ধর্মপাশায় অজ্ঞাত পাগল হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৩৬
প্রায় ৭০ বছর বয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ধারী এক পাগল, অর্ধ্ব ঊলঙ্গ অবস্থায় তিনি বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরা ফেরা করে আসছিলেন। তাঁর মাথায় মোটা জট চুল থাকায় ওইসব বাজারসহ এলাকাবাসী তাঁকে জট মামা, সাধু মামা আবার কেউ কেউ তাঁকে পাগল মামা বলেও ডাকতেন। আদর করে অনেকেই তাঁকে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিতেন। তবে তিনি কারো দেওয়া খাবার খেতেন আবার কারো কারো দেওয়া খাবার ফেলে দিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করে চলে যেতেন।
এ ভাবেই তিনি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের মহদীপুর বাজারের রাস্তায়-রাস্তায় ঘূরে বা কারো দোকান ঘরের বারান্দায় শুয়ে বসে দিন কাটিয়ে আসলেও তিনি কোনো দিন কারো কোনো ক্ষতি করেননি। নাম পরিচয় না জানা ওই পাগল মামা কারো সাথে কোনো কথা বলতেননা। তবে তিনি মাঝে মধ্যে হিন্দি ভাষায় কিছু কিছু কথা বলতেন বলে জানান ওই বাজারের চা বিক্রেতা আব্দুল হামিদ (৫৫)।
এদিকে, ‘পাগলের কোনো শত্রু নেই’ এই প্রবাদ বাক্যটিকে মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে মহদীপুর গ্রামের জব্বার খাঁর ছেলে সুমন মিয়া (১৮) নামে এক বখাটে যুবক। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে ওই পাগল মামা মহদীপুর বাজারের হামিদ মিয়ার চায়ের দোকানের সামনের রাস্তায় বরাবরের মতোই বসে ছিলেন ।
এ সময় হঠাৎ করে মহদীপুর গ্রামের বখাটে যুবক সুমন মিয়া একটি কুড়াল হাতে নিয়ে হামিদ মিয়ার দোকানের সামনে এসে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই সুমন তার হাতে থাকা কুড়ালটি দিয়ে আকস্মিকভাবে ওই পাগল মামার মাথার পেছনের অংশে কুপ মেরে তাকে গুরুতর আহত করে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে ঘাতক সুমনের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং তারা গুরুতর আহত পাগল মামাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হলে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক সঙ্গে-সঙ্গেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত পাগল মামাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরীত করেন। পরে সেখানে আরো প্রায় ১২ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর সুমনের পরিবারের লোকজন আহত ওই পাগল মামাকে তাদের নিজ বাড়ি মহদীপুর গ্রামে নিয়ে আসে। পরে আহত হওয়ার প্রায় আড়াই মাস পর চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে অসুস্থ অবস্থায় ওই পাগল মামার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই পাগল মামার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য তাঁর লাশ সুনামগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় এবং ময়না তদন্ত শেষে তাঁর লাশ সুনামগঞ্জ সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে প্রকাশ্যে সুমনের কুড়ালের কুপের আঘাতে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ওই পাগল মামার মৃত্যুর প্রায় ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ ঘাতক সুমনকে গ্রেপ্তার করে আজো তাকে আইনের আওতায় না আনায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পাগল মামা হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মহদীপুর বাজারের চায়ের দোকানদার হামিদ মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাগল মামা একজন ভাল মানুষ ছিলেন। সে কোনোদিন কারো কোনো ক্ষতি করেননি। তিনি প্রতিদিন দুই-দিনবার আমার দোকানের সামনের রাস্তায় এসে বসে থাকতেন এবং তাঁকে কেউ কোনো খাবার দিলে খেতেন আবার কখনো তিনি খেতেন না। হামিদ মিয়া আরো
জানান, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সকালে ওই পাগল মামা প্রতিদিনের ন্যায় আমার দোকানের সামনের রাস্তায় এসে বসে থাকা অবস্থায় সুমন একটি কুড়াল হাতে নিয়ে এসেই কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রকাশ্যে সে পাগল মামার মাথার পেছনের অংশে তার হাতে থাকা কুড়ালটি দিয়ে প্রকাশ্যে কুপ মেরে চলে যায়। পাগল মামার মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে পাগল মামাকে সুস্থ্য করে তুলার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুমনের বড় ভাই ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আল-আমিন খান বলেন, আমার ভাই সুমন তখন মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ওই পাগল মামাকে আঘাত করেছিল যেমন সত্য। পাশাপাশি আহতাবস্থায় আমরা তাঁকে দীর্ঘদিন ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করার পর পাগল মামা সুস্থ্য হয়ে উঠেন। তবে তিনি সুস্থ্য হওয়ার বেশ কিছুদিন পর স্বাভাবিকভাবেই ওই পাগল মামার মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন আল-আমিন।
ধর্মপাশা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম আহম্মেদ বলেন, ওই পাগল মামা আহত হওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছিলাম। তবে এ বিষয়টি বর্তমানে কি আবস্থায় রয়েছে তা আমার জানা নেই।
ধর্মপাশা থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে সুনাগঞ্জের পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ্ খান বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাকে কেন জানানো হয়নি তা আমি খতিয়ে দেখব এবং মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিএন/ইমাম হোসেন/জসিম/তোহা
এদিকে, ‘পাগলের কোনো শত্রু নেই’ এই প্রবাদ বাক্যটিকে মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে মহদীপুর গ্রামের জব্বার খাঁর ছেলে সুমন মিয়া (১৮) নামে এক বখাটে যুবক। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে ওই পাগল মামা মহদীপুর বাজারের হামিদ মিয়ার চায়ের দোকানের সামনের রাস্তায় বরাবরের মতোই বসে ছিলেন ।
এ সময় হঠাৎ করে মহদীপুর গ্রামের বখাটে যুবক সুমন মিয়া একটি কুড়াল হাতে নিয়ে হামিদ মিয়ার দোকানের সামনে এসে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই সুমন তার হাতে থাকা কুড়ালটি দিয়ে আকস্মিকভাবে ওই পাগল মামার মাথার পেছনের অংশে কুপ মেরে তাকে গুরুতর আহত করে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে ঘাতক সুমনের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং তারা গুরুতর আহত পাগল মামাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হলে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক সঙ্গে-সঙ্গেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত পাগল মামাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরীত করেন। পরে সেখানে আরো প্রায় ১২ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর সুমনের পরিবারের লোকজন আহত ওই পাগল মামাকে তাদের নিজ বাড়ি মহদীপুর গ্রামে নিয়ে আসে। পরে আহত হওয়ার প্রায় আড়াই মাস পর চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে অসুস্থ অবস্থায় ওই পাগল মামার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই পাগল মামার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য তাঁর লাশ সুনামগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় এবং ময়না তদন্ত শেষে তাঁর লাশ সুনামগঞ্জ সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে প্রকাশ্যে সুমনের কুড়ালের কুপের আঘাতে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ওই পাগল মামার মৃত্যুর প্রায় ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ ঘাতক সুমনকে গ্রেপ্তার করে আজো তাকে আইনের আওতায় না আনায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পাগল মামা হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মহদীপুর বাজারের চায়ের দোকানদার হামিদ মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাগল মামা একজন ভাল মানুষ ছিলেন। সে কোনোদিন কারো কোনো ক্ষতি করেননি। তিনি প্রতিদিন দুই-দিনবার আমার দোকানের সামনের রাস্তায় এসে বসে থাকতেন এবং তাঁকে কেউ কোনো খাবার দিলে খেতেন আবার কখনো তিনি খেতেন না। হামিদ মিয়া আরো
জানান, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সকালে ওই পাগল মামা প্রতিদিনের ন্যায় আমার দোকানের সামনের রাস্তায় এসে বসে থাকা অবস্থায় সুমন একটি কুড়াল হাতে নিয়ে এসেই কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রকাশ্যে সে পাগল মামার মাথার পেছনের অংশে তার হাতে থাকা কুড়ালটি দিয়ে প্রকাশ্যে কুপ মেরে চলে যায়। পাগল মামার মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে পাগল মামাকে সুস্থ্য করে তুলার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছে বলেও তিনি জানান।
ধর্মপাশা থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে সুনাগঞ্জের পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ্ খান বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাকে কেন জানানো হয়নি তা আমি খতিয়ে দেখব এবং মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিএন/ইমাম হোসেন/জসিম/তোহা
এই বিভাগের আরো সংবাদ