আজকের শিরোনাম :

‘ভাইরাল হওয়ার পর মানসিক চাপে পড়েন কলেজ শিক্ষক খাইরুন’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:০১

খাইরুনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী মামুন হোসেনকে আটক করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
কলেজছাত্রকে বিয়ের ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর মানসিক চাপে পড়ে শিক্ষক খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে রোববার সকালে খাইরুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার স্বামী কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকতেন খায়রুন। ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরিচয়ের ছয় মাস পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তারা।

বিয়ের ছয় মাস পর জুলাইয়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাদের বিয়ের খবর ফলাও করে প্রচার করা হয়; সম্প্রচার করা হয় ভিডিও সাক্ষাৎকারও। এতে ‘টক অফ দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয় বিষয়টি।

খাইরুনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে রোববার দুপুরে সাংবাদিকরা জানতে চান নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক ও ছাত্রের প্রেমের কাহিনি ছড়িয়ে পড়লে দুজনই বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছিলেন; কিন্তু সামাজিক, পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় তাদের মধ্যে এক ধরনের মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়।

‘তাদের বিয়ের পর বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে অনেক আলোচিত ও সমালোচিত হয়। মানসিক এ চাপের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন কি না, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’

৪২ বছর বয়সী খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ২২ বছরের মামুনের বাড়ি উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

কী বলছেন খাইরুনের স্বজনরা

কলেজশিক্ষক খাইরুনের চাচাতো ভাই নাঈম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মামুন খাইরুন নাহারকে টাকা-পয়সার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় খাইরুনকে মারধরও করত মামুন।

‘এ ছাড়া খাইরুনের বাড়ির দলিলও সে জোর করে নিজের কাছে নিয়ে রাখে। ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খতিয়ে দেখছে। খাইরুনের মৃত্যু সম্পর্কে তারা অনেক কিছু জানাতে পারবে।’

শিক্ষকের বড় বোনের ছেলে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে খালার মৃত্যুর খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’

‘আত্মহত্যা’র খবর জানিয়েছিলেন মামুনই

যে বাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে মামুনের পরিবারের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, রাত ৩টার দিকে মামুন তাদের ডেকে বলেন, তার স্ত্রী খায়রুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে ঘরের মেঝেতে শোয়ানো অবস্থায় খাইরুনের মরদেহ দেখতে পান।

এ ঘটনায় সন্দেহ হলে স্থানীয়রা মামুনকে ধরে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়।

ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘রাত ২টার দিকে মামুন বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর ৩টার দিকে বাসায় ফিরে সবাইকে ডাকাডাকি করে বলেন, তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সবাই ঘরে ঢুকে মেঝেতে মরদেহ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ