আজকের শিরোনাম :

জাতীয় পথশিশু দিবস আজ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২১, ১২:২৭

ক্ষুধার জ্বালায় মায়ের কোল ছেড়ে শিশুরা যখন মা-বাবার ঘর ছেড়ে অজানার পথে পা বাড়ায় তখনই তাদের পরিচয় হয় পথশিশু। রাষ্ট্রযন্ত্রও এদের সম্বন্ধে অসচেতন। ফুটপাত, পার্ক, ট্রেন ও বাসস্টেশন, লঞ্চঘাট, সরকারি ভবনের নিচে বসবাসকারী এসব পথশিশুকে দেখার কেউ নেই। 

আজ জাতীয় পথশিশু দিবস। দেশের পথশিশুদের সুরক্ষা ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিবছর আমাদের দেশে পালিত হয় এই দিবস।  

উদ্বেগের বিষয়, দেশে পথশিশুর সংখ্যা কতো- এর কোন পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে বেসরকারি এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে ২৫ লাখ। এরমধ্যে আড়াই থেকে তিন লাখেরও বেশি পথশিশুর অস্থায়ী আবাস রাজধানী ঢাকার পিচঢালা পথে। এসব পথশিশু সমাজ-সংস্কৃতির কোন সুবিধা পাচ্ছে না। অভাব তাদের নিত্যসঙ্গী। সমাজের দুষ্টচক্রের সাথে নিয়তই তাদের ওঠাবসা। ছেলে শিশুদের ব্যবহার করা হয় মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। মেয়ে পথশিশুদের অধিকাংশই অল্প বয়সে পতিতাবৃত্তির মতো ঘৃণ্য পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে বাধ্য হচ্ছে।

সোশ্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগাম (সিপ) নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ‘পথশিশুদের অমানবিক জীবন ও বিভিন্ন সমস্যা শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থের অভাবে পথশিশুদের ৭৫ ভাগ ডাক্তারের কাছে যেতে পারে না। অসুস্থ হলে তাদের প্রায় ৫৪ ভাগের দেখাশুনার জন্য কেউ নেই। পথশিশুদের প্রায় ৪০ ভাগ প্রতিদিন গোসল করতে পারে না। আর ৩৫ ভাগ শিশু খোলা জায়গায় পায়খানা করে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠে তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে বর্তমানে পথশিশুর সংখ্যা ১০ লাখ। অথচ ক্রমবর্ধমান এ শিশুদের কল্যাণে নেই কোন নীতিমালা।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট সূত্র মতে, ঢাকা বিভাগে মাদকাসক্ত শিশুর প্রায় ৩০ শতাংশ ছেলে এবং ১৭ শতাংশ মেয়ে। মাদকাসক্ত ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলে এবং মেয়ে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

আমাদের দেশে অনেকে পথশিশুদের জন্য অনেক কিছু করেন। কেউ ঈদের সময় নতুন পোশাক কিনে দেন, কেউ পিঠা উৎসবের, আবার কেউ খেলাধুলার আয়োজন করেন, কেউ কেউ পথশিশুদের জন্য স্কুল খুলে তাদের প্রাথমিক শিক্ষা দিচ্ছেন। কিন্তু এসব পদক্ষেপ পথশিশুদের দীর্ঘ মেয়াদে কোনো উপকার করে না। 

উন্নত দেশগুলোয় দেখা যায়, প্রত্যেক শিশুর দায়িত্ব রাষ্ট্র কোনো না কোনোভাবে পালন করে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো এটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

আন্তর্জাতিক শিশু সনদ, শিশু আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনে প্রতিটি শিশু তাদের সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশ লাভের জন্য শিক্ষা, খেলাধুলা, খাদ্য ও পুষ্টি, বিনোদন পাওয়ার অধিকার রাখে। শিশুদের সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে এসব সনদ ও আইনে । কিন্তু আমাদের দেশের পথশিশুরা এসব অধিকার থেকে বঞ্চিত।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ