ভুরুঙ্গামারীতে জেঁকে বসেছে শীত, বিপর্যস্ত জনজীবন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৯

উত্তর জনপদের সীমান্ত ঘেষা কুড়িগ্রামের ভুরুুঙ্গামারীতে শীত জেঁকে বসেছে। দিন রাত সমান শীত অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা থাকছে ৯ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। দিন যাচ্ছে এ জনপদে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে। সন্ধার পর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে এখানকার পথঘাট প্রান্তর। তিন দিন থেকে মিলছে না সূর্য্যরে দেখা। উত্তরের হিমালয় থেকে হিমেল হাওয়া বইছে এখানে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় সাধারন মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া দপ্তর। যা গতকাল ছিলো ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত কয়েকদিন থেকে এখানে এমনি বিরূপ আবহওয়া বিরাজ করছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। গোটা জন-জীবনকে করেছে বিপর্যস্ত। হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতজনিত রোগেরও প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশী আক্রান্ত হচ্ছে।  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগের রোগীদের ভীড় বেড়েছে। শীতের তীব্রতায় কাহিল হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের ছিন্নমুল মানুষ। গবাদী পশু ছাড়াও অন্যান্য প্রাণিকুল শীতের প্রকোপে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। গোটা উপজেলার গরীব দুঃস্থ ও সাধারন মানুষের রাতদিন কাটছে যুবুথুবু অবস্থায়। 

সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে উপজেলার বয়স্ক, শিশু, নি¤œ আয়ের শ্রমজীবি মানুষ। তারা কাজে যেতে পারছেন না। 

উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের কৃষক মাইদুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন থেকে প্রচুর ঠান্ডা। এ ঠান্ডায় ক্ষেতে কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। একই কথা রিকসাচালক দুলাল হোসেনের (৪৫)। অপরদিকে পাইকেরছড়া ইউনিয়নের রিয়াজুল ইসলাম বলেন ঠান্ডা যতই হোক আমাদের কাজ করতে হয়। কাজ না করলে সংসার চলে না। 

সচ্ছল বিত্তবানরা শহরের বিভিন্ন মার্কেট ফুটপাত থেকে শীতের গরম কাপড় কিনতে পারলেও  গত বারের চেয়ে পুরাতন মোটা কাপড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় অর্থাভাবে সহায় সম্বলহীনরা এর ধারে কাছে যেতে পারছে না। 

এ উপজেলায় ইতমধ্যে শীতের তীব্রতা নিবারণে সরকারি কিংবা বেসরকারী সংস্থার পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরন করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যার ফলে এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষকে একমাত্র আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম জানান, শীতের এ সময় বয়স্ক ও শিশুদের জ্বর, সর্দি, কাশির প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। ভাইরাস জনিত কারনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তিনি সবাইকে সচেতনতার পাশাপাশি ডায়রিয়া হলে ঘন ঘন খাবার স্যালাইন খাওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন। 
 
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা আরও দু-একদিন এমন থাকবে। পরে একটু উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়াও এ মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস জানান, উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায় ৪ হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর কিছু আমি নিজে এবং বাকি গুলো জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে হয়তো আরো ১ হাজার কম্বল পাওয়া যাবে। 

এবিএন/এ এস খোকন/জসিম/গালিব 

এই বিভাগের আরো সংবাদ