আজকের শিরোনাম :

বুয়েটে খেলারাম খেলে যা

  সুভাষ সিংহ রায়

১১ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২১ | অনলাইন সংস্করণ

সুভাষ সিংহ রায়
১৯৫৫ সালে বিশিষ্ট লেখক শঙ্করের বই ‘কত অজানারে’ প্রকাশিত হয়। একেবারে প্রথমে দারুণ একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন: ‘মাস্টার মানে অঙ্ক ইংরেজির নয়। মাস্টার সমাজে অঙ্ক ও ইংরেজির মাস্টার মশায়রা কুলীন। বাকি সব ইতরে জনা সর্বশাস্ত্রবিদ। আমি শেষাক্ত দলে।’ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক একজন খ্যাতিমান অধ্যাপক বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ কয়েকদিন আগে জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুও চাননি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন। একটি ইংরেজি দৈনিকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা কতখানি বস্তুনিষ্ঠ—এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এমনও হতে পারে, তিনি যেভাবে বলতে চেয়েছেন তা প্রিন্ট মিডিয়ায় সেভাবে উঠে আসেনি। গত ২৮ মার্চের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীর অনেকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিশূন্যতার কথা ব্যক্ত করেছেন। তাদের অভিমত, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের অধিকাংশ ছাত্ররাজনীতি চান না। গত ১৫-২০ বছরে বাংলাদেশে খুব বেশি করে জনমত জরিপচর্চা জোরেশোরে চলছে। হঠাৎ করে প্রিন্ট মিডিয়ার অনলাইন জরিপে দেখা গেল ৯০ শতাংশ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। বেশিসংখ্যক মানুষ যেটা চাইবে সেটা সব সময় সবার জন্য ভালো হবে, সেটি আদৌ ঠিক নয়। এবার একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, ১৯৫৫ সালের ১০০ বছর আগে ১৮৫৫ সালের ৫ অক্টোবর সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে সমাজ সংস্কারের বিদ্রোহী নায়ক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া কাউন্সিলে ‘বিধবা বিবাহ আইন’-এর খসড়া পেশ করেন। খসড়া পেশের পর সারা ভারতে এর পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন শুরু হয়। রাজা রাধাকান্ত দেবের নেতৃত্বে তৎকালীন ভারত সরকারের কাছে প্রায় ৩৮ হাজার লোকের স্বাক্ষরিত এক আবেদনপত্র পাঠানো হয়। বিভিন্ন পণ্ডিতও এর বিরুদ্ধে আবেদনপত্র পাঠান। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে বিধবা বিবাহের পক্ষে বহু আবেদন পাঠানো হয়। অবশেষে বহু বিচার-বিশ্লেষণের পর গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া কাউন্সিলে বিধবা বিবাহ আইনের খসড়াটি গৃহীত হয়। ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাস হয়। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে আইন অনুসারে প্রথম বিধবা বিবাহ করেন সংস্কৃত কলেজের সাহিত্যের অধ্যাপক শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উপস্থিতি ও তত্ত্বাবধানে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। অধিক সংখ্যক মানুষের দৃশ্যমান অবস্থান কি সব সময় ভালো ফল দেয়? সে সময় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পক্ষে মাত্র ৪৬ জন অবস্থান নিয়েছিলেন। ইংরেজ সরকারের কাছে বিধবা বিবাহ আইন পাস করানোর জন্য নাগরিক সমাজের পক্ষে মাত্র ৪৬ জন আবেদন করেছিলেন। সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা করলে বিধবা বিবাহের পরিণতি কী হতো? কোনো একটা বিষয়ে অনেক মানুষের ভুল চাওয়া থাকতে পারে। সব ভালো কাজ প্রাথমিকভাবে জনপ্রিয় হয় না। আরেকটি বিষয়, সব সময়ই লক্ষ করা যায়, আমরা সব বিষয়ে সবাই মন্তব্য করে থাকি। অবশ্য এ অভ্যেস অনেক পুরোনো। ড. অমর্ত্য সেন তার আত্মজীবনীতে উদাহরণ সহকারে উল্লেখ করেছেন। সর্বশেষ বই ‘জগৎ কুঠির’-এ লিখেছেন: ‘আল বেরুনি লিখেছেন, ভারতীয় গণিত খুবই ভালো; কিন্তু এদেশের মননজীবীরা অন্য একটি ব্যাপারে বিলক্ষণ গুণী; সেটি হলো, যে বিষয়ে কিছুই জানা নেই, তা নিয়ে অনর্গল বলে যাওয়ার ক্ষমতা।’

দুই. আওয়ামী লীগ বিরোধিতা নিয়ে ‘প্রয়োজন মাফিক ইতিহাস’ গড়ে নেওয়া হয়। সময়ের সঙ্গে ক্রমশ যা রাজনীতির স্বার্থ পূরণের জন্য তৈরি ‘ইতিহাস’ হয়ে উঠতে থাকে। এমন নয় যে, আগে কেউ বলেনি, এই প্রথমবার বলা হচ্ছে। অনেকে বলেছেন, নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। তার পরও কিছু কথা আজকের নিরিখে নতুন করে বলা দরকার বলে মনে হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন কথাও উঠে এসেছে, যা পুরোনো ষড়যন্ত্র, প্রোপাগান্ডাকে উন্মোচিত করেছে। অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করেছি, সব সময় একটা ন্যারেটিভ তৈরি করা হয় আওয়ামীবিরোধী অর্থই দেশপ্রেমিক এবং তারা সবজান্তা মহাপণ্ডিত। এই দেশপ্রেমিকদের বৈদেশিক শাখা আছে। আশির দশকে যারা বুয়েটে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের একটা অংশ নানাভাবে আওয়ামীবিরোধী অংশের সঙ্গে যুক্ত আছেন। তাদের মধ্যে কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থী আওয়ামী সরকারের সময়ে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় ছিলেন। দু-একজনকে চিনি, যারা আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথমদিকে এটুআইর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আশ্চর্যজনকভাবে তাদের কেউ কেউ এখন প্রচণ্ড আওয়ামীবিরোধী। আমরা সবাই জানি, বুয়েটে সর্বশেষ কী ঘটেছে। বুঝতে কষ্ট হচ্ছে, এ ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অপরাধ কোথায়? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যেন ছাত্রলীগই নষ্টের কারণ। গত ১৫ বছরে রাজনীতির রসায়নে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ বুয়েট আইন ও বিধির জোরে যে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে রেখেছিল, তা অনেক আগেই বাতিলযোগ্য ছিল, কেউ আদালতের নজরে আনলে সেটি স্বাভাবিকভাবে সম্ভব। অনেকে বলার চেষ্টা করেন, বুয়েট মেধাবীদের জায়গা, এখানে রাজনীতির দরকার নেই। বিষয়টি হাস্যকর, রাজনীতিতে তো মেধাবীদের বেশি প্রয়োজন। আগামীর বাংলাদেশে, বিশেষ করে ২০৪১-এ উন্নত বাংলাদেশ গড়তে মেধাবীদের রাজনীতিতে সব থেকে বেশি প্রয়োজন। আর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি তো বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই করবেন, অন্য প্রতিষ্ঠানের কেউ তো সেখানে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ নেই। মেধাবীদের সঙ্গে মেধাবীরাই রাজনীতি করুক। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যে নয় দফা অভিমত দেওয়া হয়েছে, তাতেও এ কথাগুলো রয়েছে। ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে ছাত্রলীগ নেতা ও গণজাগরণ মঞ্চকর্মী বিশ্ববিদ্যালয় যন্ত্রকৌশল বিভাগের ছাত্র আরিফ রায়হান দ্বীপকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে মৌলবাদী জামায়াত-শিবির। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৩ সালের ২ জুলাই মারা যায় দ্বীপ। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, সে সময় সাবেক শিক্ষার্থীদের আদৌ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করতে দেখিনি। বুয়েটের সাধারণ ছাত্ররা যদি সত্যিকারের সাধারণ ছাত্রই হতো, তবে তারা ২০২২ সালের জাতীয় শোক দিবসের জন্য আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিল পণ্ড করত না। জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে ভাঙচুর চালাত না। সুতরাং বিষয়টি গভীরভাবে ভাবতে হবে।

২০২৩ সালের ৩০ জুলাই, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার নতুনবাজার এলাকায় একটি হাউসবোট থেকে ৩৪ জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে ২৪ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী, ৭ জন বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী, ২ জন সদ্য এসএসসি উত্তীর্ণ এবং একজন বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বাড়িতে কাজ করতেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দলের বুয়েট শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই নৌকাভ্রমণে সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন তারা। এই নৌকাভ্রমণ ও গোপন বৈঠকের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বুয়েট শাখার অর্থ (বায়তুল মাল) সম্পাদক, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। আটককৃতরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তারা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটিয়ে জননিরাপত্তা বিঘ্নিতকরণ, জানমালের ক্ষতিসাধন ও রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে একত্রিত হয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে জব্দকৃত জিনিসের তালিকায় সদস্য হওয়ার সহায়িকা, কল্যাণ তহবিল সংক্রান্ত প্রচারপত্র, সদস্য ও সাথীদের পাঠযোগ্য সিলেবাস, কাগজপত্রসহ বিভিন্ন নথির উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া মোট ৩৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ। তাদের মোবাইলে সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমের ছবি এবং কর্মী ঘোষণা অনুষ্ঠানের ছবিসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে। পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধিত ২০১৩)-এর ন(২)(৩/২)(৩/৩)/৫২ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তবে আটকের দুদিন পরই তারা সুনামগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। অথচ বুয়েটে ছাত্রশিবিরের কমিটি রয়েছে। তারা সাংগঠনিক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। সেসব কর্মকাণ্ডের ছবি তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে। বুয়েটে রাজনীতি বন্ধ, সাংস্কৃতিক তৎপরতা স্থবির। শুধু চলছে সাম্প্রদায়িক কার্যক্রম। শিবির, হিযবুত তাহরীর ও অন্যান্য সাম্প্রদায়িক সংগঠনের বেশিরভাগ কার্যক্রম মসজিদভিত্তিক হওয়ায় এসব কর্মকাণ্ড থেমে নেই। অভিযোগ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ সরাসরি তাদের মদদ দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে যখন তারা তাদের থাবা বসাবে, তখন হয়তো প্রশাসনের টনক নড়বে, ততদিনে আর সময় থাকবে না। এমনটি আমরা আগেও দেখেছি। বিশেষ করে কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেখানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, সেখানে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির ঘাঁটি গড়ে ওঠে এবং গলাকাটা, রগকাটার রাজনীতি শুরু হয়। ভয় হয় বুয়েটেও কি সেই আলামত দেখা যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বললেও তাকে ‘আবরারের হত্যাকারী’ বা ‘ছাত্রলীগ’ বলে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেয় করা হচ্ছে। মৌলবাদবিরোধী মানববন্ধন করায় শিক্ষার্থীদের রাত ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত আটকে জবাব চাওয়া হয়।

তিন. বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সর্বশেষ ৯টি বিষয়ে বিশেষভাবে আলোকপাত করেছে। বেশ গোছানো এ অভিমতগুলো। বিশেষভাবে দ্বিতীয় অভিমত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়েছে, কদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অনভিপ্রেত। এই সভা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে মত প্রকাশ করছে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর।

ষষ্ঠত, বুয়েটের স্নাতকেরা দেশে-বিদেশে কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, নতুন বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দরসহ অসংখ্য বৃহৎ প্রকল্পে তারা পেশাদার সহায়তার মাধ্যমে দেশের অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে রেখেও প্রতিষ্ঠানটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ গড়ে তোলার কারণে একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং জাতীয় অগ্রগতির লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সাবেক শিক্ষার্থী স্বীকার করবেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি আছে; কিন্তু বিশ্বর্যাঙ্কিংয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খারাপ করছে না। ফসলের জাত উদ্ভাবনে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। দেশের খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আজ সর্বজনবিদিত। আজ থেকে ১৮ বছর আগে ২০০৭ সালে এক-এগারো সরকারের সময়ে, প্রথম প্রথম মনে করানো হয়েছিল দেশে কোনো রাজনৈতিক দল থাকা উচিত নয়। আমাদের সবাইকে মানতে হবে, দেশে রাজনীতির সংস্কার প্রয়োজন। ছাত্ররাজনীতিরও গুণগত পরিবর্তন আজ সময়ের দাবি। তাই বলে মাথাব্যথার চিকিৎসা মাথা কেটে ফেলা নয়। আর শুধু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ অবস্থান রেখে আর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ রাখাটা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বাংলার প্রবাদ প্রবচন এখনো অক্ষরে অক্ষরে সত্য—‘নগর পুড়িলে কি দেবালয় এড়ায়?’ মনে রাখা দরকার, আগুনের বাছবিচার নেই, বিপদ হলে সবার ক্ষতি হবে।

সুভাষ সিংহ রায় : রাজনৈতিক বিশ্লেষক; সাবেক সহ-সভাপতি- বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল, প্রধান সম্পাদক- সাপ্তাহিক বাংলা বিচিত্রা ও এবিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম।

এই বিভাগের আরো সংবাদ