হরিপুরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাসব্যাপী পথচারী ও এতিমদের মাঝে ইফতার বিতরণ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৩:২৫

সমাজের এতিম, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষ অর্থের অভাবে ইফতারে ভালমন্দ খেতে পান না। সেসব অসহায় মানুষের মাঝে ভাত-মাংসসহ প্রত্যহ ইফতার তুলে দিচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক কবিরুল ইসলাম কবির।

দুপুর থেকে চলে রান্না-বান্না, বিকেলে চলে প্যাকেটিং। তারপর একটি নির্ধারিত এতিমখানায় ইফতার নিয়ে হাজির হন তিনি। নিজ হাতে তুলে দেন অসহায় এতিম শিশুদের হাতে।

ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী উপজেলা হরিপুর। এই উপজেলার প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক কবিরুল ইসলাম কবির পেশাগত কারণে সারা বছর সাধারণ মানুষের সেবায় কাজ করেন।

চলতি রমজান মাসে এলাকার দরিদ্র, অসহায়, ছিন্নমূল মানুষ ও এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে ইফতার বিতরণের মানবিক উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। প্রবাসী ছোটভাই মাসুদের সহায়তায় নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করেছেন এই মহতি উদ্যোগ।
মাসব্যাপী এই উদ্যোগ সফল করতে সকাল থেকে চলে বাজার সদাই। দুপুরে পরিবার-পরিজনদের সহায়তায় চলে রান্না-বান্না। বিকেলে চলে খাবার প্যাকেটিং। তারপর নির্ধারিত সময়ে অটোচার্জার গাড়িতে করে নিদিষ্ট এতিমখানায় ইফতার পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

এতে প্রতিদিন ৭-৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়। নিজস্ব লোকজন দিয়ে বেশিরভাগ কাজ করার কারণে খরচ অনেকটা কম পড়ে। নইলে হোটেল থেকে ১০০ লোককে ইফতার দিতে গেলে ব্যয় হতো কমপক্ষে দশ হাজারের বেশি টাকা।

শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেলে জেলার হরিপুর উপজেলার বীরগড় দারুল হাদিস হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ইফতারে ছিল খেঁজুর, ভাত, মাংস, সবজী, শসা ও শরবত।

ইফতার পেয়ে এতিমখানার নিবাসীদের মাঝে দারুন আনন্দ-উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়। সকলে পেটভরে তৃপ্তি সহকারে খায়।

শিক্ষার্থীরা বলে, এর আগে এ ধরনের ইফতার আমরা পাইনি। এ ইফতার আমাদের মনকে ঠান্ডা করে দিয়েছে। তারা সকলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।

মাদ্রাসা পরিচালক হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আজকে ইফতার করলাম  কবির সাংবাদিকের আয়োজনে। একটা বাচ্চার ভাল মতো খেতে যতটুকু লাগে, সবই ছিল প্যাকেটে। সকলে পরিতৃপ্তি সহকারে খেতে পেরেছে।

এলাকাবাসী বলেন, হরিপুর উপজেলায় অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি, কোন এতিমখানা বা গরীব দুঃখী মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কবির ভাই এই মহৎ উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন।

প্রথম রমজান থেকে এই কর্মসূচি চলবে শেষ রমজান পর্যন্ত। পরিবারের লোকজনও এর পেছনে সময় ব্যয় করলেও কাউকে রাগ করতে দেখা যায় না। কবির ভাই প্রতিদিন বাড়িতে রান্না করে রাস্তার মোড়ে মোড়ে গরীব-অসহায় রোজাদার মানুষের হাতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।

সাংবাদিক কবিরুল ইসলাম কবির বলেন, আমরা প্রতি বছর রমজানে গরীব অসহায় মানুষকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করি। কিন্তু এ বছর নতুন এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। এজন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

তবে দিনশেষে একজন দরিদ্র বা এতিম শিক্ষার্থী যখন তৃপ্তি সহকারে খেতে পারে, তখন খুব ভাল লাগে। বিদেশে কর্মরত ছোটভাই মাসুদের সহযোগিতায় আমি এই উদ্যোগ চালাচ্ছি। আশা করি, রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

এবিএন/কবিরুল ইসলাম কবির/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ