আজকের শিরোনাম :

খুলনায় এক বছরে প্রায় ২ লাখ সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২২, ১৫:৪৩

বর্তমান সরকার গৃহিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি মুখে হাসি ফুটিয়েছে খুলনার লাখ লাখ সুবিধাবঞ্চিত অবহেলিত গরিব মানুষ ও তাদের পরিবারকে। গত ১ বছরে এই কর্মসূচির আওতায় প্রায় ২ লাখ অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে ১০০ কোটি ২১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে খুলনা জেলায় বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৪৯১ জনকে। বিধবা ও স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত ভাতা প্রদান করা হয় ৪৭ হাজার ৮৭৩ জন এবং ৩৪ হাজার ৫৯৭জন প্রতিবন্ধীকে অসচ্ছল ভাতা প্রদান করা হয়েছে। ১৯৫১ জন ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া রোগীকে ভাতা প্রদান করা হয়েছে। 

এ ছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শুরু হয় ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি। ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর ১২৭ জনকে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। আত্মনির্ভরশীল হতে পরবর্তীতে এদের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থ বছরে আড়াই লাখ টাকা বিতরণ করা হয়। এ বছরে ২,০১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যেককে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হয়। শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় ৭৫১ জন প্রতিবন্ধী, ৩৯ জন বেদেকে উপবৃত্তি এবং ৫৬৯জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠিকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। 


বিশেষ ভাতার আওতায়, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ৬২০ এবং ১৩ জন হিজড়াকে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বিশেষ প্রশিক্ষণের আওতায় ১৫০জন অনগ্রসর বেদে জনগোষ্ঠি এবং ২৩০জন হিজড়াকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। চাইল্ড সেনসিটিভ সোস্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের অধিনে শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ২৮টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। 

সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচি। দেশের পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত দারিদ্র্য, পশ্চাৎপদ, অবহেলিত, দুঃস্থ, অসহায় এবং সুবিধা বঞ্চিত সকল শ্রেণির জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এ কর্মসূচির মূল্য লক্ষ্য। 

স্বাধীনতা লাভের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠিকে স্বনির্ভর ও আত্মপ্রত্যয়ী করার জন্য ১৯৭৪ সালে দেশের ১৯টি থানায় পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রম চালু করেন। 

এ ব্যাপারে তেরখাদার মোকামপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সমাজসেবা থেকে ভাতা পাওয়ায় তার অনেক উপকার হয়েছে। এই টাকা সে সংসারে খরচ করতে পারে ও ওষুধ কিনতে হয়। 

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার সরদার মাহবুবার রহমান বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার এখন ক্ষমতায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। সমাজসেবা অধিদফতর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী দেয়া হচ্ছে। অতীতে কোন সরকার এতো টাকা দিতো না। 

খুলনা সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, সমাজসেবা অধিদফতরের রূপকল্প বা ভিশন হলো টেকসই ও সমন্বিত উন্নয়ন। সে লক্ষ্যে এই অধিদফতরের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমান সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন এবং মানব সম্পদ উন্নয়নে এই দপ্তর অনবদ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। 
 
খুলনা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক খান মোতাহার হোসেন বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর একটি সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান। তার একঝাঁক কর্মী বাহিনী প্রতিনিয়ত মানুষের সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছি।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই দফতরটি ৫৪টি সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই দফতর থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠির একটি বড় অংশ উপকৃত হচ্ছে। 

তিনি জানান, শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে তিনটি কার্যালয়। এখান থেকে ১২ ধরনের ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, প্রতিবন্ধি ভাতা, দক্ষতা উন্নয়নে  কম্পিউটার, ড্রাইভিং ও দর্জি প্রশিক্ষণসহ ১২টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।  

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ