আজকের শিরোনাম :

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

বিজয় দিবসের দেড় মাস পর যেভাবে মুক্ত হয়েছিল মিরপুর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৫৪

১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের একেবারে শেষ দিকের ঘটনা এটি। বাংলাদেশর মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানী এবং একেএম শফিউল্লাহ এক দিন দুপুরে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান।

সেখানে তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়ন অবস্থান করছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন মইনুল হোসেন চৌধুরী।

তিনি পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল হিসেবে সামরিক বাহিনী থেকে অবসরগ্রহণ করেন এবং ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

প্রয়াত মেজর জেনারেল (অব.) মইনুল হোসেন চৌধুরী তার ‘এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য : স্বাধীনতার প্রথম দশক’ বইতে তিনি বর্ণনা করেন, ‘ওসমানী আমাকে বলেন, বিহারী, রাজাকার ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী মিরপুর ১২ নং সেকশনে যাবে।পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগীদের একটা লিস্টও তারা তৈরি করেছে। তিনি পুলিশকে সৈন্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন।’

জেনারেল ওসমানীর আদেশ পেয়ে, তৎকালীন ক্যাপ্টেন হেলাল মোর্শেদের (পরে মেজর জেনারেল এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে সৈন্যদের মিরপুরে পাঠানো হয়।

ঢাকার বাসিন্দারা তখন বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হলেও শহরের উপকণ্ঠে মিরপুর তখনো ‘স্বাধীন’ হয়নি।

বিষয়টি তখন এ রকম ছিল যে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই সেটিকে স্বাধীন বাংলাদেশে ‘এক টুকরো পাকিস্তান’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৫ দিন পরে ঢাকার উপকণ্ঠে মিরপুর ‘শত্রু মুক্ত’ হয়েছিল তীব্র এক যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে।

বিহারীদের সাথে সে যুদ্ধে ৪৮ জন সেনা সদস্য এবং ৫৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়।

মিরপুর মুক্ত হতে দেরি হলো কেন?
ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় বিহারী এবং উর্দুভাষী মানুষ বেশি বসবাস করত। এদের মধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকতো উর্দুভাষীদের শিক্ষিত, বড় ব্যবসায়ী এবং চাকরিজীবী শ্রেণি। অপরদিকে মিরপুরে বসবাস করত উর্দুভাষীদের মধ্যে যারা শ্রমিক শ্রেণির।

ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুর ছাড়াও দেশের আরও কয়েকটি জায়গায় উর্দুভাষী জনগণের বসবাস ছিল। এর মধ্যে রয়েছে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর, খুলনার খালিশপুর, চট্টগ্রামের হালিশহর ও পাহাড়তলি।

১৯৪৭ সালে ভারত থেকে পাকিস্তানে আসা বিহারী মুসলমানদের জন্য মিরপুরের আবাসিক এলাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইব্রাহিম তার ‘সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে আটাশ বছর’ বইতে লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে উর্দুভাষী বিহারী মুসলমানরা বিনা দ্বিধাতেই পাকিস্তানকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের অনেক যুবক রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়। বিশেষ করে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে পাক কর্তৃপক্ষ তাদের মধ্যে প্রচুর অস্ত্র বিতরণ করে।’

কিন্তু যুদ্ধ যতো শেষের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল বিহারীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছিল। যুদ্ধ পরবর্তী ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে উঠে বিহারীরা।

ইব্রাহিম তাঁর বইতে উল্লেখ করেন, ‘তাদের উপর মুক্তি বাহিনীর পক্ষ থেকে যদি কোন আক্রমণ আসে তা থেকে বাঁচার জন্য নিজেদের সশস্ত্র ও সংগঠিত করে তোলে।’

প্রয়াত মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরীর ভাষ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের সময় বাঙালি ইপিআর, আর্মড পুলিশ এবং পুলিশ সদস্যরা পাকিস্তানী বাহিনীর আক্রমণে নিহত কিংবা পালিয়ে যুদ্ধে যোগ দেবার কারণে প্রায় ২০ হাজার বিহারীকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে সিভিল আর্মড ফোর্স গঠন করা হয়।

এ ছাড়া ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও বিহারীদের নিয়ে গঠিত সিভিল আর্মড ফোর্স আত্মসমর্পণ করেনি। উপরন্তু তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিরপুরে আশ্রয় নেয়।

এ ছাড়া পাকিস্তানি বাহিনী যখন পিছু হটছিল তখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী বিহারীরা মিরপুর এবং মোহাম্মদপুর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন জেনারেল মইনুল হোসেন।

স্বাভাবকিভাবেই মিরপুর হয়ে ওঠে বিহারীদের শক্ত ঘাটি।

মিরপুর অভিযান ও ভারতীয় বাহিনী
১৬ ডিসেম্বর থেকেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় বাহিনী। ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিহার রেজিমেন্টের।

তখন মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে ভারতীয় বাহিনীর ১০০০ সৈন্য ছিল, যারা ১০ বিহার রেজিমেন্ট হিসেবে পরিচিত ছিল।

ভারতীয় বিহার রেজিমেন্টের সৈনিকদের সঙ্গে বিহারীদের ভাষা ও সংস্কৃতির মিল ছিল।

এ দুটো জায়গায় ভারতীয় বাহিনীর অবস্থান থাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিংবা গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা এসব জায়গা নিয়ে মাথা ঘামায়নি।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটা নাগাদ ঢাকা শহরে ঢোকেন মোখলেসুর রহমান।

তখন তিনি ২য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য, যিনি পরবর্তীতে ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নেয়া হচ্ছিল। কিন্তু টাঙ্গাইলে কাদের সিদ্দিকীর কাছ থেকে তখনো অস্ত্র জমা হয়নি।

১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি অর্থাৎ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার এক মাস পরে কাদের সিদ্দিকীর কাছ থেকে অস্ত্র জমা নিয়ে পাঠানো হয় একটি দলকে।

‘আমরা অর্ডার পাইলাম টাঙ্গাইল যাওয়ার জন্য। কাদের সিদ্দিকীর কাছে গেলাম। তখন কাদের সিদ্দিকী বললো, আমরা বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য কারো কাছে অস্ত্র জমা দেব না,’ বলেন মোখলেসুর রহমান।

‘তখন কাদের সিদ্দিকী বললেন যে মিরপুর এবং মোহাম্মদপুরে বিহারীরা কোনো অস্ত্র জমা দেয় নাই। সে অস্ত্র আপনার রিকভার করেন, তারপর আমাকে স্মরণ কইরেন।’

সিদ্দিকী এ কথা বলার পর সবার নজর গেল মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের দিকে।

তখন বিষয়টা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে জানানো হলো।

মোখলেসুর রহমানের বর্ণনা অনুযায়ী, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২৪ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান নির্দেশ দেন যে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের সমন্বয়ে একটি দল গিয়ে মিরপুরে অস্ত্র জমা নেবে।

সে সময় সবাই ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ২৬ জানুয়ারি ঈদ থাকায় ২৭ জানুয়ারি মিরপুরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ জানুয়ারি বিকেলে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং পুলিশ সদস্যরা মিরপুরের প্রবেশ মুখে অবস্থান নেয়। এরপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট।

মিরপুরের যেসব জায়গায় ভারতীয় সৈন্যরা ছিল সেসব জায়গা পরিদর্শন করে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যরা।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের অনুরোধে ভারতীর সৈন্যরা সেখান থেকে সরে আসেন। তখন মিরপুরের দায়িত্ব নেয় দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট।

মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘বিহার রেজিমেন্টকে ধোকা দিয়ে রাখছে বিহারীরা। যেহেতু একই ভাষার লোক। তাদেরকে ভুলায়া রাখছে।’

তিনি বলেন, মিরপুরের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে আঁচ করতে পারেনি ভারতীয় সৈন্যরা।

‘তারা (ভারতীয় বাহিনী) আমাদেরকেও ভুল ইনফরমেশন দিছে। আমরা যখন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি তখন তারা বলছে যে দুই-চারটা অস্ত্র থাকতে পারে, রাতে গোলাগুলির আওয়াজ হয় প্রতিদিনই। সেটা ব্যাপক নয়। আপনারা চাইলেই তারা অস্ত্র দিয়ে দেবে।’

মিরপুর অভিযান ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান
জহির রায়হান ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সুপরিচিত চলচ্চিত্র পরিচালক। বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের মাত্র দুই দিন আগে জহির রায়হানের ভাই সাংবাদিক শহিদুল্লাহ কায়সারকে ঢাকার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী।

জহির রায়হানের বিশ্বাস ছিল তার ভাই শহিদুল্লাহ কায়সারের খোঁজ হয়তো মিরপুরে পাওয়া যাবে।

সেজন্য ১৬ ডিসেম্বরের পরে জহির রায়হান মিরপুরে যেতে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের শরণাপন্ন হন। তখন সেখানে উপস্থিত হন চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান।

মোখলেসুর রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ আরো তিনজন সহযোগী নিয়ে জহির রায়হান সেখানে উপস্থিত হন।

‘জহির রায়হান আমাদের বললো যে শহিদুল্লাহ কায়সার মিরপুরে আছে। তাকে খুঁজতে আমরা আপনাদের সাথে যাব,’ বিবিসিকে বলছিলেন মোখলেসুর রহমান।

তখন দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল মিরপুরের প্রবেশদ্বার টেকনিক্যাল নামক জায়গায়। এটি কল্যাণপুর পার হয়ে মিরপুরে ঢোকার মুখে।

দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের তরফ থেকে শুধু জহির রায়হানকে তাদের সাথে নিতে সম্মত হয়। বাকিদের ফেরত পাঠানো হয়।

তখন ঢাকার পুলিশ সুপার জিয়াউল হক লোদির গাড়িতে চড়েন জহির রায়হান। মিরপুর অভিযানে লোদিও নিহত হন।

মোখলেসুর রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী, ৩০ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে বিহারীরা যখন অতর্কিতে গুলি চালানো শুরু করে তখন গুলিতে জহির রায়হান নিহত হন।

মোখলেসুর রহমান বলেন, মিরপুর ১২নং পানির ট্যাংকের কাছে তিনি জহির রায়হানের গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। একই ভাষ্য পাওয়া যায় মিরপুর অভিযানের নেতৃত্বে থাকা মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বই থেকে।

তিনি লিখেছেন, ‘প্রাথমিক তদন্তের সময় সাড়ে ১১ নং সেকশনে মোতায়েন সৈন্যদের কয়েকজন জানান, সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দশটার দিকে তাঁরা হালকা-পাতলা গড়নের একজন বেসামরিক লোককে সাড়ে ১১ এবং ১২ নং সেকশনের মাঝামাঝি রাস্তায় হাঁটতে দেখেন জহির রায়হানের ছবি দেখার পর সৈন্যদের কয়েকজন ওই রকম গড়নের একজনকে সেখানে দেখেন বলেও জানান।’

জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী ভাষ্যমতে, বিহারীদের অতর্কিত আক্রমণে জহির রায়হানও নিহত হন। তবে ঠিক কোন জায়গায় নিহত হয়েছেন সেটি কখন কেউ বলতে পারেনি বলে তিনি লিখেছেন।

জেনারেল চৌধুরীর ভাষ্যে বলা হয়, নিহত ৪২ জন সেনা সদস্যদের মধ্যে তিন-চারজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। জহির রায়হানসহ বাকি কারো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। ৩০শে জানুয়ারি রাতেই সম্ভবত বিহারীরা সেগুলো সরিয়ে ফেলে।

বিহারীদের তীব্র প্রতিরোধ
২৯ জানুয়ারি মিরপুরে কারফিউ জারি করা হয়। দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট যখন মিরপুর অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখনো তারা ধারণা করতে পারেননি যে তাদের সামনে কতটা কঠিন প্রতিরোধ অপেক্ষা করছে। সকাল সাতটায় সেনাবাহিনী ওপুলিশ অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নেয়।

পুলিশ ও সেনাসদস্যরা মিরপুর ১২ নম্বর পানির ট্যাংক এলাকায় অবস্থান নেন। সে অভিযানে অংশ নেয় দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ৮৬ জন সৈন্য এবং ৬৩ জন পুলিশ সদস্য।

সে অভিযানে অংশ নেয়া সেনাসদস্য মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘আমরা ওখানে গিয়ে পজিশন নিলাম। পুলিশ মাইকিং করে বললো, যাদের কাছে অস্ত্র আছে জমা দাও।’

বিহারী এলাকা নিরস্ত্র করার জন্য অভিযান হতে পারে, এমন আশঙ্কার কারণে সেখানকার প্রতিটি ঘরের দেয়ালে ছিদ্র করে অস্ত্র তাক করে রাখে বিহারীরা।

বেলা ১১টার দিকে আকস্মিকভাবে একযোগে গুলি আসতে থাকে বিহারীদের বাড়ি থেকে।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যায় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।

কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনা ও পুলিশ সদস্যদের যোগাযোগের জন্য ওয়্যারল্যাস সিস্টেম ধ্বংস করে ফেলে বিহারীরা।

‘আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল এবং আমাদের কমান্ড লেবেলের বেশিরভাগ আহত নিহত হয়ে গেলেন।’

সেনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর বিহারীরা এমনভাবে চাড়াও হলো যে পরিস্থিতি মোকাবেলা তাদের জন্য কঠিন হয়ে গেল।

৩০ জানুয়ারি বেলা এগারোটা থেকে শুরু করে ৩১ জানুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত একটানা গোলাগুলি চলে। এ সময় তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে বিহারীরা।

সন্ধ্যার পর থেকে শক্তি বৃদ্ধি করে সেনাবাহিনী। এ সময় তারা মর্টার ও আর্টিলারি ব্যবহার করে বলে জানান মোখলেসুর রহমান।

মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘৩১ তারিখ একটা ভয়াবহ যুদ্ধ হইছে যেটা অকল্পনীয়। নয় মাসের যুদ্ধে এটা আমরা কখনো ফেস করি নাই কোথাও।’

তীব্র যুদ্ধের পর ৩১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আত্মসমর্পণ করে বিহারীরা। সেদিন ১১ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বিহারী-অধ্যুষিত এলাকা থেকে।

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ