আজকের শিরোনাম :

বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড এলাকায় ২ শতাধিক বাড়িতে ফাটল, তদন্ত কমিটি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:০৮

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত কাঁপুনিতে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরে ফাটল দেখা দেয়ায় দেশের অন্যতম গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানার কার্যক্রম বন্ধ করতে গ্যাসক্ষেত্র ঘেরাও করেছে এলাকাবাসী।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র অবরোধ করে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের লোকজন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয়রা জানায়- নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের করিমপুর অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরনের অর্থায়নে পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে প্রতিদিন ৩-৪ বার বিকট শব্দ, অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়। এতে মাটি কেঁপে ফাটল ধরেছে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের ১০-১২ গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘর বাড়িতেও।

বিষয়টি একাধিকবার বিবিয়ানাকে জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিন কাটছে স্থানীয়দের। শনিবার রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড ঘেরাও করে। এসময় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবী জানায় স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোমান হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়াকে অবগত করেন। পরবর্তীতে সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া মোবাইল ফোনে বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানালে ঘেরাও তোলে নেয় স্থানীয়রা।

এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া বলেন- স্থানীয় চেয়ারম্যান ও অন্যান্য লোকজন বিষয়টি আমাকে অবগত করার পর আমি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি তারা আশ্বাস দিয়েছেন কেন অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে এবিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে। রবিবার সকালে তদন্ত টিম এবিষয়ে কাজ শুরু করবে।

এদিকে আজ রোববার সকালে বাড়িঘরে ফাটল দেখা দেওয়ার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সদস্যসচিব বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন ডেভেলপমেন্ট ও প্রোডাকশনের মহাব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন এবং সদস্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন।

এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র অবরোধ করে স্থানীয় কয়েক গ্রামের লোকজন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের করিমপুরে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরনের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় প্রতিদিন তিন-চারবার বিকট শব্দ ও অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়। তাতে মাটি কেঁপে ফাটল ধরেছে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের ২০ গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়িতে।

তারা জানায়, বিষয়টি একাধিকবার জানানো হলেও বিবিয়ানা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিন কাটছে স্থানীয়দের। গতকাল শনিবার রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কয়েক শ মানুষ বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড ঘেরাও করে। এ সময় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানায় স্থানীয়রা।

উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কসবা গ্রামের শ্যামল আহমেদ বলেন, গ্যাসক্ষেত্রে কৃত্রিম ভূমিকম্প ঘটানোর কারণে তাঁদের পাঁচ-ছয়টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ কারণে তাঁরা সবাই আতঙ্কে রয়েছেন। গত রাতে বাড়ির লোকজন ঘুমাতে পারেনি।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নোমান হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন গিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়াকে বিষয়টি অবগত করেন। পরে সংসদ সদস্য বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানালে ঘেরাও কর্মসূচি তুলে নেয় স্থানীয়রা।

এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ লোকজন বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। কেন অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে তা দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে বলে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেভরন বাংলাদেশের মুখপাত্র শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কোনো কারণে অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে বলে আমি নিশ্চিত নই। বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ