আজকের শিরোনাম :

জলবায়ু সম্মেলনে ৫ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছি : প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:০৪ | আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:০৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারের কপ সম্মেলনে উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি হচ্ছে বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা প্যারিস চুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়সহ জলবায়ু অর্থায়ন প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করতে একমত হন। বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সকল ধরনের অরণ্য নিধন রোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো, লন্ডন ও ফ্রান্সের প্যারিস সফর নিয়ে আজ বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব নেতৃত্বকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছি।

তিনি বলেন, বিবিসি সম্প্রতি তাদের একটি প্রতিবেদনে আমাকে কপ-২৬ সম্মেলনের ৫ জন শীর্ষ ডিল মেকারদের একজন হিসেবে চিহ্নিত করে। একে আমি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন, আমাদের নৈতিক পররাষ্ট্রনীতির প্রতি বিশ্ববাসীর আস্থা হিসেবে বিবেচনা করে সম্মানিত বোধ করি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি সম্মেলনে প্রধান কার্বন নির্গমণকারী দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য আনুপাতিক হারে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুত অর্থায়ন নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে একযোগে কাজ করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার কথা বলেছেন।

সরকার প্রধান বলেন, বিশ্বের সরকার প্রধানদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছি। সিভিএফ-এর সভাপতি হিসেবে একটি ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট গঠনের প্রয়াসের কথাও তুলে ধরি।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে আলোচনায় দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিধি ও গভীরতা আরও বাড়বে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া বাণিজ্য নীতি, রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

এই বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করে জলবায়ু অভিযোজনে অর্থ ছাড়ের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য রুশনারা আলী ও লর্ড নিতেশ গারিয়ার আমন্ত্রণে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ অ্যাট ৫০, আ রেসিলিয়েন্ট ডেলটা’ শীর্ষক একটি কি-নোট উপস্থাপন করেন বলে জানান।

লন্ডনের প্রকাশনা সংস্থা টেইলর এড ফ্রান্সিস কর্তৃক ইংরেজিতে অনুদিত ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অফ ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ এবং ‘মুজিব অ্যান ইনট্রোডাকশন’ বই দুটির মোড়ক উম্মোচন করেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

এরপর প্রধানমন্ত্রী ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কূটনৈতিক আলাপের প্রসঙ্গে বলেন। প্রতিরক্ষা ও অর্থনীতিসহ অন্যান্য খাতে দুই দেশের কার্যক্রম বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফ্রান্সের ব্যবসায়ীদের একটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে তাদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

ইউনেস্কো সদর দফতরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের প্রেক্ষিতে এই পুরস্কার প্রবর্তন সবচেয়ে উপযুক্ত সম্মান। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।’

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে সরকারি সফরকালে কপ২৬ এ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১, ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম, ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ