আজকের শিরোনাম :

সোনাগাজীদে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৯

সোনাগাজীতে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে চরছান্দিয়া ইউনিয়নের হাজী শেখ মোহাম্মদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।  যার কারনে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা।  শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন একমাত্র শিক্ষক।  প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকলেও বিদ্যালয়ের দপ্তরীর কাজ থেকে শুরু করে সব কাজ একাই করছেন তিনি। 

গত কিছুদিন পূর্বে প্রেষণে ২জন শিক্ষক নিয়োগ দিলেও তদবির করে তারা যোগদান না করে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যায়।  শিক্ষক সংকটের কারনে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনীর শ্রেনী কার্যক্রম চালু করা যায়নি।  এ অবস্থায় বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন তাদের অভিভাবকেরা।  এ নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে বিদ্যালয় বিহীন গ্রামে সরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের ঘোষণা দেয় সরকার।  এ ঘোষণা জানার পর দক্ষিণ চরচান্দিয়া গ্রামের বড় সর্দার বাড়ির সমাজ সেবক হাজী শেখ মোহাম্মদ সাফ কবলা মুলে ৩৩ শতক ভূমি দান করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে।বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পর ১০জানুয়ারি ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেটি উদ্বোধন করা হয়।

শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পর থেকে মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।গত ৬ মাস পূর্বে একজন শিক্ষককে পদোন্নতি জনিত কারনে বদলি করার পর থেকে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে শ্রেনী কার্যক্রম।

প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৬৯জন। এসব শিক্ষার্থীদের একাই সামাল দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক মো.নিজাম উদ্দিন। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ায় ইতোমধ্যে বহু শিক্ষার্থীকে অন্যত্র ভর্তি করিয়েছেন তাদের অভিভাবকেরা।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি মো. আবুল খায়ের হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমার পিতা হাজী শেখ মোহাম্মদ পিছিয়ে পড়া গ্রামের মানুষদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াতে এবং তাদেরকে এগিয়ে নিতে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ৩৩ শতক জমি দান করলে সরকারিভাবে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু তিনি যে আশায় জমি দান করেছেন সে আশার প্রতিফলন দেখে যেতে পারেননি। একটি মাত্র শিক্ষক দিয়ে কোন রকমে শ্রেনী কার্যক্রম চলছে।। এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে বার বার আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন জানান, শিক্ষক সংকটের কারনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি চরম হিমশিম খাচ্ছেন, অভিভাবরা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন।বিদ্যালয়ের শ্রেনী কার্যক্রম সচল রাখতে দ্রুত অন্তত ২ জন শিক্ষক পদায়নের জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান।

চরছান্দিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, আমি অনেক দিন থেকে শিক্ষক পদায়ন করতে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানালেও তারা আশ্বাসের বানী শোনালেও কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হিটলারুজ্জামান বলেন, গত কিছুদিন পূর্বে ওই বিদ্যালয়ে ২ জন শিক্ষক পদায়ন করা হয়েছিলো কিন্তু তারা তবদির করে অন্যত্র চলে যায়।বিদ্যালয়টির অবস্থান উপকুলীূয় এলাকায় হওয়ার কারনে  শিক্ষকেরা বদলী হয়ে ওই বিদ্যালয়ে কর্তব্য পালনে অনীহা প্রকাশ করেন। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আবুল হোসেন রিপন

 

এই বিভাগের আরো সংবাদ