আজকের শিরোনাম :

অর্থনীতি কাঠামো সংস্কারে মনোযোগী হতে হবে

  সুভাষ সিংহ রায়

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

সুভাষ সিংহ রায়
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘টাইম’ ম্যাগাজিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করেছিল (অনলাইন প্রকাশনা ২ নভেম্বর ২০২৩, প্রিন্ট ভার্সন ২০ নভেম্বর ২০২৩)। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, পূর্বের শাসনামলে ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিকে ৪৬০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা বিস্ময়কর রাজনৈতিক নেতা; ‘ওয়ান্ডারফুল লিডার’। তিনি সব সময়ই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন এবং পণ্যে বহুমুখীকরণের কথা বারবার বলে থাকেন। আমাদের মনে থাকার কথা, করোনা অতিমারিতে খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা—‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’। কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তর/সংস্থা ও কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় খাদ্যশস্যের নিবিড়তা বেড়েই চলেছে। স্বাধীনতার পর সর্বাধিক উন্নতি হয়েছে কৃষি খাতে। যদিও দেশের অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদান জিডিপির ১৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এই কৃষি খাত খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, যা কর্মসংস্থানেরও প্রধান খাত।

করোনা সংক্রমণের কারণে যখন দেশের সবকিছু স্থবির, তখনো সচল কৃষির চাকা। দুঃসময়ে কৃষিই দেখাচ্ছে সম্ভাবনার পথ। সে বছর বোরো মৌসুমে সব রেকর্ড ভেঙে ২ কোটি ৭ লাখ মেট্রিক টনের অধিক চাল উৎপন্ন হয়েছে, যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এমনকি কভিড-১৯ এর কারণে বিশ্ববাজারে মন্দাভাব থাকলেও, ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৮২৪ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। শুধু করোনা নয়, গত ৫০ বছরে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, শীত, খরা, তাপদাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সামলে কৃষি বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এসেছে বিস্ময়কর সাফল্য ও অভাবনীয় উন্নতি। কৃষি খাতে অন্তত ১০টির অধিক ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান পাট রপ্তানিতে প্রথম, পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, সামগ্রিক ফল উৎপাদনে বিশ্বে ২৮তম স্থানে বাংলাদেশ। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণের পাশাপাশি পুষ্টিতেও বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হচ্ছে এবং পরিচিতি লাভ করছে। মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যের জোগান এবং চাহিদা মিটিয়ে খাদ্য নিরাপত্তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।

যশোর সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের সবজিচাষি মনিরুল ইসলাম গত ২৫ জানুয়ারি বারীনগর পাইকারি সবজির মোকামে ৩০ টাকা কেজি দরে টমেটো এবং ৩৮ টাকায় বেগুন বিক্রি করেন। একই দিনে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার খাদিমপুরের সবজিচাষি তোতা মিয়া পৌর বড়বাজারে বেগুন বিক্রি করেন ৪৫ টাকা কেজি। স্থানীয় এই বাজারে ২৫ জানুয়ারি টমেটো বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০-৩০ টাকায়। উৎপাদনস্থলের দামের এই চিত্রের বিপরীতে একই দিনে ঢাকার মগবাজার, মালিবাগ ও শাহজাহানপুর বাজারে বেগুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকায়। জাতভেদে টমেটোর দাম রাখা হচ্ছিল ৫০-৭০ টাকা।

বাজারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, উৎপাদনস্থলের তুলনায় ঢাকার বাজারে শুধু এই দুই পদের সবজি নয়; অধিকাংশ সবজির দাম কখনো দ্বিগুণ, কখনো এর চেয়ে আরও বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. স্বপন বলেন, অন্যান্যবার শীতের মাঝামাঝি থেকে সবজির দাম কমতে শুরু করলেও, এবার পাইকারিতে এখনো দাম বাড়ছে। ২৭ জানুয়ারি একটা ব্রকোলি পাইকারিতে কিনেছিলাম ৪০ টাকা, পরদিন ২৮ জানুয়ারি সেটা কিনতে হয়েছে ৭০ টাকায়।

বর্তমান বিশ্বের ধনীরা কম চাল খায়। ১৯৬২ সালে শীর্ষে পৌঁছানোর পর সম্পদ বৃদ্ধির সঙ্গে জাপানের মাথাপিছু চাল খাওয়ার পরিমাণ অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে—১১৮ কেজি থেকে ২০২০ সালে ৫১ কেজি। বাংলাদেশের চালের চাহিদা যদি জাপানের প্রতিচ্ছবি হয়, তাহলে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জমি মুক্ত করা সম্ভব, যা অপ্রচলিত উচ্চমূল্যের কৃষি (হাই-ভ্যালু নন-ট্র্যাডিশনাল এগ্রিকালচার) কাজের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মাথাপিছু চালের ব্যবহার ১০ শতাংশ কমেছে, যা কি না দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যদি আরও সমানভাবে বণ্টিত হতো, তাহলে চালের ব্যবহার দ্রুত হ্রাস পেত। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় শুধু মাথাপিছু চাল গ্রহণের পরিমাণ কমানোর ওপর নির্ভর করা বিপজ্জনক হতে পারে। চালের স্থিতিশীল সরবরাহের জন্য দেশীয় চাল উৎপাদন বৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সৌভাগ্যবশত, চালের সম্ভাব্য এবং প্রকৃত উৎপাদনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানের কারণে সরবরাহ বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে ধান উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি বর্তমানে মাত্র ১ শতাংশ, যা ভারতের ২ দশমিক ৪ শতাংশ, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের ১ দশমিক ৯ এবং চীনের ৩ দশমিক ৭ শতাংশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। কৃষির আধুনিকীকরণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ফলন বাড়ানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত কৃষিজমির ওপর নির্ভরতাও কমানো সম্ভব। এ প্রক্রিয়া ধান চাষের জন্য জমির চাহিদা কমিয়ে আনতে এবং বাংলাদেশকে চাল রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করতে সাহায্য করবে। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সামনে এ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল।

সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরশীল প্রবৃদ্ধি কাঙ্ক্ষিত নয়, স্থিতিশীলও নয়। যদি আমরা শুধু সস্তা শ্রমের ওপরই নির্ভর করি, তাহলে দেখা যাবে অন্য কোনো দেশ আরও সস্তা মজুরি দিয়ে আমাদের থেকে কাজ ছিনিয়ে নেবে। যদি গৃহযুদ্ধ না হয়ে থাকত, তাহলে বাংলাদেশের পরিবর্তে হয়তো শ্রীলঙ্কা তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বিশ্বের শীর্ষ পছন্দের জায়গা হতে পারত।

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, এক সময় ব্রিটেনের বস্ত্র উৎপাদন শিল্প তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়ের দেশ জাপানে স্থানান্তরিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে জাপান তার বাজার আরও নিম্ন খরচের দেশ, যেমন—চীন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের কাছে হারায়। শ্রমিকের ব্যয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমনির্ভর উৎপাদন আরও সস্তা শ্রমের দেশে সরে যায়। বাংলাদেশ এ প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত নয়। শ্রীলঙ্কা মডেলে বাংলাদেশেরও একই রকম পতন হতে পারে। প্রায় দুই বছর ধরে এমন আকাশকুসুম কল্পনা করে যাচ্ছে চিহ্নিত কয়েকটি গণমাধ্যম। গণমাধ্যমে এ তথ্যটি প্রায় আসে আমাদের বৈদেশিক ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে; কিন্তু এ তথ্যটি দেয় না—১০০ বিলিয়ন ডলার পুরোটা সরকারি ঋণ নয়। এতে বেসরকারি খাতের ঋণও অন্তর্ভুক্ত। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, প্রথম আলো লিড নিউজ করেছে, ‘ডলার সংকটের মধ্যে বিদেশি ঋণ শোধে চাপ আরও বাড়ছে’। খবরে পত্রিকাটি বলছে, ‘ডলার সংকটের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ’। একই খবরে প্রথম আলো লিখেছে, ‘বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ২৬৮ কোটি ডলার বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩২৮ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আগামী অর্থবছরে তা ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। পরের বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধ বাড়তে থাকবে। ২০২৯-৩০ অর্থবছর নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫১৫ কোটি ডলারে। এরপর ঋণ শোধ কমতে থাকবে।’ বাংলাদেশে গত বছর রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার। গার্মেন্টস রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে প্রথম আলোর হিসাবে এ বছর বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে হবে মাত্র শূন্য দশমিক ৩২৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ শুধু রেমিট্যান্স ও গার্মেন্টস থেকে যে ডলার দেশে এসেছে, তার মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধ খাতে খরচ হবে। অথচ প্রথম আলোর সংবাদের ট্রিটমেন্ট থেকে মনে হবে, দেশের সব ডলার বুঝি ঋণ পরিশোধে চলে যাবে। বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে বলেই বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এআইডিবি, আইএফসি, আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশে ঋণ প্রকল্প মঞ্জুর করেই যাচ্ছে। একইভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নও চালু আছে।

এ মুহূর্তে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রধান অংশীদার জাপান। বর্তমানে জাপানের সঙ্গে চুক্তির অপেক্ষায় পাইপলাইনে রয়েছে জাপানের আরও ৭৫৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের ঋণ সহায়তা। দেশে এখন জাপানি অর্থায়নে ৮২টি প্রকল্প চলমান। বিশেষ করে দেশের যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতের মেগা প্রকল্পগুলোয় জাপানের অর্থায়নই সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে মেট্রোরেলের সুফল মানুষ পেতে শুরু করেছে। প্রতিদিন আড়াই লাখ মানুষ মেট্রোরেলে যাতায়াত করছে, যা প্রতিদিনই বাড়ছে। জাপানি অর্থায়নে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর ও ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাপানের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার চীন। চীনা অর্থায়নে বাস্তবায়িত কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ইত্যাদি প্রকল্পের সুফলও মানুষ পেতে শুরু করেছে। এতে প্রমাণ হয়, বৈদেশিক ঋণ নিয়ে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো বিএনপি সরকারের মতো কল্পবিলাসী কোনো প্রকল্প নয়; বরং এসব প্রকল্প জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনে এবং আর্থিকভাবেও লাভজনক। ফলে ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে কখনো সংকটে পড়েনি বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা চলছে, তা পৃথিবীর খুব কম দেশে দেখা গেছে। বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে ‘টাইম’ সাময়িকীর সম্ভাবনা তাই অপ্রত্যাশিত কিছু নয়, বাস্তবতার প্রতিফলন।

গত ২২ জানুয়ারি ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুষ্টিমেয় কয়েকটি গন্তব্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর উদ্দেশ্যে রপ্তানি পণ্যের জন্য নতুন বাজার ও পণ্য অনুসন্ধানে গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী রপ্তানি পণ্য পাঠাতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের বাধা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে; কিন্তু তার জন্য আমাদের নতুন বাজার ধরতে হবে।’

সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রমতে, এরই মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রচলিত বাজারের ওপর অতিনির্ভরতা কাটতে শুরু করেছে। দেড় দশকের ব্যবধানে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নতুন বাজারের হিস্যা ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে এ খাতে নতুন এক রূপান্তরের ঢেউ লেগেছে। এ ক্ষেত্রে নতুন চমক হলো জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বাজার। দীর্ঘদিন ধরে জাপানে বছরে ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায়ও তৈরি পোশাক রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। ভারতের বাজারেও পোশাক রপ্তানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। নতুন বাজারগুলোর মধ্যে আরও আছে রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। মোদ্দা কথা, সব অপপ্রচার পরিহার করে নতুন বাজার প্রসারের মাধ্যমে এ শিল্পের সমৃদ্ধকরণে সরকার, উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার মেধা ও প্রজ্ঞার সমন্বয় ঘটাতে হবে। তাই সরকারকে সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক কাঠামো সংস্কারে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

সুভাষ সিংহ রায় : রাজনৈতিক বিশ্লেষক; সাবেক সহ-সভাপতি- বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল, প্রধান সম্পাদক- সাপ্তাহিক বাংলা বিচিত্রা ও এবিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম।

এই বিভাগের আরো সংবাদ