আজকের শিরোনাম :

ভিসা নিয়ে মাথাব্যথা নেই, আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না : প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৩, ২০:৪৮

বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা এবং স্যাংশন দেওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব নিয়ে ভাবেন না জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেছেন, কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে স্যাংশন দেবে, সেসব নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নেই।  ২০ ঘণ্টা জার্নি করে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকা না গেলে কিছু যায় আসে না।  পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। আমরা সেসব মহাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করব।

শনিবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ভোট যারা চুরি করে, ভোট নিয়ে যারা চিরদিন খেলছে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে যারা খেলছে, আমি তাদের (আমেরিকা) বলবো— ওই সন্ত্রাসী দলের দিকে নজর দিন। কানাডার হাইকোর্ট বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সন্ত্রাসী ও দুর্নীতির দায়ে আমেরিকা তারেক জিয়াকে ভিসা দেয় নাই। তারা (বিএনপি) আবার তাদের (আমেরিকা) কাছে ধরণা দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতকিছু বলতে চাই না। শুধু এটাই বলব— যারা অর্থনীতিবিদ, জ্ঞানী-গুণী আছেন, আমরা তো লেখাপড়া এত বেশি জানি না। শুধু দেশের মাটি মানুষকে চিনি। বাংলাদেশ, নদী-নালা, খাল-বিল চিনি। বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ কোথায়, কী করলে ভালো হবে সেটা জানি। সেটাই মাথায় রেখে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির দায়ে আমেরিকা কিন্তু তারেক জিয়াকে ভিসা দেয়নি। তারাই এখন আবার ওদের পেছনে ধর্না দিয়ে বেড়াচ্ছে। জনগণের প্রতি আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। তারা জানে একমাত্র নৌকায় ভোট দিলে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নত জীবন পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের বলব, জনগণের স্বার্থে জনগণের কারণে ত্যাগ স্বীকার করলে জনগণ কিন্তু সেটার মর্যাদা দেয়। এই কথাটা মনে রাখতে হবে। জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি, জাতির পিতাও করে গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ আজকে যে গণতান্ত্রিক ধারা অর্জন করতে পেরেছে সেখানে আওয়ামী লীগসহ আমাদের সমমনা দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আমরা গণতন্ত্র অর্জন করতে পেরেছি। যার ফলে আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের প্রতি আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। তারা জানে একমাত্র নৌকায় ভোট দিলে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নত জীবন পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশুভ শক্তি যেন মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে দিকে লক্ষ্য রাখা আমাদের দায়িত্ব। এজন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা দূরে সরিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট যথোপপযুক্ত হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘(বাজেট সম্পর্কে) কে কি বলছে তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই। আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার জন্য আমরা একটি উপযুক্ত বাজেট ঘোষণা করেছি।’

ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগরের হাজার হাজার উৎসাহী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের দলীয় প্রধানকে দেখতে সমবেত হওয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি একটি মহাসমাবেশে পরিণত হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাদের পক্ষে আছে। তাই, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।

প্রায় ৭.৬২ লাখ কোটি টাকার এত বিশাল বাজেটের বাস্তবায়নে যারা শঙ্কিত, তাদের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর বাজেট পাশের আগে কেউ কেউ বলেন, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব না। কিন্তু, আমরা প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা  ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়লা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না, কয়লা কিনতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুতই গ্যাস আমদানির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে। দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত বিদ্যুৎ পেয়ে অভ্যস্ত। তাই হঠাৎ বিদ্যুতের কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়- তা প্রমাণিত। আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের স্বার্থে গড়ে উঠেছে। বিএনপি ভোট চুরি করেই সারাজীবন চলছে। তাই তারা নিজেরা সবাইকে চোর মনে করে। দেশ থেকে পাচার করা চোরাই টাকা দিয়ে বিএনপি ও জামায়াত দেশের বিরুদ্ধেই অপবাদ চালাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান, এমপি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ