কৃষি : প্রথমবারের মতো রপ্তানি করা হবে রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আম

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২, ১৩:৫৭

জাতীয়ভাবে পরিচিতি পাওয়ার পর এখন দেশের বাইরে হাড়িভাঙ্গা আম রপ্তানির প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই আমটি মূলত উত্তরের জেলা রংপুরে আবাদ হয়।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে রংপুরে এ বছর ১,৮৮৭ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আম চাষ করা হয়েছে।
ফলন আশা করা হচ্ছে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৬ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে ৩০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করছেন কর্মকর্তার। যেটার বাজার মূল্য ধরা হয়েছে দেড়শ থেকে ২০০ কোটি টাকা।
কোন কোন দেশে রপ্তানি হতে পারে?
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, হাড়িভাঙ্গা আম রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পাঁচটি দেশে- ভারত, ভুটান, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে। সরকারিভাবে জুনের ২০ তারিখে এই হাড়িভাঙ্গা আম পাড়ার কথা বলা হয়েছে। এরপর জুলাই মাস থেকে আম রপ্তানি করা হতে পারে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মাহবুবার রহমান বলেন, ‘মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে এই আমটি রপ্তানি হবে প্রথমবারের মতো। গত বছর প্রধানমন্ত্রী ভারতে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু এই বছর প্রথমবারের মতো রপ্তানি করা হবে।’ হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন হচ্ছে প্রায় ৩০ বছর ধরে। কিন্তু এই আমের তেমন একটা পরিচিতি ছিল না। মাহবুবার রহমান বলেন, ‘এই আমটা লোকালি পরিচিত ছিল কিন্তু জাতীয়ভাবে পরিচিত ছিল না। ২০১৫ সালে ঢাকায় ফল মেলা হলে সেখানে এই আমের পরিচিতি পায়। তখন মানুষ জানলো যে হাড়িভাঙ্গা আমটা রংপুরের বিখ্যাত আম।’ হাড়িভাঙ্গা আমের বৈশিষ্ট্য
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে হাড়িভাঙ্গা আম গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা ঊর্ধ্বমুখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশি বিস্তৃত হতে দেখা যায় । ফলে উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়ে না এবং আমও কম ঝড়ে পড়ে । আমটির উপরিভাগ বেশি মোটা ও চওড়া, নিচের অংশ অপেক্ষাকৃত চিকন। আমটি দেখতে সুঠাম ও মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা । আমের তুলনায় শ্বাস অনেক ছোট, ভিতরে আঁশ নেই । আকারের তুলনায় অন্য আমের চেয়ে ওজনে বেশী, গড়ে ৩টি আমে ১ কেজি হয় । কোন কোন ক্ষেত্রে একটি আম ৫০০-৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে । পুষ্ট আম বেশি দিন অটুট থাকে। চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না । ছোট থেকে পাকা পর্যন্ত একেক স্তরে একেক স্বাদ পাওয়া যায়। তবে আমটি খুব বেশি না পাকানোই ভালো। >> ফুল আসার সময়- মাঘ-ফাল্গুন।
>> পাকার সময়- আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
>> ফলের গড় ওজন- ২০০-৩৫০ গ্রাম।
>> কর্তনের পর কতদিন মজুদ সম্ভব- প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ ২-৩ দিনের বেফশ নয়।
>> হেঃ প্রতি উৎপাদন খরচ- ৩৫০০০/- - ৪০০০০/-(স্থাপনা খরচ বাদে)
>> গড় বাজারদর- ৪০ থেকে ৬০টাকা প্রতি কেজি।
>> হেঃ প্রতি আয়- ৫,৫০,০০০/- টাকা। দেশে কত আম উৎপাদন হয়?
বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত ৮ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৬ মেট্রিক টন আমের বেশির ভাগই দেশের ক্রেতারা ক্রয় করে থাকেন। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সীমিত পরিমাণে আম বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ল্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর এবং আশ্বিনা জাতের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। বারি আম-২ এবং বারি আম-৭ বিদেশে রপ্তানির জন্য সম্ভাবনাময় জাত। তাছাড়া ২০১৫ সাল থেকে ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতী ও বারি আম-৩ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্টের চাহিদার তালিকায় রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আম আমদানিকারক দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, সৌদিআরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমান। তবে উল্লিখিত দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরাই প্রধানত সব আমের প্রধান ক্রেতা। আম রপ্তানির সম্ভাবনা
বাংলাদেশের মাটি, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থান উপযোগী হওয়ায় এবং শ্রমিকের সহজলভ্যতা থাকায় গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট আম উৎপাদন সম্ভব বলে কৃষিবিদরা বলছেন। এ কারণে বর্তমানে বিদেশে আম রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জমির উদ্দিন বলেছেন বিদেশে আম রপ্তানি জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশীয় আম বাগান পরিদর্শন করানোর প্রয়োজন। এ ছাড়া বাংলাদেশি আমকে বিদেশে সম্প্রসারণ করার জন্য সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং আম রপ্তানির জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করার দিকে গুরুত্ব দেয়ার কথা তিনি বলেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি এবিএন/এসএ/জসিম
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, হাড়িভাঙ্গা আম রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পাঁচটি দেশে- ভারত, ভুটান, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে। সরকারিভাবে জুনের ২০ তারিখে এই হাড়িভাঙ্গা আম পাড়ার কথা বলা হয়েছে। এরপর জুলাই মাস থেকে আম রপ্তানি করা হতে পারে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মাহবুবার রহমান বলেন, ‘মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে এই আমটি রপ্তানি হবে প্রথমবারের মতো। গত বছর প্রধানমন্ত্রী ভারতে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু এই বছর প্রথমবারের মতো রপ্তানি করা হবে।’ হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন হচ্ছে প্রায় ৩০ বছর ধরে। কিন্তু এই আমের তেমন একটা পরিচিতি ছিল না। মাহবুবার রহমান বলেন, ‘এই আমটা লোকালি পরিচিত ছিল কিন্তু জাতীয়ভাবে পরিচিত ছিল না। ২০১৫ সালে ঢাকায় ফল মেলা হলে সেখানে এই আমের পরিচিতি পায়। তখন মানুষ জানলো যে হাড়িভাঙ্গা আমটা রংপুরের বিখ্যাত আম।’ হাড়িভাঙ্গা আমের বৈশিষ্ট্য
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে হাড়িভাঙ্গা আম গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা ঊর্ধ্বমুখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশি বিস্তৃত হতে দেখা যায় । ফলে উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়ে না এবং আমও কম ঝড়ে পড়ে । আমটির উপরিভাগ বেশি মোটা ও চওড়া, নিচের অংশ অপেক্ষাকৃত চিকন। আমটি দেখতে সুঠাম ও মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা । আমের তুলনায় শ্বাস অনেক ছোট, ভিতরে আঁশ নেই । আকারের তুলনায় অন্য আমের চেয়ে ওজনে বেশী, গড়ে ৩টি আমে ১ কেজি হয় । কোন কোন ক্ষেত্রে একটি আম ৫০০-৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে । পুষ্ট আম বেশি দিন অটুট থাকে। চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না । ছোট থেকে পাকা পর্যন্ত একেক স্তরে একেক স্বাদ পাওয়া যায়। তবে আমটি খুব বেশি না পাকানোই ভালো। >> ফুল আসার সময়- মাঘ-ফাল্গুন।
>> পাকার সময়- আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
>> ফলের গড় ওজন- ২০০-৩৫০ গ্রাম।
>> কর্তনের পর কতদিন মজুদ সম্ভব- প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ ২-৩ দিনের বেফশ নয়।
>> হেঃ প্রতি উৎপাদন খরচ- ৩৫০০০/- - ৪০০০০/-(স্থাপনা খরচ বাদে)
>> গড় বাজারদর- ৪০ থেকে ৬০টাকা প্রতি কেজি।
>> হেঃ প্রতি আয়- ৫,৫০,০০০/- টাকা। দেশে কত আম উৎপাদন হয়?
বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত ৮ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৬ মেট্রিক টন আমের বেশির ভাগই দেশের ক্রেতারা ক্রয় করে থাকেন। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সীমিত পরিমাণে আম বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ল্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর এবং আশ্বিনা জাতের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। বারি আম-২ এবং বারি আম-৭ বিদেশে রপ্তানির জন্য সম্ভাবনাময় জাত। তাছাড়া ২০১৫ সাল থেকে ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতী ও বারি আম-৩ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্টের চাহিদার তালিকায় রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আম আমদানিকারক দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, সৌদিআরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমান। তবে উল্লিখিত দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরাই প্রধানত সব আমের প্রধান ক্রেতা। আম রপ্তানির সম্ভাবনা
বাংলাদেশের মাটি, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থান উপযোগী হওয়ায় এবং শ্রমিকের সহজলভ্যতা থাকায় গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট আম উৎপাদন সম্ভব বলে কৃষিবিদরা বলছেন। এ কারণে বর্তমানে বিদেশে আম রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জমির উদ্দিন বলেছেন বিদেশে আম রপ্তানি জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশীয় আম বাগান পরিদর্শন করানোর প্রয়োজন। এ ছাড়া বাংলাদেশি আমকে বিদেশে সম্প্রসারণ করার জন্য সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং আম রপ্তানির জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করার দিকে গুরুত্ব দেয়ার কথা তিনি বলেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি এবিএন/এসএ/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ