আজকের শিরোনাম :

সামর্থ্য না থাকায় পুতুল দত্তক নিয়ে সন্তানের অভাব পূরণ করছেন তারা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২০, ১২:৩১

ছবি:এক নারীর কোলে দুইটি পুতুল
মানবশিশুর মতো পুতুলকে আদর-যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে লালন পালন করছে একাধিক পরিবার। তারা মানবশিশু নয় বরং পুতুলকেই ‘দত্তক’ সন্তান হিসেবে লালন পালন করছেন।

সিলিকন দিয়ে তৈরি করা হয় পুতুলগুলো
ইরানের কিছু পরিবারে দত্তক সন্তান হিসেবে মানবশিশু নয় বরং মানুষের মতো দেখতে পুতুলের চাহিদা বেড়েছে।

মানবসদৃশ এই পুতুলগুলো হয়ে উঠছে ওইসব পরিবারের আনন্দের নতুন উৎস। মানবশিশুর মতোই আদর-স্নেহ জুটছে ওদের কপালে! 

পুতুলগুলো পেয়ে শিশুরাও খুশি

আরও বেশি সন্তান থাকলে ভালো হতো- এমন অনুভবকারী কিছু ইরানি পরিবারের জন্য হাইপার-রিয়েলিস্টিক বেবি ডল বানান ২৪ বছর বয়সী মরিয়ম আগায়ি। 

তিনি জানান, কাজটি আমি তিন-চার মাস হলো, শুরু করেছি। দ্বিতীয় পুতুলটি বানানোর পর একের পর এক অর্ডার পাচ্ছি। 

শিশুরা এই পুতুল ভাই-বোন পেয়েই খুশি

দ্বিতীয়টি প্রথম পুতুলের চেয়ে অনেক বেশি বাস্তবানুগ ছিল। সেটি বানানোর পর বলেছিলাম, এখন থেকে খদ্দেরদের কাছ থেকে অর্ডার নিতে পারব।

শুরুতে এটিকে ব্যবসা হিসেবে ভাবিনি। কেননা পুতুল তৈরি করা আমার শখ। তবে দ্বিতীয় পুতুলের পরে এ ধরনের পুতুলের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। খদ্দেররা এমন পুতুল চান।

যে মা সন্তান হারিয়েছেন, তার শোক লাঘবে এই পুতুলের ব্যবহার সম্ভব। কিংবা মোজাগন জাবিপুরের বেলায় যেমনটা ঘটেছে, নিজের ৫ বছর বয়সী মেয়েকে সঙ্গ দিতে এমন পুতুল ঘরে এনেছেন তিনি।

অনেক পরিবারই এই পুতুলগুলো কিনছেন

জাবিপুরের মেয়ে বারান এই পুতুলের সঙ্গে খেলাধুলা করে। ঘুমোনোর সময় পুতুলটিকে আদর করে জড়িয়ে রাখে সে।

জাবিপুর বলেন, আরেকটা ভাই বা বোনের জন্য বারানের বারবার আকুতি-মিনতির কারণেই পুতুলটি ঘরে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি ও তার স্বামী।

পুতুলটিকে কোলে নিলে একদম মানবশিশু কোলে নেয়ার মতোই অনুভূতি হয়। আজকের দিনে পরিবারগুলো তিন-চারটি সন্তান নেয়ার কথা ভাবতেও পারে না।

সিলিকন শিশুর মুখ সযত্নে রঙিন করেন মরিয়ম। এটিকে পোশাক পরিয়ে দেখতে যতটা সম্ভব সত্যিকারের মানবশিশুর মতো করে তোলার প্রচেষ্টা ছিল মরিয়মের। সেটি তিনি যথেষ্ট ভালোভাবেই পেরেছেন। তাই চাহিদা বেড়েছে তার তৈরি পুতুলের।

যেসব পরিবারে একটাই মাত্র সন্তান, সেই শিশু আরও অন্তত একটি ভাই কিংবা বোনের জন্য স্বভাবতই বাবা-মায়ের কাছে আবদার করে। সেই বাবা-মা সন্তানের অভিযোগ ও প্যানপ্যান থামাতে এই পুতুল ঘরে নিতে চান,' বলেন মরিয়ম।

ইরানে অর্থনৈতিক সংযমের কারণে একাধিক সন্তান নিতে অনিচ্ছুক অনেক পরিবারের কাছে এই পুতুলশিশুর চাহিদা অনেক। খরচ কমাতে ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই অনেক পরিবার একাধিক সন্তান নেন না। 

তবে তারা বুঝতে চান না, পুতুলশিশু কোনোভাবেই প্রকৃত মানবসন্তানের বিকল্প হতে পারবে না, অভিমত মরিয়মের।

রাজধানী তেহরানে, নিজের বাড়িতে পুতুলশিশুর সঙ্গে খেলা করছেন জাবিপুর ও তার সন্তান। একটিমাত্র সন্তান নেয়ার অন্যতম প্রধান কারণ- অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সন্তান গ্রহণের ব্যয়বহুল খরচ, বলেন তিনি।

জাবিপুর আরও বলেন, সামাজিকভাবে এক সন্তানের পরিবারকে এক ধরনের মর্যাদার চোখে দেখা হয়। একাধিক বা বহু সন্তানকে দেখা হয় সেকেলে ব্যাপার হিসেবে। আজকাল তো কোনো পরিবারই তিন-চারটি সন্তান নেয়ার কথা ভাবতে পারে না।

 

সূত্র: রয়টার্স

 

এবিএন/ইমরান/জসিম/এসই 

এই বিভাগের আরো সংবাদ