আজকের শিরোনাম :

সাদুল্লাপুরের কামারপাড়া রেলগেট-কলেজ মোড় সড়কের ছোট ব্রিজটি মরনফাঁদে পরিনত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৮

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া রেলগেট থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত পাকা সরু  সড়কের মাঝামাঝি ওহাব মেলেটারী বাড়ী সংলগ্ন ছোট ব্রিজটি এখন যেন মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর নেক নজরের অভাবে মান্ধাতা আমলে নির্মিত বেহাল দশার এব্রিজটির দীর্ঘদিনেও কোন রকম সংস্কার ও মেরামত না করায় বিভিন্নস্থানে ফাটল ধরে একপাশের রেলিং ভেঙে পড়ছে।অপর পাশের রেলিংটিও নড়বড়ে অবস্থা বিরাজ করছে।সেটিও যেকোন সময় ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে।তবুও ঝুঁকিপুর্ন ব্রিজটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কারো কোন মাথা ব্যথা নেই।

এছাড়া ব্রিজটির দু,পাশের আনুমানিক একহাজার ফিট সংযোগ সড়কের বিভিন্নস্থানে কার্পেটিং উঠে অসংখ্য খানা খন্দে ভরে গেছে।

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ছোট্র এব্রিজ ও সরু সড়কে চলাচলের সময় প্রতিনিয়ত অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভুক্তভোগি জনসাধারনকে।

ভুক্তভোগিরা জানান, ব্রিজটিতে প্রায়ই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এপর্যন্ত পথচারী, মোটর সাইকেল আরোহী রিকসাভ্যান ব্রিজটির ওপর দিয়ে চলাচল করার সময় সৃষ্ট খাদে হোঁচট খেয়ে ও গাড়ী উল্টে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেকেই মারাত্নক ভাবে আহত হন। অনেকেই রক্তাত্ত জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ব্রিজটি ও সড়কটি একেবারে ছোট হওয়ায় একসাথে চলাচলকারী রিকসাভ্যান ও ইজিবাইক মুখোমুখি কিংবা পিছন থেকে পাশ কাটানো বড়ই দুস্কর হয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগিরা আরো জানান,এই এলাকার মানুষজনের চলাচলের একমাত্র ভরসা জনগুরুত্বপুর্ন ও ব্যস্ততম ব্রিজ ও সরু সড়কটি দিয়ে দিবারাত্রি হাজার হাজার পথচারী ছাড়াও শতশত  শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস,মাল বোঝাই ট্রাক,মাইক্রোবাস,ইজিবাইক,অটোভ্যান, মোটর সাইকল আরোহীরা প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

বর্তমানে ব্রিজটির  বিভিন্নস্থানে ফাটল ধরে রড সিমেন্ট ধসে বড় বড় খাদের সৃষ্টি হওয়ায় সর্বসাধারনের চলাচল একেবারে ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ভগ্নদশার ব্রিজটির ওপর দিয়ে কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পাড়াপাড়ের সময় তারা ভয়ে কাঁপতে থাকেন। মাঝে মধ্যে ব্রিজটির রড সিমেন্ট ধসে খাদের সৃষ্টি হয়।এসময় পথচারী ও সকল প্রকার যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।

কখনো এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বরগণ তাদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে জনসাধারনের সাময়িক চলাচলের জন্য সিমেন্ট বালু মিশিয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে খাদ গুলো মেরামত করে দেন।

ওই এলাকার বাসিন্দা আলম মিয়া ও আব্দুর রহিম বলেন, এই ব্রিজটা নিয়ে আমরা আশেপাশের লোকজন খুব ভয়ে থাকি। কারণ নাজুক দশার ব্রিজটি ওপর দিয়ে সবসময় মানুষজন, যাত্রীবাহি ও মালবাহি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন যেভাবে চলাচল করে এতে কখন জানি কি ঘটে এমন ভয়ে থাকি।তারা আরো বলেন, রাতে কিংবা  দিনে কোন সময় জোরে শব্দ হলে আমরা আঁতকে উঠি যে ব্রিজে কোন কিছু ঘটলো নাকি।

মার্কেটিং কোম্পানীর আনোয়ার হোসেন নামের এক মোটর সাইকেল আরোহী বলেন আমি প্রায় সময়ই এই সড়কে মোটর সাইকেল নিয়ে  যাতায়াত করি।

এরইমধ্যে হঠাৎ ব্রিজের খাদে আমার চলন্ত মোটর সাইকেলটি পড়ে যায়।এতে আমার হাত পা রক্তাত্ত জখম হয়। পরে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে আমাকে গুরুতর আহতবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার জনসাধারনের সুবিধার্থে বিশেষ করে রাস্তা ঘাট ও ব্রিজের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করলেই ব্রিজটির কাজ দ্রুত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

বিদ্যমান  এ অবস্থায় এব্রিজটি দিয়ে যাত্রীবাহি এবং মাল বোঝাই যানবাহনগুলো পাড়াপাড়ের সময় দুর্ঘটনা এঁড়াতে চালকেরা খুব সাবধানে গাড়ি চালিয়ে যেতে দেখা গেছে।

অটোচালক এনামুল হক বলেন,ভাঙাচুড়া সড়ক আর ব্রিজটি দিয়ে পাড় হওয়ার সময় গাড়ী হেলা দোলায় অনেক যাত্রী দুর্ঘটনার ভয়ে কাঁপাকাঁপি করতে থাকেন।

শুধু তাই নয় বেহাল দশার সড়ক এবং ব্রিজটি দিয়ে রিকসাভ্যান,ইজিবাইক, মাইক্রোবাস কিংবা এ্যাম্বুলেন্স যোগে কোন রোগি  চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তীব্র ঝাঁকুনিতে রোগির অবস্থা যেন আরো কাহিল হয়ে পড়ে।

এমতবস্থায় ভাঙাচূড়া এ সড়ক ও ব্রিজটি দিয়ে চলাচলকারীদের  দুর্ঘটনা যেন এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

তাই সর্বসাধারনের নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে চলাচলের নিমিত্তে অনুপযোগি ব্রিজটি ও সরু এ সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও প্রশস্তকরন একান্ত অপরিহার্য বলে স্থানীয় সচেতন মনে করছেন।

বর্তমান সরকারের এ উন্নয়নের এধারাবাহিকতায় স্থানীয়রা বলছেন,নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা একটু দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করলেই ব্রিজটির সংস্কার কাজ দ্রুত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা না হলে এ অবস্থা চলতে থাকলে যেকোন মুহুর্তে প্রাণহানিকর
ঘটনা ঘটতে পারে।

ওই এলাকার অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন,স্থানীয় সরকারসহ যেকোন নির্বাচন আসলেই অনেক প্রার্থী ও নেতারা ব্রিজটি দ্রুত মেরামত ও সংস্কার করার জন্য আশ্বাস দিয়ে ভোট নেন। এরপর ভোট শেষে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি  আর ওইসব নেতাদের খুঁজেও পাওয়া যায় না। অনেক পথচারী বলছেন,ব্রিজটি বিপদজনক জেনেও প্রয়োজনের তাগিদে নিরূপায় হয়ে জেলা ও উপজেলা শহরে যেতে হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হাবিব বলেন,আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি।বিষয়টি আমার জানা নেই।তারপরেও খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এআরএম মাহাফুজার রহমান বলেন,এবিষয়ে ইজ্ঞিনিয়ার সাহেবের সাথে কথা হয়েছে।ইতিমধ্যে তিনি ব্রিজটি দেখে  ছবি ও ভিডিও করে নিয়েছেন। আমি আশাবাদি খুব শীগ্রই ব্রিজটির কাজ হবে।

এবিএন/মোঃ শহিদুল ইসলাম শাহিন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ