আজকের শিরোনাম :

খোকসার মনিরুলের ভাগ্য বদলে দিয়েছে মিশ্র ফল চাষ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৩

মিশ্র ফলচাষী মনিরুল। মাত্র তিন কাঠা জমিতে পেঁপে আবাদের মধ্য দিয়ে তার ব্যবসা শুরু। এখন দুস্তর মত ফলচাষী। ১২ বিঘা জমি জুড়ে তার ফল বাগান। চলতি মৌসূমে মাত্র ৭০টি কমলা গাছের ফল বিক্রি করেছেন পৌনে ৫ লাখ টাকা। ১৯৫টি ভারত সুন্দরী জাতের কুল গাছের ফল বিক্রি করে এক মাসে আয় করেছেন তিন লাখ টাকা। বল সুন্দরী নামের কুলের গাছের ফলে হাত দেননি।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার খোকসা ইউনিয়নের হেলালপুর গ্রামের মনিরুল ইসমলাম। পেশায় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী। একটি টেলিভিশনে ফলচাষের উপর প্রতিবেদন দেখে এ চাষে উদ্বুুদ্ধ হন। ২০২৫ সালে বাবার দেওয়া ৭ শ টাকা ও তিন কাঠা জমিতে সে ও তার স্ত্রী লিজা মিলে পেঁপের চাষ করেন। সে বছর জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ট ফল চাষি হিসেবে পুরস্কার পেয়ে যান। পেঁপে বিক্রির ২৩ হাজার টাকা দিয়ে প্রথম ভারত সুন্দরী জাতের কুলের আবাদ শুরু করেন এই দম্পতি। প্রথম বছরেই অভাবনীয় ফলন হয়। মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে তারা (এই দম্পতি) এলাকার সেরা ফল চাষী হয়ে উঠেছেন। যুবকের বাবা আয়াত আলী নিজের বাড়ির আঙ্গিনার ১২ বিঘা জমিতে বাগান করতে দিয়েছেন।

শনিবার বিকালে সরেজমিন গিয়ে ফলচাষী মনিরুলকে বাগানেই পাওয়া যায়। তখন শ্রমিকদের নিয়ে কুল বাগানে ফল তুলছিলেন। এই ফল আগামী সকালে বাজারে পাঠানো হবে। লাল সাদা আপেল কুলের আড়ালে কুলের সবুজ পাতা হারিয়ে গেছে। বিক্রির পরও অনেক গাছে টকটকে হলুদ রঙের কাশমিরী কমলা ঝুলে আছে। লেবু বাগান থেকে একদিকে লেবু তোলা চলছে অন্যদিকে আবার সাজ (ফুল) আসছে। মালটা ও ড্রান বাগানে ফুল আসছে। বাগানে সাথি ফসল শতাধিক পেয়ারা গাছেও ব্যাপক হারে গুটি এসেছে। গত মৌসূমে ১ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করা হয়েছে এই বাগান থেকেএ যেনো ফুলে ফলে সভিত সবুজ অরণ্য।

মনিরুল জানান, ৬ বছরের প্রচেষ্টা তার প্রকল্প মডেল হয়ে দাড়িয়েছে। এবছর ফলের বাজার একটু খারাপ। গত বছর গুলোর তুলনায় এ বছরের শুরুতে কেজিতে প্রায় ৭০ টাকা কম দড়ে কুল বিক্রি করতে হয়েছে। তার বাগানে এখনো প্রায় ৩/৪ লাখ টাকার কুল রয়ে গেছে। বর্তমান কেজি ৬০/৬৫ টাকা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের শেষের দিকে ফলের দাম কিছুটা বাড়তে পারে। সেই জন্য সিংহ ভাগ ফল গাছে রেখে দিয়েছেন। ফল পাকার জন্য কোন ক্যামিকেল ব্যবহার করেন না।

তিনি আরও জানান, নিজে কৃষক পরিবারের ছেলে। তার ৪ জন চাচা কৃষি শ্রমিক। তারা অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করতেন। এখন তাদের আর বাইরে কাজের জন্য যেতে হয় না। তারা এই বাগানে সারা বছর নিয়মিত কাজ করেন। এখান থেকে তাদের জীবিকা হচ্ছে। এবছর তিনি নতুন করে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। অল্প কয়েকটি ছাগল ও গরু পালন শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগ সহয়তা পেলে ফলচাষ লাভ জনক হতে পারে বলে মনে করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ সাহা বলেন, সব ধরনের সহযোগিতা তারা করে আসছেন। মনিরুল এখন মডেল ফল চাষি। তাকে বিভিন্ন সময়ে প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হয়।

এবিএন/সুমন কুমার মন্ডল/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ