিষ্ঠানটির ‘সিইও’  এবং তার পরের স্থানে মাসুম আলী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমারখালী ‘এমটিএফই’ এর মূল হোতা পৌরসভার বাটিকামারা মধ্যপাড়ার মসলেম উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান। তিনি স্থানীয় ফেমাস ফুলকুঁড়ি বিদ্যালয়ের পরিচালক পদে আছেন। আর তার সহকারী ছিলেন পৌরসভার ঝাওতলা এলাকার তোফাজ্জেলের ছেলে সাবেক পুলিশ কনস্টেবল মো. মাসুম আলী। তিনি পুলিশ সদর দপ্তরের আইটি সেক্টরে চাকরি করতেন। পরে চাকরি ছেড়ে এসে ‘এমটিএফই’ এর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন।

গত ১১ আগস্ট মিজানুর ও মাসুম সৌদি আরবে ওমরা হজ করতে যান। তারপর থেকে শুরু হয় অ্যাপটিতে বিভিন্ন সমস্যা সঙ্গে গ্রাহকদের কমিশনও কমে যায়। এরপর থেকে গত শুক্রবার ১৮ আগস্ট থেকে অ্যাপসটি বন্ধ হয়ে যায়।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী সিইও মিজানুর রহমানের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী সুমী খাতুন জানান, মিজানুর হজে গেছেন। তিনি এসব বিষয়ে কোন ভাবেই কথা বলবেন না। তিনি বলেন মিজানুর আসলে তার সঙ্গে কথা বলতে।

কুমারখালী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ঝাউতলা এলাকায় আরেক সিইও মাসুম আলীর সঙ্গে বাড়িতে গেলে তার মা রেখা খাতুন বলেন, আমার ছেলে হজে গেছে। আগে পুলিশের চাকরি করতো। পরে চলে এসে ব্যবসা শুরু করে। তিনি নিজেও এতে টাকা দিয়েছিল।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম জানান, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরেছি এই সম্পর্কে। তবে এই বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ