আজকের শিরোনাম :

বিজয়নগরের ২১৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৫৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই। উপজেলার ২৩৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শহীদ মিনার আছে ১৮টি প্রতিষ্ঠানে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।  আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।

উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০০টি সরকারি প্রাথমিক, একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি কলেজ ও ৭টি মাদ্রাসা রয়েছে।  এ ছাড়া রয়েছে ৯৮টি কিন্ডারগার্টেন।  এর মধ্যে উপজেলার চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে স্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্যোগে মাত্র চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো হলো- উপজেলার আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতবর্গ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাটিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চম্পকনগর মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম কলেজ, ইসলামপুর আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম স্কুল এন্ড কলেজ ছাড়া আর কোনো কলেজে শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়।  কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না বানিয়ে শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়।  আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তাও করা হয় না।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের দাড়িয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিদারাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনামুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভিটিদাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেজামোড়া গ্রামের হুমায়ূন কবীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুধন্তি ইউনিয়নের শেমড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়িয়ল ইউনিয়নের আড়িয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সহদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ লক্ষিমুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শহীদন মিনার নেই। উপজেলার পূর্বচল কলেজেও কোনো শহীদ মিনার দেখা যায়নি।

এছাড়া পাহাড়পুর ইউনিয়নের এম এ গণি আইয়িাল একাডেমী, শাহনেওয়াজ আইডিয়াল একাডেমী, চাইল্ড কেয়ার একাডেমী, শামসুল আলম সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ফোকাস আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন, সানফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন, পাওয়ারসেল কিন্ডার গার্টের, হানিফ অক্সফোর্ড কিন্ডার গার্টেন, শাহজাহান আইডিয়াল একাডেমীতে কোনো শহীদ মিনার নেই।

ভিটিদাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দের অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার তৈরি করা সম্ভব হয়নি।  তবে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দেয় শিক্ষার্থীরা।  তাছাড়া ওই দিনে চিত্রাংকন, রচনা প্রতিযোগিতার পাশাপাশি দোয়ার আয়োজন করা হয়ে থাকে।  

নিদারাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র জুনাঈদ, রবিউল আলম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ইকছাতুল আরেফিন প্রমি বলে, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ইশকুল বন্ধ থাকে।  স্যারেরা কলাগাছ দিয়া শহীদ মিনার বানায়।  আমরা সকালে ওইঠ্যা ফুল দেই।

উপজেলার সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মামুন জানান, উপজেলার চারটি কলেজের মধ্যে তিনটিতে শহীদ মিনার রয়েছে।  আর যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই পর্যায়ক্রমে পরিকল্পনা করে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করা হবে।

এবিএন/এস এম জহিরুল আলম চৌধুরী (টিপু)/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ