আজকের শিরোনাম :

কালিহাতীতে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৫৮

টাঙ্গাইলে কালিহাতীতে কৃষি জমির উর্বর মাটিতে তৈরি হচ্ছে ইট। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার মধ্যে কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রির সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে বল্লা ও কোকডহরা, বীরবাসিন্দা ও নারান্দিয়া ইউনিয়নে। এখানকার বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের তিন ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। 

গতকাল রোবরার বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের শিমুলটি তিন ফসলি জমিতে সাইফুল ও সোহেল ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। প্রভাবশালী চক্র মাটি কেটে নেবার চুক্তিতে কিছু কৃষি জমি ক্রয় করে। কিন্তু ক্রয় করা জমির পাশের জমি ক্রয় না করেই জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যায় মাটি। ফলে মাটি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে কোনভাবেই রক্ষা পাচ্ছেনা সাধারণ কৃষকদের তিন ফসলি কৃষি জমি। 

সাইফুল ইসলাম, কাদের, রিপন, সোহেল, শহিদ ও ওয়াদালীসহ ২০/২৫ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট উপজেলার কোকডহরা ইউনিয়নের চারান, টেংগুরিয়া, নাগবাড়ি ইউনিয়নের মরিচা পাইকপাড়া, বল্লা ইউনিয়নের কাজীপাড়া, নারান্দিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দ, পালিমাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় চড়া দামে বিক্রি করছে। 

স্থানীয় জানান, কৃষি জমির মাটি এতটাই গভীর করে কেটে নিয়ে যায় যে কেউ দেখলে পুকুর না বলে উপায় থাকবে না। তাদের মতে প্রতিটি জমি ভেকু দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে কেটে নিচ্ছে মাটি সন্ত্রাসীরা। ফলে পাশের জমির মাটি স্বভাবতই ওই গর্তে পড়ে যায় এবং তা বিনা টাকায় ও বিনা অনুমতিতে নিয়ে যায় তারা। 

ফলে অনেক জমির মালিক বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, প্রশাসনের দৃষ্টি না থাকায় বর্তমানে ফসলি জমি পরিণত হচ্ছে ডোবা ও পুকুরে। ফলে সর্বশান্ত হচ্ছে কৃষকরা। কোন কৃষক মাটি সন্ত্রাসীদের কাছে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে অস্বীকার করলে তারা রাতের আধারে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যায়।

মাটি ব্যবসায়ী অভিযুক্ত সাইফুল ও সোহেল জানান, আমরা কারো জমির মাটি জোরপূর্বক কাটি না। কৃষককের জমির মাটি কিনে ইটভাটায় ও ভরাটের জন্য বিক্রি করি। 

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা জানায়, মাটি কাটার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কৃষির জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে ফেললে মাটির উর্বরতা হারায়। আর উর্বরতা ফিরে আসতে প্রায় ৩০ বছর সময়ও লাগতে পারে। আর এভাবে আবাদি কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে গেলে এ এলাকায় ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে। 

পাশাপাশি অন্য কৃষি জমিগুলোও প্রচন্ড ঝুকির সম্মুখীন হবে। মাটি সন্ত্রাসীরা ফসলি জমির প্রায় ২৫-৩০ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে জমিগুলো বর্তমানে অনাবাদী হয়ে পরেছে। এই কৃষি জমিতে ভবিষতেও ফসল ফলানো যাবে না। 

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমান জানান, খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এবিএন/তারেক আহমেদ/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ