আজকের শিরোনাম :

একটি ব্রিজের অভাবে ৩ উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০৫

৪নং চরের একটি ব্রিজের অভাবে ৩ উপজেলার জনগণের দুর্ভোগ। উপজেলা তিনটি হলো-জামালপুরের মেলান্দহ, ইসলামপুর এবং শেরপুরের সদর। ব্রিজ নির্মাণ নাহওয়ায় যুগযুগ ধরে এই তিনটি উপজেলাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাটি তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় শুধু নির্বাচনেরর সময়ই জনপ্রতিনিধিরা আসেন নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে।

এরপর আর তাদের মুখ দেখা যায়না। সংসদ নির্বাচনে চরাঞ্চলের উন্নয়ন্নসহ তিনটি উপজেলার সংযোগস্থল ৪নং চরে ব্রিজের প্রত্যাশায় আ‘লীগ-বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিন‘দলের লোকদেরই ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছে। কাঙ্খিত কোন সুফল পাইনি তারা।

নির্বাচিত এমপিদের মধ্যে যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে আ‘লীগের মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনের সাংসদ-হুইপ মির্জা আজম, ইসলামপুর আসনের সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ রাশেদ মোশাররফ, বর্তমানে আলহাজ ফরিদুল হক খান দুলাল, বিএনপির সুলতান মাহমুদ বাবু, শেরপুরের বর্তমান আ‘লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান আতিক, জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি শাহ্ রফিকুল বারী চৌধুরী, বিএনপি‘র সাবেক মন্ত্রী হামিদ খন্দকার, ডাক্তার ছামিদুল হক  প্রমুখ।

ভৌগোলিক সীমায় জামালপুরের মেলান্দহ, ইসলামপুর ও শেরপুরের হাট-বাজারসহ যোগাযোগ রক্ষায় একমাত্র পথ হলো এই এলাকা। ব্রিজটি নির্মাণ হলে-মেলান্দহ-ইসলামপুরের বড় হাট-বাজার ছাড়াও  ৪নংচর বাজার, আগ্রাখালি বাজার, সুরুজ মিয়ার বাজার, খলিফাপাড়ার বাজার, হরিণধরা বাজার, ৭নং চর বাজার, কামার চর বাজার, ডোবারচর বালুরচর বাজার, বেনুয়ারচর বাজার, চিনারচর বাজারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা হবে। বাড়বে সরকারের আয়ও। এ ছাড়া পূর্বশ্যামপুর, পশ্চিমশ্যামপুর, কাজাইকাটা, আমডাঙ্গা, টুপকারচর, বাবুল্লেপাড়া, আগ্রাখালি, আকন্দপাড়া, শিবোত্তর, লক্ষীপুর, কান্দারচর, পোরারচর, ২নং চর, ৫নং চর, খানপাড়া, ৪নং চর, টাবুরচর, নয়াপাড়া, পক্ষিসারি, চর বাঘাডোবা, শেরপুরের ৬নং চর,  গোয়ালপাড়া, পয়স্তি,কামার চর, নয়াপাড়া, নলবাড়ি, চিনার চর, ধুপার চর, দশকাহনীয়া বাঘের চর, টাঙ্গার পাড়াসহ আরো কিছু এলাকাবাসীর যোগাযোগ রক্ষা হবে। লাঘব হবে দুর্ভোগও।

রাস্তা-ঘাট ও ব্রিজ না থাকায় দুর্ভোগের কথা জানিয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক এবং বিজীত মেম্বার লিয়াকত আলী বলেন-ব্রিজ নাথায় চুরি-ডাকাতির মতো নানা অপকর্মের জন্য পুলিশও আসতে চান না। পুলিশ আসার আগেই অপরাধিরা নির্বিঘ্নে চলে সটকে পড়ে। সন্ধ্যার আগেই মানুষ যার যার ঘরে ফিরে। এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক। যোগাযোগ ব্যবস্থা নাথাকায় এলাকার শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের ভাল ঘরে বিয়ে হয় না। গর্ভবর্তী কিংবা মুমূর্ষু রোগির চিকিৎসা পেতেও সময় মতো ডাক্তার পাওয়া যায় না।  হাসপাতালে নিতেও নানা প্রতিকূলতা পড়তে হয়।
        
পল্লী ডাক্তার রেজ্জাক জানান-আমি গ্রামেই বেশী সময় কাটাই। চরাঞ্চলের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান ভাল না। কেননা ব্রিজ নাথাকার কারণে এই এলাকাতে দুরাগত কোন ভাল শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসতে চান না। গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকদেরও নৌকা যোগে নদী পারাপার হয়ে ক্লাশে আসতে নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হয়ে যায়। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নাথাকায় বিভিন্ন এনজিও গুলোর অর্থ নাশের তদারকিও ঠিকভাবে হয় না। অবসর প্রাপ্ত সেনা অফিসার ডাক্তার ও মানবাধিকার কর্মী জয়নাল আবেদীন জানান-সড়ক যোগাযোগ নাথাকায় কৃষি পন্য সঠিক সময়ে হাট-বাজারে বিক্রি করা যায় না। ফলে ফড়িয়াদের কাছে  কৃষককে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে হয়। বিক্রি করতে না পেরে সবজি জাতীয় কৃষি পণ্য গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।  যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণেও ভূমিকা রাখতো।

প্রকৃত পক্ষে ৪নং চর এরিয়াটি মেলান্দহ, ইসলামপুর ও শেরপুরের ত্রিসীমা হওয়ায় উন্নয়নমুখী ও যোগাযোগের যে কোন উদ্যোগই সহজে ভেস্তে যায়। ৪নং চরের ব্রিজটি দু‘স্থানে করা যেতে পারে।একটি হলো-৪নং চর হাইস্কুলের সামনে দিয়ে মেলান্দহের টুপকারচর রাস্তার সংযোগ। অন্যটি হলো-কাজাইকাটা হয়ে শ্যামপুরের ডেফলাপাড়ার বিশ্বরোডের সাথে সংযোগ। মেলান্দহের বিশ্বরোডস্থ এলাকা শ্যামপুরের ডেফলাপাড়ার সাথে সংযোগ ব্রিজটি হলে সবচেয়ে সুবিধা হবে বলে এলাকাবাসী জানান। এছাড়া ত্রিসীমানার বিরোধও থাকবে না। তাদের মতে ব্রিজের সংযোগ বিশ্বরোডের দিকে সংযোগ হলে সারাদেশের সাথেই সড়ক যোগাযোগ হবে সুন্দর-স্বার্থক এবং সুবিধাও।

এবিএন/মো: শাহ্ জামাল/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ