আজকের শিরোনাম :

উখিয়া সীমান্তে অস্ত্রসহ আটক ২৪, হাতবোমা বিস্ফোরণ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৩৮

সীমান্তে উত্তেজনাকে কাজে লাগিয়ে ওপারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর লোকজনও অস্ত্র নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনুপ্রবেশ করছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার উখিয়ার পালংখালী সাতটি পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় অস্ত্রসহ ২৪ জনকে আটক করেছেন স্থানীয়রা। অনুপ্রবেশে বাধা দিতে গিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ছোড়া হাতবোমার আঘাতে আহত হয়েছেন চারজন। তারা হলেন উখিয়া উপজেলার থাইংখালী গ্রামের মোবারক, আয়ুবুল ইসলাম, কালু ও আব্বু।

থাইংখালী পুটিবনিয়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল বশর বলেন, ‘২৪ জন যুবক একটি ডিঙি নৌকায় করে বাংলাদেশে প্রবেশের পর স্থানীয়রা তাদের মিয়ানমারের পুলিশ মনে করেন। কিন্তু কাছে এলে দেখা যায় তারা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য। পরে বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা দিলে তাদের একজন হাতে থাকা বোমা ছুড়ে মারেন। এতে চার যুবক আহত হন। পরে তাকে ধরে গণধোলাই দেন স্থানীয়রা।’

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর চৌধুরী বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ক্যাম্পে আশ্রয় নিতে আসছিল। এসময় তাদের দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা করে। এসময় কয়েকজন স্থানীয় আহত হয়েছেন। পরে স্থানীয়রা ধাওয়া করে তাদের আটক করে। তাদের পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে সকালে পালংখালীর বটতলী সীমান্ত দিয়ে ৩৭ জন বিজিপি সদস্যসহ অনেকে বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। এরপর পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল, নলবনিয়া, পুটিবনিয়া, ধামনখালীসহ আরও কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে কয়েক দফায় বিজিপির সদস্যরা প্রবেশ করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এসময় আরসা, আরএসওসহ কয়েকটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সদস্যরাও অনুপ্রবেশ করেছেন।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বলেন, অনুপ্রবেশকারী যাদের আটক করা হয়েছে অস্ত্রসহ তাদের বিজিবির হেফাজতে নেওয়া হবে। তারপর আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত দিনদিন আরও ঘনীভূত হওয়ার শঙ্কায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়নের সীমান্ত থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত য়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজারের ডিসি মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানান, মিয়ানমারে সংঘাত বেড়েছে। মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গুলি, মর্টারশেল এসে পড়ছে সীমান্তের এপারের বসতঘরে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নিদের্শনা রয়েছে। এ বিষয়ে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।

বান্দরবান ডিসি শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তেজনাকর। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা ঝুঁকিতে রয়েছেন। প্রাথমিক অবস্থায় ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন। উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে। লোকজনকে আনতে স্থানীয় চেয়ারম্যান সহযোগিতা করছেন।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ