মেহেরপুরে বীজের সংকট কাটতে সূর্যমুখী চাষ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:২৯

ভোজ্যতেলের সংকট কাটাতে মেহেরপুরে বীজের জন্য সূর্যমুখীচাষ হয়েছে। যা থেকে অন্তত এক হাজার হেক্টর জমিতে চাষের জন্য বীজ উৎপাদন হবে। যার আনুমানিক দাম এক কোটি টাকা। 

সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চতুর্থবারের মতো বীজের জন্য সূর্যমুখীর চাষ করেছে মেহেরপুরের আমঝুপি বীজ উৎপাদন খামার। সেখানে বীজ উৎপাদনে ২১ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছে সূর্যমুখীর। ফুলে ফুলে ভরে  গেছে খামারের জমি। সেখানে প্রতিদিন কমকরে হলেও দুই থেকে আড়ায় হাজার নারী পুরুষ ভিড় করছে ফুলের বাগানে ছবি তুলতে। ওই বাগানে ঝড় বয়ে যাচ্ছে সেলফি তোলার। বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ টিকটকে ব্যস্ত। 

মেহেরপুর, চুয়াডঙ্গাসহ আশপাশের জেলার মানুষ ছুটে আসছে সূর্যমুখির ফুলের বাগানে। আসছে অগণিত প্রেমিক প্রেমিকারা। সরকারি কর্মকর্তারাও পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন। সকলেরই উদ্দেশ্য ফুলের বাগানে নিজেকে ধরে রাখতে ছবি তুলতে। কেউ যেন ফুল না ছেড়ে সেজন্য সেখানে অতিরিক্ত লোকবলও নিয়োগ করতে হয়েছে খামার কর্তৃপক্ষকে। এখন বীজ খামারে তুলতে পারবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কিত খামারের কর্মকর্তারা। কারণ ফুলেই পাওয়া যায় বীজ। আর সেই দৃষ্টিকাড়া ফুলের মধ্যে কেউবা সেলফি, কেউবা স্বজন নিয়ে ছবি তুলতে ভিড় করছে সব বয়সের নারী পুরুষ।

খামারে চাষ করা সূর্যমুখী ফুলের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে গত দিন পনেরো থেকে সেখানে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। ২০-২৫ কিলোমিটার দূর থেকেও মানুষ মাইক্রোবাস-কার, মোটরসাইকেলে করে ছুটে আসছে দলে দলে।

গাংনী উপজেলার বামুন্দি থেকে এসেছেন গৃহবধু নিলাঞ্জনা, ভগ্নিপতি সুধির সরকার ও তার স্ত্রী নিলিমা। নিলিমা বলেন, গ্রামের অনেকেই এসেছেন এখানে। তাদের কাছে ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে ছবি তুলতে এসেছি। কারণ মেহেরপুরে এমন পরিবেশ কোথাও নেই।

চুয়াডাঙ্গা সদরের আসমানখালী গ্রাম থেকে এসেছেন পারুল ও তার বন্ধু পরিচয় দেয়া হামিদ। তারা জানান মাঠজুড়ে মনমুগ্ধকর  এমন সূর্যমুখি ফুল কখনো দেখিনি।  এখানে তোলা ছবি জীবনের পড়ন্ত বয়সে এসব দিনের কথা মনে করিয়ে দেবে।  

খামারের কেয়ারটেকার আমিরুল ইসলাম জানান, ফুল ফোটার পর ফেসবুকে ভাইরাল হলে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। কাউকে আটকানো যাচ্ছে না। খামারের মূল গেটে তালা লাগানোর পর প্রাচীর টপকে মানুষ ভেতরে প্রবেশ করছে। বাধ্য হয়ে গেট খুলে দিয়ে লাঠি হাতে জমির মধ্যে আসা প্রতিরোধ করতে হচ্ছে। নাহলে গাছের সাথে ছবি তুলতে অনেকেই বাগানের মাঝখানে  চলে আসছে। তাতে অনেক গাছ ভেঙে পড়ছে। 

তিনি আরও জানান, একধরনের বর্ষজীবী ফুল সূর্যমুখী। ওই ফুল  দেখতে কিছুটা সূর্যের মতো বলে এর নাম সূর্যমুখী। ফুলের পাপড়ি খেতে বাগানে আসে বিভিন্ন পাখি। ওড়াউড়ি করে বাগানময়। গত চারবছর ধরে আমঝুপি তৈলবীজ উৎপাদন খামারে বীজের জন্য সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে।

আমঝুপি বীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক আবু তাহের সরদার জানান, সূর্যমুখীর  বীজ শুধু বাংলাদেশেই নয় বরং বিদেশেও বীজ রপ্তানি হয়। সূর্যমুখীর তেল ও বীজের চাহিদা পূরণের জন্য এ চাষের উদে ্যাগ নেয়া হয়েছে। বিনোদনের জায়গা কম থাকায় এ বাগানটিতে উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে দর্শনার্থীদের। এখানে এসে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন সূর্যমূখি চাষে। সাত একর জমিতে অন্তত কোটি টাকার বীজ উৎপাদন হবে বলেও এ কর্মকর্তা জানান। সূযমুখী তেল জাতীয় ফসল। সূর্যমুখী চাষ হলে দেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণ হবে। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। জেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে ৩০ বিঘা জমিতে সূযমুখী চাষ করেছে কৃষকেরা।

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ