আজকের শিরোনাম :

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ঠেকাতে আবারও তৎপর হিজবুত তাহরীর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:৩৪

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি ঠেকাতে অত্যন্ত তৎপর ও সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর। শিক্ষার্থীদের মেইলে একাধিকবার জিহাদী বার্তা ও রাজনীতি বন্ধের বার্তা দিয়ে মেইল করার পর এবার নিজেদের ফেসবুক পেজের একটি ভিডিওর কিউআর কোড স্টিকার আকারে ছাপিয়ে পলাশীর মোড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিচ্ছে মৌলবাদী গোষ্ঠীটি।

ছাত্র রাজনীতি নিয়ে গত মাসের শেষের দিকে বুয়েটে শুরু হয় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন। গত ২৮ মার্চ ছাত্রলীগের সভাপতি বুয়েটে প্রবেশ করে ছাত্রলীগের কমিটি দিচ্ছে এমন গুজব ছড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়।
এ সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তার সঙ্গে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। সেইসঙ্গে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ বহালের দাবিও জানান আন্দোলনকারী। শেষমেশ আন্দোলনের বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। যেখানে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই।

এদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের সমাগাম ঘটানোর কারণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর আবাসিক হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিতের আদেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এমন পরিস্থিতিতে হিজবুত তাহরীরের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। লিবারেটেড ইয়ুথ নামে হিজবুত তাহরীরের একটি পেজ থেকে মূলত ফেসবুকে এসব অপপ্রচার চলছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে স্টিকার লাগিয়েও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে হিজবুত তাহরীর। এমন একটি স্টিকার এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে লেখা হয়, 'বুয়েটে একক আধিপাত্যের সন্ত্রাস কায়েম করতে মরিয়া বুদ্ধিবৃত্তিক ও আদর্শিকভাবে দেউলিয়া ছাত্রলীগ'।

লিবারেটেড ইয়ুথ নামে পেজ থেকে সামাজিক যোগাযোগযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা যায়, ছাত্রলীগ একটি কাঠামোগত সমস্যা। এরা সবাই সাইকোলেভেলের সন্ত্রাসী পর্যায়ে চলে গেছে।

ভিডিওটিতে একটি শীর্ষ গণমাধ্যমে অনলাইন জরিপের কথাও বলা হয়। কিন্তু কোন গণমাধ্যম সেই বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি।  

২০১৯ সালে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও সেখানে কার্যক্রম চালিয়ে গেছে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির ও হিজবুত তাহরীর। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের শুরুর দিকে বুয়েটে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন শিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম নিয়ে কোনো আপত্তির কথা জানানো হয়নি। পরে গণমাধ্যমের চাপে তারা এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হয়। তবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দুই সংগঠনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তেমন তৎপরতা চোখে পড়েনি।

এরই মধ্যে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের ইমেইল দিয়েছে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠন হিজবুত তাহরীর।

কিন্তু বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে পড়ে লেগেছে বুয়েটের সাবেক কিছু অ্যালামনাই। বুয়েটে শিবিরের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ড. শফিকুল ইসলামের কথা বিশ্বাস করতে চাননি তারা।

বুয়েটে শিবিরের কার্যক্রম চলছে তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম। এটি জানার পরেও সব শেষ সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। উল্টো কোনো প্রমাণ ছাড়াই শিবিরের সাবেক সভাপতির বক্তব্য দেওয়ায় এর প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে এক শিক্ষার্থীকে। অর্থাৎ শিবিরের সাবেক সভাপতির বক্তব্যও তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না বা আমলে নিতে চাইছেন না। যা স্পষ্ট দ্বিমুখী আচরণ।
 
এদিকে গণমাধ্যমে প্রচারিত হিজবুত তাহরীর ও শিবির নিয়ে প্রকাশিত খবরকে অপপ্রচার বলে চালানোর চেষ্টা করেছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছে। সেইসঙ্গে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কাছ থেকে কোনো রকমের প্রশ্নও সংবাদ সম্মেলনে তারা নেয়নি। যা পুরোটাই স্বেচ্ছাচারিতা।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ