আজকের শিরোনাম :

কটিয়াদীতে বিধবার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২২, ২০:৫০

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌর এলাকার চরিয়াকোনা মহল্লার হেলেনা (৪০)। তার স্বামী মজলু মিয়া মারা গেছেন সাত বছর আগেই। হেলেনার পরিবারে নব্বই উর্ধ্ব বয়সের শাশুড়ি ও তিনটি ছেলে-মেয়ে আছে। বাড়ির পাশেই একটি টং দোকানে দোকানদারি করতেন তার স্বামী। স্বামী মারা যাওয়ার পর আয়-রোজগারের আর কোন উৎস না থাকায় অপারগ হয়ে নিজেই দোকানে বসেন তিনি। পুরো পরিবার এই দোকানের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। হেলেনার চোখের সামনে মাত্র কয়েক মিনিটেই পুড়ে ছাই হয়ে গেল সেই দোকান। পড়ে আছে ধ্বংসাবশেষ।

ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল সোমবার গভীর রাতে কিশোরগঞ্জ- ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কটিয়াদী পৌর এলাকার চরিয়াকোনা মোড়ে। বিধবা হেলেনার দাবী এটি নাশকতা। কেউ পরিকল্পিত ভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। একটি ফ্রিজসহ মালামাল পুড়ে অন্তত দুই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ইতিপূর্বে কয়েকবার দোকানের তালা ভেঙে মালামাল চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার কটিয়াদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হেলেনা।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার ( ১৬ আগষ্ট) দিবাগত রাত অনুমানিক ১টার দিকে দোকান ঘরে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। প্রায় ঘন্টাখানেক সময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। কিন্তু ততক্ষনে একটি ফ্রিজ, আসবাবপত্র, মালামালসহ দোকান ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দা আসাদ মিয়া জানান, রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে ঘুম আসছিল না। ঘরের বাইরে পায়চারী করছিলাম। হঠাৎ আগুনের ধোঁয়া দেখে সামনে আসি। দেখি দোকানটি জ্বলছে। ডাক-চিৎকার করে লোকজন জড়ো করে আগুন নিভানোর চেষ্টা করি।
স্থানীয়রা আরো জানান, উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশেহারা। নতুন করে দোকান দিবেন- সে সামর্থ্যও তার নেই।
বিধবা হেলেনা বলেন, “স্বপ্নের দোকানটি ছিল উপাজর্নের একমাত্র অবলম্বন। দোকানের আয় দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার স্বপ্ন ছিল। চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেল, কান্না ছাড়া আর কিছুই করতে পারলাম না”। তিনি আরো বলেন, পুঁজি না থাকায় ইসলামী ব্যাংক থেকে ‘ক্ষুদ্র ব্যবসার ঋণ’ নিয়ে দোকানটি চালাচ্ছি। সপ্তাহে ৮শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। এরপর যা থাকে তা দিয়ে ছেলে মেয়ের লেখাপড়া এবং সংসার অতি কষ্টে কোন রকম চলে যাচ্ছিল। এখন কিস্তি দেয়া এবং সংসার চালানোর মত সামর্থ নাই।
কটিয়াদী পৌর মেয়র শওকত উসমান বলেন, ঘটনাটি মাত্র শুনেছি। নিঃস্ব পরিবারটিকে যথাসাধ্য সহায়তা দেয়া হবে।

এবিএন/ধ্রুব/জসিম/রঞ্জন

এই বিভাগের আরো সংবাদ