ধর্মপাশায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বিপুল পরিমাণ টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৪, ১৩:৪৬

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় পূর্ববিরোধের জেরে দুই পক্ষের এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে টেঁটা বিদ্ধ হয়ে ৪০ আহতের ঘটনায় উভয় পক্ষের বাড়ি-ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার স্বরশ্বতীপুর গ্রামের শামসু মিয়া ও গোলাম মৌলার পক্ষের লোকজনের বাড়ি-ঘরে অভিযান চালিয়ে টেঁটাসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে ধর্মপাশা থানা-পুলিশ।

এর আগে বৃহস্পতিবার ইফতারের পর উপজেলার স্বরশ্বতীপুর গ্রামে পূর্ববিরোধের জের ধরে ওই গ্রামের গোলাম মৌলার পক্ষের লোকজনের সাথে একই গ্রামের শামসু মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩ নানীসহ অন্তত পক্ষে ৪০ জন গুরুতর আহত হয়।

এর মধ্যে গোলাম মৌলার পক্ষের আহত ২৫ জনের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ১০ জনকে ও শামসু মিয়ার পক্ষের ১৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে দুই পক্ষই থানায় পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ধর্মপাশা থানার এসআই আব্দুস সবুর এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার স্বরশ্বতীপুর গ্রামের গোলাম মৌলাসহ তাঁর পক্ষের লোকজনের সাথে একই গ্রামের শামসু মিয়া ও তাঁর লোকজনের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার  বিকেলে শামসু মিয়ার পক্ষের গউস মিয়া (৬৫) নামে এক ব্যক্তি বাড়ির পাশের হাওর থেকে গরুর জন্য ঘাস খেটে তা বস্তায় ভরে হাওরের বেরী বাঁধের উপর দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় গোলাম মৌলার পক্ষের মতি মিযা, মানিক মিযাসহ ৪-৫ জন সেখানে গিয়ে গউস মিয়াকে ওই বাঁধের উপর দিয়ে বাড়িতে যেতে বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এ বিষয়টি জানতে পেরে গউস মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে  বাড়ি থেকে বাঁধের উদ্দেশ্যে আসতে থাকেন। এসময় স্থানীয়রা উভয় পক্ষকেই থামিয়ে দেন। পরে এরই জের ধরে সন্ধ্যায়  উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে পূনরায় সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সময় চলা এ সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্র, টেঁটা, রামদা, বল্লম, কাতরা ও লাঠিসোটার  আঘাতে ৩ নারীসহ কমপক্ষে ৪০ জন গুরুতর আহত হন।

তবে অধিকাংশ আহতরাই টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

অপরদিকে, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে শামসু মিয়ার পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়ির সামনে থাকা গোলাম মৌলার মালিকানাধীন ফাঁসুয়া নামক জলমহালের খলায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত করেছে বলে গোলাম মৌলার পক্ষের লোকজন দাবি করছেন।

এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, এ ঘটনায় দুই পক্ষ থেকেই থানায় পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি  শনিবার দুপুরে স্বরশ্বতীপুর গ্রামে দুই পক্ষের বাড়ি-ঘরে পুলিশ  অভিযান চালিয়ে টেঁটাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এলাকার পরিস্থিতিও এখন শাস্ত রয়েছে।

এবিএন/মোহাম্মদ ইমাম হোসেন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ