আজকের শিরোনাম :

আগামী সংসদ নির্বাচনে শৈলকুপা আসনে সম্ভাব্য ১ ডজন প্রার্থী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০১৮, ১৯:৫৭

ঝিনাইদহ, ২৯ জুলাই, এবিনিউজ : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের ভোটের রাজনীতি ততই জমে উঠছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে এক ডজন প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী রয়েছে ৮ জন, বিএনপির ৩ জন ও জাতীয় পার্টির ১ জন।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাবার আশায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান  সংসদ সদস্য আব্দুল হাই এর বিপরীতে অনেক শক্ত প্রার্থী মাঠে নেমেছে। এদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা মিররপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট কাজী আজাদুল কবির (কাজী আজাদ), কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য পারভিন জামান কল্পনা, সাবেক কুটনৈতিক ওয়ালিউর রহমান হিটু, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমান সজল, কৃষক লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম দুলাল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার ও বর্তমান শৈলকুপা পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আশরাফুল আজম।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই।

এদিকে শৈলকুপার অন্যতম মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ঢাকা মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট কাজী আজাদুল কবির (কাজী আজাদ) দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ইতিমধ্যেই বিল বোর্ড ও পোষ্টারের মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন শৈলকুপার তৃণমূল মানুষের মধ্যে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সভা সমাবেশ, মতবিনিময়, ইফতার মাহফিল ও বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগসহ সামাজিক কর্মকান্ডে ওতোপ্রতভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে। সেই সাথে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্বলিত বুকলেট বিতরণ করে আবারও আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা আনতে গণমানুষের দারপ্রান্তে ছুটে চলেছে।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য পারভিন জামান কল্পনাও শক্ত প্রতিদ্বন্দী হিসেবে রানিং মেটে এগিয়ে আছে।

সাবেক কুটনৈতিক ওয়ালিউর রহমান হিটুর পোষ্টার বিভিন্ন এলাকায় লক্ষ করা গেলেও দুইটি ইফতার মাহফিলের বাইরে তেমন একটা গণসংযোগে নামেনি।

আসাফোর সভাপতি সাইদুর রহমান সজল মনোনয়নের আশায় সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে।

কৃষকলীগের অন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিশ্বাস বিল্ডার্স লি. এর কর্ণধার নজরুল ইসলাম দুলালও মনোনয়ন পাবার আশায় ইতোমধ্যে ইফতার মাহফিল, যাকাত প্রদান, বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানসহ তৃণমূলে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছে।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিগত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তেমন কোন কর্মকান্ড পরিলক্ষিত হয়নি।

শৈলকুপা পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আশরাফুল আজম একটি টিভি সাক্ষাৎকারে বর্তমান এমপিকে বিভিন্ন দুর্নীতির অপবাদ দিয়ে নিজেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিল বোর্ড উত্তোলন শুরু করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকবে।

এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছে। কারাগারে নেত্রীকে রেখে নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবেনা বলে দাবি করেছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য। পাশাপাশি আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের লক্ষে প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকায় গণ সংযোগ করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

বিগত তিনটি নির্বাচনেই ঝিনাইদহ-১ শৈলকুপায় সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন বিএনপির মনোনিত প্রার্থী আব্দুল ওহাব। তবে গত নির্বাচনের মত এবার বিএনপি আর ভুল করতে চায় না। আগামী একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মত বিএনপিরও একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী মাঠে রয়েছে।

এদের মধ্যে অন্যতম সাবেক সংসদ সদস্য ও শৈলকূপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল ওহাব, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা সিনিয়র আইনজীবি আসাদুজ্জামান ও খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।

বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুল ওহাব পরাজিত হওয়ায় ও দলের কাছে সংস্কার পন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ার কারণে এবার দলীয় হাই কমান্ড এই প্রবীণ নেতাকে মনোনয়ন নাও দিতে পারে বলে গুঞ্জন এখন শৈলকুপার সর্ব মহলে। এছাড়াও ১/১১ সরকারের আমলের একটি দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে জামিনে থাকলেও মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

তবে বিএনপির সাধারণ কর্মীরা একজন সৎ, দক্ষ ও যোগ্য প্রার্থীকে আগামী একাদশ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।

এক্ষেত্রে নতুন মুখ হিসেবে ইতিমধ্যেই দলীয় কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।

মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান ইতিমধ্যেই শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির মধ্যে ব্যাপক আশার আলো দেখিয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত ও গণসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে।

এছাড়াও বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডুকে দলীয় কর্মকান্ডে দেখা না গেলেও মনোনয়ন পাবার আশায় ওৎ পেতে রয়েছে।

শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে দল যাকেই মনোনয়ন দিক না কেন আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য সবাই এক সাথে কাজ করবে।

বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মনিকা আলম আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লাঙল প্রতিকে নির্বাচন করবেন বলে এলাকার বিভিন্ন স্থানে নেতা কর্মীদেরকে সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

এবিএন/যবনিকা/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ