আজকের শিরোনাম :

দিরাইয়ে ভিজিএফের চাল গায়েবের অভিযোগে বিক্ষোভ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৯:০১

ভিজিএফের চাল হিসেবে গরমিল থাকায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রচনারচর ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় জনতা।

সোমবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিতোষ রায়ের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভেকারীরা জানান, পবিত্র ইদুল ফিতরকে সামনে রেখে হতদরিদ্র মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভিজিএফের ৭৮৩ বস্তা চাল বরাদ্দ দেয়া হয় দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদে। 

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার দিনব্যাপী চাল বন্টন করার কথা। ফুড অফিসের প্রতিনিধি উপস্থিতিতে সকালে গুদামে চালের বস্তার হিসেবে গরমিল হলে প্রতিবাদ করেন একাধিক ইউপি সদস্য। পরে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন উপস্থিত জনতা। বিক্ষোভকারী জানান, ইউপি চেয়ারম্যান পরিতোষ রায় সরকারি বরাদ্দকৃত চাল স¤পূর্ণ গুদামে না নিয়ে আত্মাসাৎ করতে ২০০ বস্তা চাল অনত্র সরিয়ে রাখেন। যা গতকাল রাতেই এলাকায় চাউর হয়ে যায়। ফলে বিতরনের সময় হিসেবে গরমিল দেখতে পান ট্যাগ অফিসার ও অন্যান্য ইউপি সদস্যরা। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান দাবি করেন চাল কোথাও সরানো হয়নি। চাল গুদামেই রয়েছে। পরবর্তীতে চালের বস্তার হিসেব না মিললে বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন অনেক ইউপি সদস্য।

বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে লোকিয়ে রাখা চালের বস্তা নৌকাযোগে নিয়ে আসতে বাধ্য হন ইউপি চেয়ারম্যান। এসময় বিক্ষোভকারী চাল গুদামে তুলতে নিষেধ করেন ও চাল আত্মসাতের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন।

দীর্ঘসময় চাল বিতরণ বন্ধ থাকার পর উপজেলা নির্বাহী মধ্যস্ততায় বিকালে চাল বিতরণ কার্যকম আবারও শুরু হয়।এদিকে চাল আত্মসাতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্য তরুন কান্তি তালুকদার বকুল বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের সাথে মিটিং করে বলেছিলেন, চাল গুদাম নিয়ে এসে সকল ওযার্ডে বন্টন করা হবে। কিন্তু আমরা পর¯পর শুনতে পারি ১০০-১৫০ বস্তা চাল গুদামে না তুলে অন্য স্থানে রেখেছেন। সকাল থেকে মানুষ চালের জন্যে অপেক্ষা করছে। ট্যাগ অফিসার সাথে নিয়ো গিয়ে আমারা গুদামে চালের হিসেব মিল পাইনি। গরিব মানুষের চাল চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। ইউপি সদস্য সুমন বলেন, গরীব মানুষরা দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর ১০ কেজি চাল নিতে। 

সকাল পেরিয়ে দুপুর চলেগেলেও কেউ চাল পায়নি। গুদামে ২০০ বস্তা চালের হদিস নেই।  গুদামে চাল না এনে অন্যখানে লুকিয়ে রেখেছেন চেয়ারম্যান। এদিকে গুদামে  চাল বুঝে না পাওয়ার ব্যাপারে বিষয়ে সত্যতা প্রকাশ করেছেন সরেজমিনে উপস্থিত থাকা ট্যাগ অফিসার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সহকারি প্রকৌশলী উজ্জ্বল খান। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান বা পরিষদের দায়িত্বশীলরা আমাকে চালের স্টক বুঝিয়ে দিতে পারেননি। তারা নানা গড়িমসি করেছেন। পরে আমাকে জানানো হয় চাল নাকি নৌকায় আছে। পরে তোলা হবে। তবে গুদামে চাল কম থাকার ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যানের উপর দায় চাপালেন ইউপি চেয়ারম্যান পরিতোষ রায়।  তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান জানে। সে এই চালের হিসেব জানে। আমাকে বলেছে শ্রমিকের অভাবে গতরাতে চাল স¤পূর্ণ গুদামে তোলা যায়নি। পরে গুদামে চাল আনছে কি না বলেনি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। ৭০ বস্তা চাল নৌকায় পেয়েছি।এটা স¤পূর্ণ অস্বচ্ছতা। কেন এরকম হলো আমি চেয়ারম্যানকে শোকজ করবো।

এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/তানভীর হাসান

এই বিভাগের আরো সংবাদ