ঢাকা টাইমস সম্পাদক দোলনের জামিন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪, ১০:১৬

ফরিদপুরের আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলায় কৃষকলীগ নেতা ও ঢাকা টাইমস পত্রিকার সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস-সামছ জগলুল হোসেন জামিন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, মামলা দায়েরের পর আরিফুর রহমান দোলন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন পান।

মামলার চার্জশিট গ্রহণের জন্য গত ৫ মার্চ দিন ধার্য ছিল। ওই দিন তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।

আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ২২ এপ্রিল মামলার চার্জশিট গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

গত বছর ২২ জুন মোট ৪৭ জনকে অভিযুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন। তবে এই আদালতের অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের এখতিয়ার না থাকায় মামলার নথি তিনি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত হিসেবে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন।

এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ছিল। কিন্তু সেদিন মামলাটিতে কিছু অসংগতি দেখতে পাওয়ায় আদালত স্বঃপ্রণোদিত হয়ে সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।

সেই নির্দেশনা মেনে নতুন করে আরও ৩৬ জনকে আসামি করে মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। রুবেল-বরকত ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন—সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আপন ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, তার এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জি, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।

সম্পূরক চার্জশিটের নতুন আসামিরা হলেন—নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায়, শামসুল আলম চৌধুরী, দীপক কুমার মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী, সত্যজিৎ মুখার্জি, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু,  ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাছিম, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত হোসেন মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাভ বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ পুনুম, সাহেব সারোয়ার, আমজাদ হোসেন বাবু,  স্বপন কুমার পাল,  অ্যাডভোকেট জাহিদ বেপারী, খলিফা জামাল, হাফিজুল হোসেন তপন, রিয়াজ আহমেদ শান্ত,  আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান,  সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ, মো. রফিক মন্ডল, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন, আফজাল হোসেন খান ও সাংবাদিক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান দোলন।

গত বছর ৫ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মামলার নথিটি সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন।

এই আদালতই চার্জ শুনানিকালে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী গত ২২ জুন মোট ৪৭ জনকে অভিযুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডির সহকারি পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন।

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এছাড়া, মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তারা। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন ওই দুই ভাই। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন তারা। রাজবাড়ীতে ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর এক আইনজীবী খুন হন। সেই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বরকত ও রুবেল।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ