ভুরুঙ্গামারীতে দার্জিলিং কমলা চাষে বাড়ছে আগ্রহ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৮

বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং কমলা। দার্জিলিং এর পাহাড়ী কমলা এবার সমতল ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের মুক্তি নার্সারী এন্ড অর্গানিক কমলা বাগানের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী। তিনি এ কমলা চাষ করে সফলতাও পেয়েছেন। বাগানের সারিবদ্ধ প্রতিটা গাছে ধরেছে অসংখ্য কমলা। লক্ষ করে দেখা গেছে বেশিরভাগ কমলাই পেকেছে। ভালো ফলন দেখে কমলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে অনেকের। প্রতিদিন বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। 

জানা গেছে, উদ্যোক্তা ফরমান আলী ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে নিজ উদ্যোগে দুই একর জমি নিয়ে শুরু করেন কমলার চাষ। তিনি বিগত দিনে চাকরির সুবাদে বিভিন্ন দেশ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা থেকে তার এ কমলা বাগান করার পরিকল্পনা মাথায় আসে। সে ভাবনা থেকেই তিনি খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন নার্সারি থেকে যাচাই করে পরীক্ষিত দার্জিলিং, চায়না, আফ্রিকা ও পাকিস্তানী নব থাই সহ ছয়টি জাতের জাতের চারা গাছ সংগ্রহ করে রোপণ করেন। বর্তমানে তার বাগানে ৭শ ৫০টি গাছে শোভা পাচ্ছে হলুদ ও সবুজ বর্ণের ছয় জাতের কমলা। পর্যায়ক্রমে এখন পরিপূর্ণ ফল পেতে শুরু করেছে গাছ গুলোতে। বর্তমানে এসব গাছ থেকে নার্সারিতে প্রস্তুত করা হয়েছে দশ হাজার কমলার চারা। বাগানে প্রতিদিন ৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এক সময়ের সরকারি চাকরিজীবী হয়ে উঠেছেন সফল কমলা বাগানের উদ্যোক্তা। 

সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা যায়, থোকায় থোকায় ঝুলছে মিষ্টি হলুদ রঙের কমলা। এ কমলা আকারে বড়, মিষ্টি, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতারা পাইকারী দরে কমলা কিনছেন এবং গাছের চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন ছাদ বাগানসহ বাড়ির উঠনে বাগান করবেন বলে। 

বাগান মালিক ফরমান আলী জানান, সমতল ভূমিতে এই কমলা চাষ খুবই উপযোগী এবং বাণিজ্যিকভাবে এর চাষবাদ করা সম্ভব। মৌসুমী সবজি চাষ করে শেষ পর্যন্ত বাজারে এর ভালো দাম পাওয়া যায় না এবং অনেকেই লোকসানে পরেন। কমলার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন সমস্যায় পরতে হয় না এর চাহিদা সবসময় বাজারে থাকে। বাগানের বয়স মাত্র তিন বছর হলেও ফলন ভালো হওয়ায় প্রতিবছর খরচ বাদে কমলা বাগান ও  নার্সারি থেকে লাভবান হচ্ছেন তিনি। 

পাইকের ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, এক সময়ের সরকারি কর্মকর্তা উনি যে এত সুন্দর উদ্যোগ নিয়ে কমলা বাগান করবেন এটা আমার জানা ছিল না তার কাজের প্রশংসা করি এবং তাকে অনুসরণ করে এলাকার অনেকে বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল জব্বার জানান, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার মাটি লেবু জাতীয় ফল চাষের জন্য উপযোগী। এখানে আবহাওয়া ও মাটি অনুকূলে থাকায় প্রচুর মাল্টা ও কমলার চাষ উপযোগী। এ উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা ও কমলা জাতীয় ফলের চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার বাণিজ্যিক চাষে বেশি জোর দিয়েছে। দার্জিলিংয়ের এই সম্ভাবনাময় কমলার চাষ বাণিজ্যিকভাবে দেশের কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে দেশের কৃষক। অন্যদিকে, পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিরাট ভূমিকা রাখবে। 

এবিএন/এ এস খোকন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ