সেনা হত্যাকাণ্ড সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখবে: প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:০৬ | আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:৪৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৭ সালের সেনা হত্যাকাণ্ড সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। এতদিন এটা নিয়ে তেমন কথা হয়নি। আপনারা এ বিষয়গুলো নিয়ে এখন কথা বলছেন, এটা ভালো।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় গণভবনে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ও ফ্রান্স সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর থেকে প্রকৃতপক্ষে কত মানুষ হত্যা হয়েছে সেটা এখনো জানা নেই। আমি অনেক পরিবারের কাছে গিয়েছি। তাদের সাথে কথা হয়েছে। তাদের আর্তনাদ শুনেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭৭ সালে কারাগারে কত মানুষ হত্যা করা হয় তা এখনো কেউ জানে না। এগুলো নিয়ে কেউ এতদিন কথা বলেনি। এখন আপনারা এটি নিয়ে কথা বলছেন, এটা ভালো। আমি নিজেও তো এ ধরনের ক্যু’র ভুক্তভোগী।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দাবি যেহেতু উঠছে আমি মনে করি এটা নিয়ে কাজ করা উচিত। আপনারা যেহেতু এটি বলছেন, সরকার এটি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর সংঘটিত বিভিন্ন ক্যুতে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান সরাসরি এগুলোতে জড়িত ছিলেন। তার নির্দেশে প্রহসনের বিচারের জন্য সামরিক আদালত বসানো হয়েছিল। কত মানুষ মারা গিয়েছিলেন তার প্রকৃত সংখ্যা বের করা যায়নি।

তিনি বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ভোররাতে বিমানবাহিনীতে সংঘটিত বিদ্রোহ কঠোরভাবে দমন করা হয়েছিল। তখন সামরিক আদালতে ফাঁসি দেওয়া হয় ১১ জন অফিসারসহ এক হাজার ৪৫০ বিমান সেনাকে। বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হন আরও চার হাজার সেনা। নিখোঁজ হন অসংখ্য। সামরিক আদালতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা সম্প্রতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়েছেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় আমার ফুফাত ভাই ফিরোজ কবির চৌধুরী, যিনি ক্যামেরাম্যান ছিলেন, তাকেও হত্যা করা হয়। তাদের হত্যা করে বিলের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। জেলখানায় যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের হয়তো খোঁজ পাব। কিন্তু কত জনকে যে ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়েছে, জানি না। তবে আমরা তাদের বিষয়ে খোঁজ নেব। স্বজন হারানো অসহায়দের অবস্থা আমি জানি। আমিও তো আপনজন হারিয়েছি। ওই সময় নিহত অনেকের পরিবারের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের শাসনামলের এত বছর পর সেই সামরিক আদালত নিয়ে সরব হয়েছেন নাগরিক সমাজ। বিষয়টি তো এতদিন কেউ তুলে ধরেনি। তবুও ধন্যবাদ, এত দিন পর কথা হচ্ছে।

এর আগে, বিকেল চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। এতে তিনি সাম্প্রতিক সফরের বিভিন্ন বিষয় গণমাধ্যমকে অবহিত করছেন।

সংবাদ সম্মেলনটি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করছে।

প্রধানমন্ত্রী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিস সফর করেন। সফরকালে তিনি কপ২৬ সম্মেলন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১, ইউনেস্কো সদর দফতরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম, ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রায় দুই সপ্তাহের সফর শেষে ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ