আজকের শিরোনাম :

হিলিতে লোহার খনি: বাণিজ্যিক উত্তোলন কতটা সম্ভব?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০১৯, ১৮:১৬

বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার হিলিতে সদ্য আবিষ্কার হওয়া লোহার খনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে আকরিক আহরণ কতটা সম্ভব তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নয় সরকারের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (খনন প্রকৌশলী) মাসুদ রানা বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আকরিক বাণিজ্যিক ভাবে উত্তোলন সম্ভব কিনা সেটা জানতে আরও ৫-৬ টা ড্রিলিং করতে হবে।"

মঙ্গলবার দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে লোহার আকরিক বা ম্যাগনেটাইটের খনি পাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।

মিস্টার রানা বলেন, "এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের ড্রিলিং চলছে। এছাড়া রিজার্ভের পরিমাণটা জানতে হবে, তা না হলে উত্তোলন অর্থনৈতিকভাবে সফল হবে কিনা সেটা বোঝা যাবে না।"

খনিতে মেলেনি স্বর্ণ

মিস্টার মাসুদ রানা বলেন, খনিতে লোহার আকরিকের উপস্থিতিই সবচেয়ে বেশি। এছাড়া, খুবই সামান্য পরিমাণে ক্রোমিয়াম আছে। মিলেছে নিকেল ও কপারের উপস্থিতি।

তিনি বলেন, "স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে কিছুটা ভুল তথ্য এসেছে। খনিতে স্বর্ণের কোন উপস্থিতি এখনো পাওয়া যায়নি।"

কি পরিমাণ আকরিক খনিতে রয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে মিস্টার রানা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে করা জিওফিজিক্যাল সার্ভে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এখানে লোহা আকরিকের খনি থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ইসবপুর গ্রামের ৫০ শতক জমিতে খনিজ পদার্থের সন্ধানে খনন কাজ পরিচালনা করছে ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।

মিস্টার রানা বলেন, "যেখানে ড্রিলিং করা হচ্ছে সেখানে পুরুত্ব অনেক। তবে মজুদ জানতে আরও ড্রিলিং করতে হবে।"

কবে শুরু হবে উত্তোলন?

মিস্টার রানা বলেন, "যে পুরুত্বের লোহার আকরিক পাওয়া গেছে তা ৫ বর্গকিলোমিটার জুড়ে থাকতে পারে। সেটা হলে এটা বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন সম্ভব।"

"তবে এটা যেহেতু একটা জরিপ, তাই বাস্তবে কি আছে, সেটা নিশ্চিত হতেই ড্রিলিং করতে হবে।"

কবে থেকে আকরিক উত্তোলন শুরু হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।

এদিকে আকরিক উত্তোলন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব বিভাগের শিক্ষক মাসুমা চৌধুরী বলেন, "যেকোনো খনি থেকে আকরিক আহরণের আগে কত মজুদ আছে, সেটার আকার কত সে বিষয়ে ড্রিলিং ছাড়াও আরও কয়েক ধাপের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।"

"এছাড়া খনিজ আহরণের ব্যয় এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে তার চাহিদা ও দামের তুলনা করার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়," তিনি বলেন।

সেদিক থেকে দেখতে গেলে এখনো প্রাথমিক অবস্থাতেই রয়েছে বাংলাদেশের লোহা খনির বর্তমান পরিস্থিতি।

২০১৩ সালে হিলির মুশিদপুরে কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পায় ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুরে কূপ খনন শুরু হয়। বিবিসি

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ