পেঁপে পাতার রস কি আসলেই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর?
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০১৯, ১৫:৫৫
দেশে ব্যাপক আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিকমাধ্যমে ডেঙ্গুর কিছু প্রাকৃতিক সমাধানের কথা ছড়িয়ে পড়েছে- যার মধ্যে একটি হলো পেঁপে পাতার রস।
বলা হচ্ছে, পেঁপে পাতার রসের সঙ্গে আরও কিছু উপাদান যোগ করে একটি নির্দিষ্ট সময় বিরতিতে পান করলে ডেঙ্গু থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।
কিন্তু আসলেই কি পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে?
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, পেঁপে পাতার রস যে ডেঙ্গু নিরসনে ভূমিকা রাখে, এ দাবির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ডেঙ্গু নিরসনে পেঁপে পাতার রসের ভূমিকার পরীক্ষা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে, কিন্তু পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি যে এটি ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর।
পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পরীক্ষা হলেও বৈজ্ঞানিক নীতি অনুসরণ করে কোনো ধরনের ‘র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল’-এর মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়নি বলে জানান মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কোনো ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হলে র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল হতে হবে। এ ছাড়া নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না যে ওই ওষুধটি কোনো একটি নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর।’
মুজিবুর রহমান বলেন, বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে পেঁপে পাতার রসের কার্যকারিতার বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
তবে পৃথিবীর কয়েকটি দেশে ডেঙ্গু রোগীকে পেঁপে পাতার রস খাওয়ানোর উপদেশ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
২০১৭ সালে ভারতে ৪০০ ডেঙ্গু রোগীর ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় উঠে আসে যে পেঁপে পাতার রস খাওয়া রোগীদের রক্তকণিকার পরিমাণ অন্য রোগীদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি বেড়েছে এবং তাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অপেক্ষাকৃত কম। খবরটি তখন ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’তে প্রকাশিত হয়েছিল।
এ ছাড়া পেঁপে পাতার রস খাওয়ানো ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে রক্ত নেয়ার প্রয়োজনীতার হারও কম হিসেবে পরিলক্ষিত হয়।
ডেঙ্গুর তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোগীদের নির্দিষ্ট পরিমাণে পেঁপে পাতার রস খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের ওয়েবসাইটে।
নারিকেল তেল মাখলে কি আসলেই মশা কামড়ায় না?
পেঁপে পাতার রস খাওয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধ গত কিছু দিন ধরে বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে আরেকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে- সেটি হলো পায়ে নারিকেল তেল মাখা। নারিকেল তেল মশা তাড়ায় এবং তেল পায়ে মাখলে মশার কামড় থেকে বাঁচা সম্ভব- এই দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত প্রকাশ করেননি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা আখতার। ‘মশা যেহেতু চামড়া ভেদ করে রক্ত পান করে, তাই চামড়ার ওপর ঘন যেকোন ধরণের তেলই মশাকে কিছুটা প্রতিহত করতে পারে বলে আমি মনে করি। তবে এ ক্ষেত্রে নারিকেল তেলের সাথে কীটনাশক জাতীয় কোনো দ্রব্য মিশিয়ে নিলে আরও বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করেন তাহমিনা আখতার। ‘ন্যাপথলিন বা কর্পূরের গুড়া বেশ ভালো কীটনাশক। নারিকেল তেলের সঙ্গে কর্পূরের গুড়া মিশালে মশা নিবারনে তা আরও বেশি কার্যকর হতে পারে।’ এ ছাড়া কড়া গন্ধ থাকায় নারিকেল তেলের বদলে সরিষার তেলও মশা দূরে থাকতে কার্যকর হতে পারে।
খবর বিবিসি বাংলা এবিএন/সাদিক/জসিম
পেঁপে পাতার রস খাওয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধ গত কিছু দিন ধরে বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে আরেকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে- সেটি হলো পায়ে নারিকেল তেল মাখা। নারিকেল তেল মশা তাড়ায় এবং তেল পায়ে মাখলে মশার কামড় থেকে বাঁচা সম্ভব- এই দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত প্রকাশ করেননি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা আখতার। ‘মশা যেহেতু চামড়া ভেদ করে রক্ত পান করে, তাই চামড়ার ওপর ঘন যেকোন ধরণের তেলই মশাকে কিছুটা প্রতিহত করতে পারে বলে আমি মনে করি। তবে এ ক্ষেত্রে নারিকেল তেলের সাথে কীটনাশক জাতীয় কোনো দ্রব্য মিশিয়ে নিলে আরও বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করেন তাহমিনা আখতার। ‘ন্যাপথলিন বা কর্পূরের গুড়া বেশ ভালো কীটনাশক। নারিকেল তেলের সঙ্গে কর্পূরের গুড়া মিশালে মশা নিবারনে তা আরও বেশি কার্যকর হতে পারে।’ এ ছাড়া কড়া গন্ধ থাকায় নারিকেল তেলের বদলে সরিষার তেলও মশা দূরে থাকতে কার্যকর হতে পারে।
খবর বিবিসি বাংলা এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ