আজকের শিরোনাম :

বাবার ইচ্ছা পূরণে লাশ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষা দিলেন শাহানাজ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০৬

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাবার মরদেহ বাড়ির উঠানে রেখে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মেয়ে শাহানাজ পারভীন। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দেয় শাহানাজ। প্রথম দিন ছিল বাংলা পরীক্ষা। সে উপজেলার সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজ থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

পাড়া ও প্রতিবেশী স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। এদিকে শাহানাজ পারভীন বাবার মরদেহ বাড়ির উঠানে রেখে ২০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরে এসে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহেদ আলী (৫০) গত বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে তার জানাজা সময় নির্ধারণ করা হয়।

শাহেদ আলীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তার মৃত্যুতে একমাত্র মেয়ে শাহানাজ এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাবার ইচ্ছা পূরণে সে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবাকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দেয় সে। পরীক্ষা শেষে শাহানাজ বাড়িতে ফেরার পর বাবার দাফন কাজ শেষ হয়।

শাহানাজের বাবা শাহেদ আলী একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ হলেও কাঠের ব্যবসা করে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল থাকা সত্বেও মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বাবার প্রবল ইচ্ছার জেরে শাহানাজ এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। মেধাবী শাহনাজ পারভীন বড় খাতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রী কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন।

পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগে শাহানাজ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। পরীক্ষা দিয়েছি হয়তো ভালো রেজাল্ট আসবে না।

হাতীবান্ধা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মোতাহার হোসেন লাভলু বলেন, বাবাকে হারানো যে কোনো সন্তানের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। এরপরও শাহানাজ বাবা হারানোর কষ্ট নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। আমরা তার পরীক্ষার সময় যতটা সহযোগিতার দরকার করছি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন, শাহানাজ পরীক্ষা দেয়ার জন্য আসার পর জানতে পেরেছি। তাকে সান্ত্বনা দিয়েছি এবং পরীক্ষা দিতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ