আজকের শিরোনাম :

খোকসায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০১৯, ১১:৩৬

কুষ্টিয়ার খোকসায় গার্মেন্টস শ্রমিক সুমি খাতুন  নিজের ঘরে স্বামীর হাতে খুন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে রেখে শিশুপুত্র নিয়ে পালিয়েছে স্বামী শিপন হোসেন।

ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে নেতারা ৪ ঘন্টা ধরে তদবির করে অবশেষে ব্যর্থ হয়েছে।

জানা গেছে, গার্মেন্টস শ্রমিক সুমি খাতুন সন্তান সম্ভবা হলে সে স্বামীর বাড়ি উপজেলার সন্তোষপুরে গ্রামে ফিরে আসে। এরপর থেকে তার উপর শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন চরমে পৌচ্ছায়। এক পর্যায়ে শিশুপুত্র মহাই মিলনকে নিয়ে একই গ্রামে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ঈদের তিন দিন আগে স্বামী শিপন হোসেন বাড়ি ফিরলে সেও স্বামীর বাড়িতে চলে আসে। ঈদের পর দিন গতকাল বৃহস্পতিবার প্রত্যুষে নিজের ঘরে শারীরিক নির্যাতনে সুমির মারা যায়।

বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নিহতের স্বামী শিপন হোসেন ও তার পরিবারের লোকেরা গৃহবধূ সুমি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে প্রচার করে। তারা  তড়িঘরি করে মৃতদেহটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এর পরে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে শিশুপুত্রসহ শিপন হোসেন পালিয়ে যায়।

গার্মেন্টস শ্রমিক সুমির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর গ্রাম্য রাজনৈতিক নেতারা হত্যা কান্ডটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে নিহতের পরিবারের সাথে দফায় দফায় দেন-দরবার করতে থাকে। হাসপাতাল কম্পাউন্ডেই শালিস বসানো হয়।

এ সময় অবশ্য হাসপাতালের সিড়ি ঘরে মৃতদেহের সুরথহাল রিপোর্ট তৈরী করছিল পুলিশের একজন এসআই। সুমির বাবা বেঁকে বসায় নেতাদের আপস ফরমুলার প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।    

নিহতের বাবা শরিফুল ইসলাম জানান বিয়ের পর মেয়ে আয় রোজগার করে দেওয়ায় তাদের সংসার ভালোই চলছিল। মেয়ে সন্তান সম্ভবা হয়ে চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসায় শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীর নির্যাতন চরমে পৌছায়। কয়েকমাস আগে শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে শিশু পুত্র নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। ঈদের আগে সে স্বামীর বাড়ি ফিরে যায়। এ ঘটনার ৪ দিনের মাথায় স্বামীর নির্যাতনে সে খুন হয়েছে। নেতারা শালিস করে মামলা না করার জন্য চাপ দিয়েছে। সে শুধু মেয়ে হত্যাকারীর গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন।

নিহতের শ্বশুর ইসলাম প্রামানিক বলেন, সকালে তার ছেলের মুখে প্রথম শুনেছেন সুমি ঘরের ডাব (আড়ার) সাথে ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে তারা নিজেরা সুমিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুদিপ কুমার দে বলেন, সুমিকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে এ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, নিহত গৃহবধূর ৮ মাস বয়সের শিশুটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা আপোষ করার চেষ্টা করেছিল।

এসআই প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। গলায় ফাঁসের আলামত পাওয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেন। সুরথহাল রিপোর্ট করার পর মৃতদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।   

এবিএন/সুমন কুমার মন্ডল/গালিব/জসিম

 

এই বিভাগের আরো সংবাদ