আজকের শিরোনাম :

চিরিরবন্দরে দীর্ঘ এক যুগ ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন অচল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৬

দীর্ঘ এক যুগ সময়ের বেশি সময় ধরে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে থাকায় হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অলস সময় অতিবাহিত করছেন। এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে থাকায় লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় ক্লিনিক মালিকরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিরিরবন্দরে হাসপাতালটি স্থাপনের পর পরই এক্স-রে মেশিন সংযোজন করা হয়। এক্স-রে মেশিন আসলেও দীর্ঘদিন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকায় তা চালু করা সম্ভব হয়নি। বিগত ২০০৬ কিংবা ২০০৭ সালের দিকে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ হলেও কিছুদিন রোগীদের এক্স-রে সেবা দেয়ার পরই অচল হয়ে যায় মেশিনটি। এর কিছুদিন পর মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী করা হয়। তারপর থেকে এক্স-রে মেশিনটি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সর্বশেষ গত ৬ মাস পূর্বে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। এক্স-রে মেশিনটি চালু না থাকায় তিনি অলস সময় অতিবাহিত করছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা মরিয়ম নেছা বলেন, হাতের ব্যথা নিয়ে সরকারি হাসপাতালে গেছিলাম। ডাক্তার আমাকে বলে পরীক্ষা করাতে। ডাক্তার আমাকে আরো বলেন, হাসপাতালের মেশিন নষ্ট, বাইরে ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। গত কয়েক মাস পূর্বে আরেকবার হাতের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আইছিলাম। তখনো শুনেছি মেশিন নষ্ট।

চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা নীলকান্ত রায় বলেন, সরকারি হাসপাতালে গেছিলাম বুকের এক্স-রে করতে। হাসপাতালের মেশিনটা নষ্ট তাই ডাক্তার হাতে কাগজ ধরে দিয়ে বলেন বাইরের ক্লিনিক থেকে রিপোর্ট করে আনতে। ৫০০ টাকা দিয়ে বাইরে ক্লিনিকে এক্স-রে করালাম। বাইরের ক্লিনিকে টাকা দিয়ে যদি এক্স-রে করতে হয় আর যদি মেশিনই ঠিক না থাকে, তাহলে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে কী লাভ?

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. ভিসি পাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকায় এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। হাসপাতালের ইনডোর-আউটডোর মিলে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন রোগীর এক্স-রে করার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় ইমার্জেন্সি রোগীদেরও এক্স-রে করা সম্ভবপর হয় না। রোগী কিংবা রোগীর লোকজনদের বাইরে গিয়ে ক্লিনিক থেকে এক্স-রে রিপোর্ট করে নিয়ে আসতে হয়। 

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফিক) নাজিবুল্লাহ বলেন, আমি গত ৬ মাস আগে এ হাসপাতালে যোগদান করেছি। আমি এখানে যোগদান করার আরো কয়েক বছর আগে থেকেই এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। আমি প্রাথমিকভাবে এক্স-রে মেশিনটি  ঠিক করার জন্য চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে মেশিনটিকে সচল করা সম্ভব হয়নি। 

চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরাকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভির হাসনাত রবিন বলেন, হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি অন্তত ১০-১২ বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। আমি যোগদান করার পরে এক্স-রে মেশিনটি সচল করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের (নিমিউ অ্যান্ড টিসিতে) পত্র পাঠিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। আমরা ৭ ফেব্রুয়ারি এক্স-রে মেশিনটি মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। কিন্তু ১৬ তারিখ পর্যন্ত কেউ আসেনি। 

এবিএন/মো. রফিকুল ইসলাম/জসিম/গালিব 

এই বিভাগের আরো সংবাদ