আজকের শিরোনাম :

দুর্গম পাহাড়ে আলো ছড়াচ্ছে ময়ূর পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০১৮, ২১:০৮

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি পাড়া ময়ূর পাড়া অবস্থিত রুমা সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে।  রুমার অন্যান্য এলাকা হতে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন পাড়াটির বয়স প্রায় অর্ধশত বছর।

যুগ যুগ ধরে পাড়ার বাসিন্দারা পায়ে হেঁটে রুমার মূল এলাকা বাজারের সাথে যোগাযোগ এবং বাজার-সদায় করে আসছে। অত্যন্ত খাড়া পাহাড় বেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথে যোগাযোগ রক্ষা করে পাড়াবাসী, বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণে। এই পথেই  মাথায় ভারী কৃষি পণ্য নিয়ে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যায় তারা এবং নিত্যপণ্য কিনে একই ভাবে ভারী বোঝা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরে। এভাবেই চলছে পাড়াবাসীর জীবন জীবিকা।

পাড়া প্রতিষ্ঠার এত বছর পরও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না ঘটলেও পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিলো সেই ১৯৬৮ সালে এবং জাতীয়করণ করা হয় ১৯৭৩ সালে। যদিও দুর্গমতা এবং বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার ভালো পরিবেশ গড়ে উঠছিলোনা এতদিন। বেশ কবছর ধরে পরিবেশের আমূল পরিবর্তন ঘটে।

বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন নয়ন, তিনি তিন বছর ধরে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার উদ্যোগে ধীরে ধীরে বিদ্যালয়ের পরিবেশ পাল্টাতে শুরু করে। শনের ছাউনি, বাঁশের বেড়া, চেয়ার টেবিল বিহীন একটি কক্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা বিদ্যালয়টি বর্তমানে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মোট ছয় জন শিক্ষক নিয়ে খুব ভালো ভাবেই চলছে বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষকের অভিমত, বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি অত্যন্ত সতর্ক এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক বিধায় বিদ্যালয়ে সুন্দর পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

এছাড়া তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অবদানও তুলে ধরেন। বিদ্যালয়ে বর্তমান ১২৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। গত বছর পিএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিলো ১০০ ভাগ, যা পুরো উপজেলায় পাসের হারে প্রথম স্থানে ছিলো।  এ প্রতিষ্ঠান থেকে মোট দুই জন শিক্ষাথী বৃত্তি পেয়েছে, গত বছর এক জন মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত কম।

এছাড়াও উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীরা পুরস্কৃত হচ্ছে।  দূরের অন্যান্য পাড়ার শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিকের বব্যস্থা করা হয়েছে, যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।

বিদ্যালয়ে সরজেমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়ের বারান্দায় সারি করে সাজানো টবে বিভিন্ন প্রকারের ফুল গাছ, বিদ্যালয়ের চারপাশটাও ফুল গাছে ভরা। সেগুলোর পরিচর্যা করছে শিক্ষার্থীরা।  প্রধান শিক্ষকের মতে শিক্ষার্থীদের মানবিক বিকাশে পড়াশোনার পাশাপাশি গান-বাজনা,  ক্রীড়া এবং বাগান সৃজন ইত্যাদি কাজগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাড়াবাসীরা বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিবেশে সন্তুষ্ট।  

এবিএন/চনুমং মারমা/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ