ধামইরহাটে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৪৯
নওগাঁর ধামইরহাটে খেজুর গাছের খেজুর রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার গাছিরা। ছয় ঋতুর মধ্যে শীতকাল অন্যতম। এই শীত কালের রয়েছে নানা রকমের বৈশিষ্ট্য। শীতকালের আগমনে শুরু হয়ে যায় পিঠা-পুলির উৎসব। শীতকালের অন্যতম একটি সুস্বাদু পন্য খেজুর গাছের রস থেকে তৈরি সুস্বাদু গুড়।
সূর্যাস্ত যাওয়ার আগে গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ পরিস্কারসহ হাড়ি বাধার কাজ শুরু করে। আর সারা রাতে হাড়িতে যে রস সংগ্রহ হয় সেই রসকে গরম করে তৈরি করা হয় সুস্বাদু গুড়। আর পুরোদমে শীত শুরু না হওয়ায় গুড়ের মৌসুম এখনো তেমন একটাজমে উঠেনি বলে জনানয় স্থানীয় গাছিরা।
খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির কাজ চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ ধামইরহাট উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এদৃশ্য চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য ধামইরহাট উপজেলা এক সময় খ্যাতি ছিল।
সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেঁজুরের রস ও গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝারের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। কোন পরিচর্চা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতো এই সব খেঁজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমেই যাচ্ছে।
নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা থেকে আসা গাছিয়া রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা পেশাগত কারণে প্রায় প্রতি বছর ধামইরহাট উপজেলায় এসে খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে ৪ মাসের জন্য গাছ ভাড়া নিই। চাহিদা মত খেজুর গাছ না পাওয়ার কারণে রস কম হওয়ায় আশানুরুপ গুড় তৈরি করতে পারছি না। যার কারণে এখন আর তেমন পোষায় না। তারপরও এবছর প্রায় ১ শ’ ৬০টির মত খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করেছি। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে জীবিকার জন্য এই পেশা ধরে রেখেছি। তবে যে ভাবে খেজুর গাছ নিধন করা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই এই এলাকা থেকে খেজুর গাছ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন বর্তমান বাজারে আখের গুড় চিনি যে মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে তার চেয়ে মানসম্পূর্ন খেজুরের গুড়ের দাম এবছর কিছুটা বেশি হবে এমনটায় আশা আমাদের। শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয় সে পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারছি না।
এবিএন/আব্দুল্লাহ হেল বাকী/জসিম/রাজ্জাক
এবিএন/আব্দুল্লাহ হেল বাকী/জসিম/রাজ্জাক
এই বিভাগের আরো সংবাদ