বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২২, ১৮:০৪
বাংলাদেশের সবগুলো জেলাই শুধুমাত্র পদ্মা সেতু উদ্বোধনী আমেজে মজেনি, বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতেও জমকালোভাবে এই অনুষ্ঠান উদযাপন করেছে। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস।
শুক্রবার (২৪ জুন) রাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।
তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। এর আগে ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার স্বাগত দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ আহমেদ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশের জন্য বিশাল গৌরবের ব্যাপার। গত কয়েক বছরে দেশের যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু এই খাতকে আরও শক্তিশালী করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়। এজন্য কনস্যুলেটে বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। নিউইয়র্কে বসবাসকারী বীর মুক্তযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে কনস্যুলেটে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসেও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভিয়েতনামে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। অন্যদিকে, এই সেতুর ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। প্রতি বছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু অনন্য অবদান রাখবে।
এদিকে, লেবাননের বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে। শনিবার দূতাবাসের হলরুমে রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান, প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ দূতাবাসের সব কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা টেলিভিশনে পদ্মা সেতুর জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার প্রত্যক্ষ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং পদ্মা সেতুর ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। রাষ্ট্রদূত বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের সবার অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। ঐতিহাসিক পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী সম্পৃক্ত হতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি গর্বের দিন, একটি ঐতিহাসিক দিন। পদ্মা সেতু আমাদের দেশের জন্য একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল, যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করে শেষও করেছেন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী কোটি কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেশের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত করেছেন। এই সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আশার প্রতীক ও তাদের জীবনমান অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদসহ সেতুর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি
এই বিভাগের আরো সংবাদ