আজকের শিরোনাম :

ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী

‘বিএনপির সাথে কথা বলার মতো কিছু নেই’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৩, ১১:৩৭ | আপডেট : ০২ মে ২০২৩, ১১:৪৫

‘বিএনপির সঙ্গে বসলে পোড়া মানুষগুলোর গন্ধ পাই’ এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কাদের সঙ্গে আলোচনা করব? এক তো সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারপর আবার আমার বাবা-মা ও ভাই-বোনদের খুনি, যুদ্ধাপরাধী। তারপরও দেশের স্বার্থে, দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে অনেক উদারতা দেখিয়েছি। এখন আর তাদের সঙ্গে কথা বলার মতো কিছু নেই।’

যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন।

ভয়েস অব আমেরিকার শতরূপা বড়ুয়া এই ভিডিও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।

বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার করার পর সেসব মানুষের পরিবারগুলো যে কষ্ট পাচ্ছে। যারা পুড়েও বেঁচে আছে, তাদের সবার চিকিৎসার ব্যবস্থা আমরা করেছি। পোড়া মানুষগুলোর কষ্ট দেখলে আর ওদের (বিএনপির) সঙ্গে বসতে ইচ্ছে হয় না। মনে হয়, ওদের সঙ্গে বসলে আমি পোড়া মানুষগুলোর গন্ধ পাই।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে বারবার আলোচনা করেছি। আসলে বিএনপি এমন একটি দল যেটি সৃষ্টি করেছে একজন সামরিক শাসক। যে ১৯৭৫ সালে আমার বাবা-মা, ভাই-বোনকে হত্যা করেছে। একজন প্রেসিডেন্টকে হত্যা করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘একজন সেনাপ্রধান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে চেয়ারে বসল। বসে হ্যাঁ-না ভোটের নামে নাটক, সেখানে ‘না’ নয়, সব ‘হ্যাঁ’ ভোটই হয়ে গেল। পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করল। এর পরে গিয়ে রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করল, ক্ষমতায় বসে থেকে।’

‘এ কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে, অস্ত্র হাতে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতায় বসে থেকে যে রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করা হয়েছে সেটাই হচ্ছে বিএনপি’-বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

১৯৮৯ সালে জিয়াউর রহমানের ‘হ্যাঁ-না’ ভোট প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওই নির্বাচনকে ‘ভোট কারচুপির দৃষ্টান্ত সৃষ্টি’ বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘হ্যাঁ-না ভোট, রাষ্ট্রপতি ভোট এবং জাতীয় সংসদের ভোট। এই যে আমাদের যে ভোট কারচুপির কালচারটা শুরু করল, সেটা কিন্তু বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য।’

র‍্যাবের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের সংস্কারমূলক পদক্ষেপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, জঙ্গিবাদ নির্মূলসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে আমেরিকার পরামর্শেই এই র‍্যাবের সৃষ্টি হয়েছে। র‍্যাবের প্রশিক্ষণ থেকে সবকিছুই আমেরিকার করা।’

‘আমেরিকা কী কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল, তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘র‍্যাবের কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার বিচার হয়। র‍্যাবের কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসি।’

‘এটা অন্য কোনো দেশে নেই, এমনকি আমেরিকাতেও নেই’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই আইনের শাসনটা আমাদের দেশে আছে।’

এসময় মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের একজন প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের জামাই র‍্যাবের সদস্য থাকা অবস্থায় একটি অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল। তাকেও সঙ্গে সঙ্গেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সে শাস্তিও পেয়েছে।

‘দেশে আইনের শাসন বলবৎ রয়েছে’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবকিছু আইনের দৃষ্টিতে দেখি। আবার বিনা অপরাধে কেউ যাতে শাস্তি না পায়, এটাও আমরা দেখি।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ