সিরাজগঞ্জে হাজার বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধানের দাবি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার খিরিতলা গ্রামে মহাভারতে বিরাট রাজার মহল ও মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ওই বিভাগের শিক্ষক রিফাত-উর-রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা খিরিতলা গ্রামের পরিত্যক্ত উঁচু ঢিবি ও এর আশপাশের ধ্বংসস্তূপ নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপে অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার দিনব্যপী ঢিবিতে জরিপ ও গবেষণায় এই তথ্য পান তারা। এ সময় ওই বিভাগের অপর শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক গবেষণায় শিক্ষ রিফাত-উর-রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় ৮’শ থেকে ১ হাজার খ্রিস্টাব্দের একটি সমৃদ্ধ নগরী ছিল এই ডিপি অঞ্চল। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মহাভারতে বর্ণিত বিরাট রাজার প্রাসাদ ছিল এই অঞ্চলেই। এ উপজেলার খিরিতলাসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক উঁচু ঢিবির সন্ধান পাওয়া যায়। ওই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ঢিবিটাকে স্থানীয়রা রাজার বাড়ি বলে অভিহিত করেন। এতে প্রাচীনকালের ইট নির্মিত স্থাপনার ভগ্নাংশ দৃশ্যমান এবং ঢিবিতে পোড়ামাটির চিত্রফলক দেখে ধারণা করা যায় এগুলি গুপ্ত পরবর্তী যুগের। এখানে গুপ্ত আমলের একটি মুদ্রাও পাওয়া যায়। এ থেকে অনুমিত হয় এ স্থানটি গুপ্ত কিংবা পাল আমলের একটি সমৃদ্ধ জনপদ।

পাল আমল পর্যন্ত গৌরবের সঙ্গেই হয়তো এই জনপদ টিকে ছিল। তিনি আরও বলেন, ১৯৯০ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার পাবনা’ সূত্র মতে- নিমগাছি অতি প্রাচীন স্থান। এটিকে মহাভারতে বর্ণিত বিরাট রাজার শহর বলে অভিহিত করা হয়। প্রাচীন করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে প্রায় ৮ বর্গমাইল আয়তনের একটি নগরীর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে এখানে।

দেশবরেণ্য প্রত্নতাত্ত্বিক আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ১৯৮৪ সালে তার বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ বইয়ে উল্লেখ করেছেন, মহাভারতে বর্ণিত মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজপ্রাসাদ ছিল এ অঞ্চলে। নৃত্যশীলা, কীচক স্থান, বুরুজ ইত্যাদি নামে অন্যান্য ঢিবিগুলি পরিচিত। পান্ডবেরা অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এখানে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। প্রমাণ স্বরূপ একটি প্রাচীন বৃক্ষকে মহাভারতে বর্ণিত শমীবৃক্ষ ও একটি স্থানকে বিরাট রাজার গো-গৃহ বলে চিহ্নিত করা হয়।

 এবিএন/এস,এম তফিজ উদ্দিন/জসিম/রাজ্জাক