আজকের শিরোনাম :

অঢেল সৌদি অর্থ যেভাবে বদলে দিচ্ছে বিশ্বের খেলাধুলার জগৎ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৩, ১৬:৫১

আপনি গলফ খেলা পছন্দ করুন বা না করুন, এ সপ্তাহে বিশ্বের গলফ খেলার জগতে যা ঘটেছে তাকে নাটকীয়, চমকপ্রদ এবং অবিশ্বাস্য বললে কম বলা হয়।

সমালোচকরা বলছেন, সৌদি আরব বিপুল অর্থ ঢেলে পুরো গলফ খেলা পুরোপুরি কিনে নিয়েছে।

টাইম ম্যাগাজিনের ভাষায়, সৌদি আরব যে অর্থ দিয়েছে, সেটা প্রত্যাখ্যান করার মতো সংযম গলফ দেখাতে পারেনি, কারণ যে কোন মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ে এই অর্থের গলার জোর অনেক বেশি।

গলফের জগতে দুটি বড় ট্যুর হচ্ছে পিজিএ ট্যুর এবং ডিপি ওয়ার্ল্ড ট্যুর। তাদের সঙ্গে সৌদি আরবের সরকারী বিনিয়োগ তহবিল বা পিআইএফের যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে, তা অনেকের কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো।

এরা সবাই মিলে এখন বিশ্বে পুরুষদের পেশাদার গলফ টুর্নামেন্ট চালাবে।

পিজিএ এবং ডিপি ওয়ার্ল্ড ট্যুরের পাল্টা গত বছর লিভ ট্যুর বলে যে প্রতিদ্বন্দ্বী গলফ ট্যুর চালু করা হয়েছিল, তার পেছনে ছিল কিন্তু সৌদি তহবিল পিআইএফ।

তখন পিজিএ ট্যুরের আইনজীবীরা এই বলে হৈচৈ শুরু করেছিলেন যে সৌদিরা ‘স্পোর্টসওয়াশের’ চেষ্টা করছে তাদের টাকা ঢেলে। অর্থাৎ খেলাধুলার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের যত অপকর্ম বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ যেসব ঘটনা- সেগুলো আড়াল করে ভাবমূর্তি বাড়াতে চাইছে।

কিন্তু গত বছর যারা ‘স্পোর্টসওয়াশিং’ বলে হৈচৈ করছিল, সেই পিজিএর বড় কর্তারা এখন সৌদি পিআইএফের সঙ্গে সমঝোতা করে সেটিকে ‘অসাধারণ’ চুক্তি বলে বর্ণনা করছেন।

এরকম মন্তব্যের পর পিজিএর কর্তাদের বিরুদ্ধে ‘ভণ্ডামির’ অভিযোগ উঠেছে।

তবে যে যাই বলুক, সৌদি পেট্রোডলার যে গলফ শুধু নয়, পুরো বিশ্বের খেলাধুলার জগতে বিরাট পালাবদল ঘটিয়ে দিচ্ছে, তা নিয়ে আর সন্দেহ নেই।

বিশ্বের দুটি ঐতিহ্যবাহী গলফ সিরিজ নিয়ে সৌদি পিআইএফের সঙ্গে চমক লাগানো চুক্তিটি তার একটি বড় উদাহরণ।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে দেশটি এখন শত শত কোটি ডলার ঢালছে নানা ধরণের খেলাধুলার আয়োজন, স্পন্সরশীপ এবং বিভিন্ন ক্লাব-সংস্থা-প্রতিষ্ঠান কিনে নেয়ার জন্য। খেলাধুলার ব্যাপারে দেশটির আগ্রহ এবং স্বার্থ বেশ সুপ্রতিষ্ঠিত।

প্রথমে তারা হাত দিয়েছিল টেনিসে, এরপর বক্সিং। একে একে ফর্মুলা ওয়ান, এবং ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল ফাইনাল সহ আরও অনেক ধরণের ক্রীড়ানুষ্ঠানের স্বাগতিক দেশ হয়েছে তারা।

তারপর তো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব নিউক্যাসেল ইউনাইটেড কিনে নিল পিআইএফ। সৌদি লিগে খেলার জন্য তারা এমনকি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পর্যন্ত ডেকে নিল।

তবে সৌদি আরবের এরকম বিনিয়োগকে যতটাই উচ্চাভিলাষী এবং স্পর্ধা বলে মনে হোক, সাম্প্রতিক সময়ের আগে কিন্তু এ নিয়ে সেরকম প্রশ্ন উঠেনি। এখন মনে হচ্ছে সৌদি আরব কোন কোনো খেলাধুলার পুরোটাই কিনে নিতে চাইছে।

ক্রীড়া জগতে সৌদি আরবের এই অসাধারণ পদক্ষেপ এখন একটা গতি পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এটি যেন এখন অন্য একটি মাত্রায় পৌঁছেছে।

বিশ্বে গলফের দুই বিবদমান শিবির একটা সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসলো আরেকটি চমক লাগানো ঘোষণা। বিশ্বের আরেক কিংবদন্তী ফুটবলার কারিম বেনজেমাও এবার সৌদি পেশাদার লীগে খেলবেন বলে নিশ্চিত করা হলো। পিআইএফ এরই মধ্যে সৌদি আরবের চারটি সেরা দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ফলে তারা যে আরেক দফায় এরকম খেলোয়াড় সংগ্রহে বিপুল অর্থ ব্যয় করবে, তা ধারণাই করা হচ্ছিল।

একটা পর্যায়ে তো এরকম একটা জল্পনা চলছিল যে তার প্রজন্মের সর্বসেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসিও সৌদি লিগে যোগ দেবেন। কিন্তু মেসি তার পরিবর্তে এখন যাচ্ছেন ইন্টার মায়ামিতে। কিন্তু এমন প্রত্যাশা বাড়ছে যে, সৌদি আরব হয়তো ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ হতে চায়, এগুলো এরই প্রস্তুতি। যদিও এ রকম হলে সেটা নিয়ে বিরাট বিতর্ক তৈরি হবে।

মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার যারা, তারা বিশ্বাস করেন সৌদি আরব তাদের ভাবমূর্তি নিয়ে যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো কাটানোর জন্য খেলাধুলার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাচ্ছে, তারা একে বলছেন ‘স্পোর্টসওয়াশ।’ নারী অধিকার লঙ্ঘন, সমকামিতাকে অপরাধ বলে গণ্য করা, মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ, মৃত্যুদণ্ডের বিধান, সাংবাদিক জামাল খাশোগজীকে হত্যা এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে ইন্ধন- ইত্যাদি নানা কারণে সৌদি আরব ব্যাপকভাবে বিতর্কিত এবং সমালোচিত।

‘গলফ খেলার যারা ভক্ত এবং যারা ধারাভাষ্যকার, তারা হয়তো এই ঘটনায় অবাক হয়েছেন। কিন্তু সৌদি আরব যে এরকম ‘স্পোর্টসওয়াশিং’ এর পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা কিন্তু তার আরও একটি প্রমাণ’, বলছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ফেলিক্স জেকেন্স।

‘তারা এক বিশাল ক্রীড়া শক্তি হতে চায়, এটা সেই বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ। আর এর আসল লক্ষ্য হচ্ছে দেশটির ভয়ংকর মানবাধিকার পরিস্থিতি থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া’, বলছেন তিনি।

দেশটির বেশ কিছু বহুল আলোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা মারাত্মকভাবে সমালোচিত হয়েছে। এর মধ্যে একদিনে ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা, লিডস ইউনিভার্সিটির ছাত্রী সালমা আল-শিহাবকে সরকারের সমালোচনামূলক টুইট করার দায়ে ৩৪ কারাদণ্ড দেয়া এ রকম অনেক ঘটনা আছে।

তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এই সমালোচনাকে অন্যায্য এবং ভণ্ডামি বলে প্রত্যাখ্যান করে। সৌদি আরবের শাসক এখন ‘ভিশন ২০৩০’ বলে যে মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন, খেলাধুলা সেটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ- এমনটাই দাবি করেন সৌদি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, এর লক্ষ্য হচ্ছে সৌদি আরবের মানুষকে শারীরিকভাবে আরও সক্রিয় করা, পর্যটন বাড়ানো এবং অর্থনীতির বহুমুখীকরণ, যাতে করে জ্বালানি-তেল পরবর্তী বিশ্বের জন্য দেশকে প্রস্তুত করা যায়।

খেলাধুলায় সৌদি আরবের এই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক দ্বন্দ্বেরও একটি বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করা হয়। সৌদি আরব এখন উপসাগরীয় দেশ ইউএই এবং কাতারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে প্রমাণ করতে চাইছে, তারাই উপসাগরীয় অঞ্চলের খেলাধুলার মূল কেন্দ্র।

ইয়াসির আল-রুমাইয়ান হচ্ছেন পিআইএফের গভর্নর, তিনি একই সঙ্গে আবার নিউক্যাসেল ইউনাইটেড এবং গলফের দুটি সিরিজ একত্রিত করে গঠিত নতুন সংস্থার চেয়ারম্যান। গতবছর যখন গলফের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি সিরিজ লিভ এর উদ্বোধন করা হয়েছিল, তখন আমি তার সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে বলেছিলেন, স্পোর্টসওয়াশিং কথাটি তিনি কখনো শোনেন নি।

তবে যারা সৌদি আরবের সমর্থক, তারা পশ্চিমা দেশগুলো এই দেশের সঙ্গে যে ব্যবসা-বাণিজ্য করে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তারা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলো যখন কীনা সৌদি আরবের কাছে শত শত কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করছে, তখন গলফ খেলার সঙ্গে জড়িতরা কেন সৌদি আরবের অভূতপূর্ব বিনিয়োগ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেবে?

কেউ কেউ আবার বলার চেষ্টা করেন, খেলাধুলায় সৌদি আরব কোন বিনিয়োগ করলে তা নিয়ে যেরকম আলোচনা হয়, সেটি নিয়ে যেরকম জবাবদিহি করা হয়, সেটা হয়তো দেশটিতে কিছু কিছু সংস্কারের অবদান রেখেছে। যেমন সৌদি আরব সম্প্রতি নারী ফুটবলের উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করেছে। এমনকি ফিফাও এর প্রশংসা করেছে এই বলে যে ফুটবল দেশটিকে ‘বৃহত্তর সামাজিক পরিবর্তনে’ উদ্দীপনা জুগিয়েছে। আর যেখানে চীন অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করেছে, রাশিয়া এবং কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক দেশ ছিল, সেখানে কেবল সৌদি আরবই তো একমাত্র দেশ নয়, যাদের মানবাধিকার নিয়ে সমস্যা আছে।

তবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, খেলাধুলার জগতের কর্তাব্যক্তিদের জন্য সৌদি আরবের বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো এক বড় চ্যালেঞ্জ, আবার এটি একটা বড় সুযোগও বটে।

পিজিএ ট্যুর এর প্রধান জে মনাহানের কথা ধরা যাক। পিআইএফের সঙ্গে পিজিএর একীভূতকরণকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, এটি গলফের জনপ্রিয়তা বাড়াবে, গলফকে ঐক্যবদ্ধ করবে। কিন্তু তার বিশ্বাসযোগ্যতা এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। কারণ নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসবাদী হামলার শিকার ব্যক্তি এবং পরিবারের একটি গ্রুপ বলেছে, ‘নিজেদের ভণ্ডামি এবং লোভের জন্য তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত।’

মনাহান এর আগে পিজিএ ট্যুর ছেড়ে যখন গলফের নামী খেলোয়াড়রা প্রতিদ্বন্দ্বী লিভ এ যাচ্ছিলেন, তখন এই সন্ত্রাসবাদী হামলার কথা টেনে সমালোচনা করেছিলেন। খেলোয়াড়দের এক বৈঠকে তীব্র বাক-বিতণ্ডার মধ্যে অনেকে তার পদত্যাগের দাবি জানান। বিশেষ করে যারা লিভ এ যাওয়ার হাতছানি উপেক্ষা করে পিজিএ ট্যুরে থেকে গিয়েছিলেন, তারা মনে করছেন, তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।

ফুটবল কর্তৃপক্ষও এখন একই ধরনের চাপের মধ্যে আছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড মাস্টার্সকে সম্প্রতি এমপিরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, নিউক্যাসেল ইউনাইটেড যে সৌদি আরবের পিআইএফ কিনে নিয়েছে, সেই চুক্তি অনুমোদনের বিষয়টি তারা পুনর্বিবেচনা করবেন কিনা। রিচার্ড মাস্টার্স এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। এই ক্লাবের ওপর সৌদি আরব সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না বলে নাকি একটা নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল, যার আইনগত বাধ্যবাধকতাও থাকবে। কিন্তু সম্প্রতি এ নিয়ে আবার সংশয় তৈরি হয়।

এদিকে নারী বিশ্বকাপ ফুটবলে সৌদি আরবের পর্যটন সংস্থা ‘ভিজিট সৌদি’ স্পন্সর হবে বলে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ফিফাকে সেটা বাদ দিতে হয়েছে। কারণ এই টুর্নামেন্টের দুই স্বাগতিক দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড- এবং তাদের খেলোয়াড়রা সবাই এর বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল।

ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্টিনো বলেছেন, এই সমালোচনার মধ্যে তিনি ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ বা ভণ্ডামির গন্ধ পাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়া সৌদি আরবের সঙ্গে যে ব্যবসা-বাণিজ্য চালায় তার প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলও একই ধরণের সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের এক পার্টনারশিপ করার পর। উদ্বেগ তৈরি হয় পেট্রোলিয়াম শিল্পের সঙ্গে খেলাধুলার একধরণের সম্পর্কের ব্যাপারে।

আইসিসি বলেছিল, এই চুক্তির ফলে সংস্থাটি আরও বেশি আত্মনির্ভর হবে। কিন্তু এবার সমালোচকরা অভিযোগ তোলেন যে ক্রিকেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘গ্রিনওয়াশিং’ এর জন্য, অর্থাৎ পরিবেশের ক্ষতি করছে এমন কোম্পানি খেলাধুলায় যুক্ত হয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি বাড়াতে চাইছে।

এসব বিতর্ক সত্ত্বেও বিশ্বের খেলাধুলার জগত এখন কোন দিকে যাচ্ছে তা পরিষ্কার। তারা মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রো-ডলারের পেছনে ছুটছে।

গলফের এই নতুন যুগের ঘোষণাটা এলো এমন এক সময়ে, যখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জেতার চেষ্টা করছে। এটি জিতলে তারা একই বছরে তিনটি সেরা ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতবে, যা কিনা ক্লাবের মালিক আবুধাবির শেখ মানসুরের বহুদিনের স্বপ্ন এবং ১৫ বছরের এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ।

অন্যদিকে কাতারের মালিকানাধীন পিএসজি ১১ বারের মতো ফ্রান্সে লিগ-ওয়ান শিরোপা জিতেছে। অন্যদিকে কাতারের আরেক ধনকুবের ব্যাংকার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিনে নেয়ার জন্য আরও একবার চেষ্টা চালিয়েছেন।

সৌদি আরব খেলাধুলার জগতে যে বিপুল অর্থ ঢালছে তা আসলে একটি বৃহত্তর প্রবণতার অংশ। এর ফলে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে: এরপর কী? এবছরের শুরুতে পিআইএফ নাকি বিল বিলিওন ডলার (দুই হাজার কোটি ডলার) দিয়ে পুরো ফর্মুলা ওয়ান কিনে নেয়ার কথা বিবেচনা করছিল। টেনিসের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পরিকল্পনা চলছে বলে গুজব আছে ।

এই ডিসেম্বরে সৌদি আরবে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ হতে যাচ্ছে- এই প্রথম ফিফার বড় কোন ইভেন্ট হতে যাচ্ছে দেশটিতে। একটি নতুন আফ্রিকান সুপার লীগের স্পন্সর হওয়ার জন্য একটি বড় চুক্তি হতে যাচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। আগামী কয়েক বছরে সৌদি আরব এশিয়ান কাপ ফুটবল এবং ২০২৯ সালের এশিয়ান উইন্টার গেমসেরও আয়োজন করবে।

সৌদি আরবের বিপুল ধন-সম্পদ এবং উচ্চাভিলাষ বিশ্বের খেলাধুলাকে এমনভাবে বদলে দিচ্ছে, যা কেউ কখনো কল্পনা করেনি। এর ফলে যারা খেলাধুলার জগতের দায়িত্বে, তাদেরকে এমন সব কঠিন প্রশ্ন এবং চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে, যা আগে তাদের হতে হয়নি।
সূত্র : বিবিসি

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ