আজকের শিরোনাম :

ধুনটে অর্থ আত্মসাতে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতির সাজা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:০৬

বগুড়ার ধুনটে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদকে এক বছরের সাজা প্রদান করেছে আদালত। 

গতকাল সোমবার দুপুরে ধুনট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ওই স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। 

গ্রেফতারকৃত সুলতান মাহমুদ ধুনট সদরপাড়া এলাকার মৃত আজিজার রহমানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ, আইনজীবী, শিক্ষকসহ শতাধিক মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলাও দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা। 

এ ঘটনায় গত ২ অক্টোবর বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় ‘ধুনটে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি উধাও !’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে পরদিন ধুনট থানা পুলিশ দু’টি মামলার ওয়ারেন্টমূলে সুলতান মাহমুদকে গ্রেফতার করে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই জামিনে বের হয়ে আসে সুলতান মাহমুদ। 

অনুসন্ধানে জানা যায় সুলতান মাহমুদ ২০১৫ সালে ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ নিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। 

পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, তদবির, নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন সুলতান মাহমুদ। তবে তিনি সব থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নিয়োগ বানিজ্যের নামে। মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসনিক ও বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে পুলিশ কনস্টেবল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার জাল ফেলে প্রায় বগুড়া, কাজিপুর, ধুনটসহ বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হতিয়ে নেন সুলতান মাহমুদ। 

তার প্রতারণার জালে রয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ, আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। তবে এসব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুলতান মাহমুদ নির্ধারিত টাকার পরিমান লিখে তার সঞ্চয়ী হিসাব নং-১৩৬ ধুনট রূপালী ব্যাংক শাখার চেক দেন চাকরি প্রার্থীদের। 

তবে কোন কারনে চাকরি দিতে ব্যর্থ হলে এক মাসের মধ্যে এককালীন টাকা রূপালী ব্যাংক থেকে তুলে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। কিন্তু সুলতান মাহমুদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোন টাকা থাকায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে এসব ভুক্তভোগীরা। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বগুড়ার আদালতে সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও দায়ের করেন। 

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারনা করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় আদালতে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। তন্মধ্যে একটি মামলায় আদালত তাকে এক বছরের সাজা প্রদান করেছে। কিন্তু এরপর থেকেই পলাতক ছিল সুলতান মাহমুদ। 

গতকাল সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

এবিএন/ইমরান হোসেন/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ