আজকের শিরোনাম :

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের আলোচনা সভা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০১:১৮ | আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৭

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে ৩১ মার্চ বিকাল ৪ ঘটিকায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে "বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা" শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দীনের সভাপত্বিতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর  ড. সামসুদ্দিন আহমেদ। 


সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সরদার মাহমুদ হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন নগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি এম. মুনসুর আলী, হারুন-অর-রশিদ, বিনয় ভূষণ তালুকদার, মো. সিদ্দিকুজ্জামান, ডা: অসিত মজুমদার, সঞ্জীব কুমার, নড়াইল জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক ড. তপন কুমার সরকার, নগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্মল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম, আজিবুর রহমান, নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক শাহনাজ পারভীন এলিজ, নারী বিষয়ক সম্পাদক লাইলা ফেরদৌস হাসান, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, উপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রোকৌশলী মশিউর রহমান,  উপ দপ্তর সম্পাদক শেখ ইমরান হোসেন, সহ সম্পাদক ওহিদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল, সাংবাদিক শোয়েব চৌধুরী।

ড. সামসুদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কে আরো বেশী অনুধাবন কর‍তে হবে, তাঁর কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রচার করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মাঝে চিরকাল থাকবেন, থাকবে তাঁর মহান কীর্তি।’ স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে মেজর জিয়া নিজেই ১৯৭৭ সালে দেশ বাংলা পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ১৯৭১-এর ২৭ মার্চ আমার নেতা মহান রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আমি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলাম। তিনি নিজেই বলেছেন তিনি দুই বারই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছি্লেন। তদানীন্তন পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতা এবং বাঙালি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা হিসাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার একমাত্র বৈধ এখতিয়ার ও বৈধ কর্তৃত্ব বঙ্গবন্ধুই ছিল।

সভাপতির বক্তব্যে আলাউদ্দীন বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা বিতর্ক করেন তারা জ্ঞানপাপী।’ তিনি আরও বলেন, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে প্রণীত হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্রে’ বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ শুরু করলে ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়্যারলেসের মাধ্যমে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরীর কাছে স্বাধীনতার ঘোষণার বার্তাটি পাঠান। ২৬ মার্চ বেলাল মোহাম্মদের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হলে প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এর পর পাঠ করেন আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। নবম ব্যক্তি হিসেবে পরদিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে একই ঘোষণা জিয়াউর রহমান পাঠ করেন বলে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য ওই ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কতৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণায় সারা পৃথিবীর মিডিয়া গুলোয় যে খবর ছাপানো হয়েছিলো সেই প্রসঙ্গে মাহামুদ হাসান বলেন, ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়, ঢাকায় পাকিস্তান বাহিনী আক্রমণ শুরু করেছে। মুজিবুর রহমান একটি বার্তা পাঠিয়েছেন এবং সারা বিশ্বের নিকট সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। দিল্লির দ্য স্টেটসম্যান-এর খবর ছিল, বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে রহমানের পদক্ষেপ। একটি গোপন বেতার থেকে প্রচারিত ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের পূর্বাংশকে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে নতুন নামকরণ করেছেন।
দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, লন্ডন: ২৭শে মার্চের পত্রিকায় 'সিভিল ওয়ার ফ্লেয়ারস ইন ইস্ট পাকিস্তান: শেখ এ ট্রেইটর, সেইস প্রেসিডেন্ট' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা ও ইয়াহিয়া খান তার বেতার ভাষণে শেখ মুজিবকে বিশ্বাসঘাতক বলার কথা উল্লেখ করা হয়। ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় ২৭শে মার্চের এক খবরে বলা হয়, "...২৬শে মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতির উদ্দেশ্যে রেডিওতে ভাষণ দেয়ার পরপরই দ্য ভয়েস অব বাংলাদেশ নামে একটি গোপন বেতারকেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর এই ঘোষণা অপর এক ব্যক্তি পাঠ করেন।"
এর বাইরে ভারতের বহু সংবাদপত্র এবং আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ক্যানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, হংকং, নরওয়ে, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশের খবরে স্থান পায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার খবর। আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ারস হেরাল্ডের ২৭শে মার্চের সংখ্যার একটি খবরের শিরোনাম ছিলো, "বেঙ্গলি ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিক্লেয়ার্ড বাই মুজিব।" নিউইয়র্ক টাইমস-এও শেখ মুজিব ও ইয়াহিয়ার ছবি ছাপানো হয়। পাশেই লেখা হয় "স্বাধীনতা ঘোষণার পরই শেখ মুজিব আটক"। বার্তা সংস্থা এপির খবর ছিল: "ইয়াহিয়া খান পুনরায় মার্শাল ল দেয়ার ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।"
আয়ারল্যান্ডের দ্য আইরিশ টাইমস-এর শিরোনাম ছিল - পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা আর সাথে ছিল শেখ মুজিবের ছবি। ব্যাংকক পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, "শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নাম দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।"

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ আফসা আহমেদ শানু, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাইফুজ্জামান মিন্টু, চিকিৎসা সেবা বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আনোয়ার ফারুকী, উপ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শেখ মো: ফারুক শাহ, উপ চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস রনি, সহ-সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সদস্য রিয়াজুল ইসলাম শাওন, আব্দুর রাজ্জাক, আবু আলম, রূপনগর থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এইচ এম শামীম, সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নিমুন, কাফরুল থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি সৈয়দ জামাল, সাধারণ সম্পাদক আফজাল সিরাজ উদ্দীন, ধানমন্ডি থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি শওকত আকবর, সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মুসফেক উর সালেহীন, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সুমন মোল্লা,সদস্য ইমাম শাহীন আহমেদ প্রমুখ।

এবিএন/ইমরান/এসই

এই বিভাগের আরো সংবাদ