আজকের শিরোনাম :

পুরান ঢাকায় শতবর্ষী পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ১৩:২৬

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিল অফিস নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের ফলে পুকুরটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে। স্থিতাবস্থা জারির আদেশ কার্যকর করে বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

এর আগে গতকাল পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট, কাউন্সিল অফিস নির্মাণ বন্ধ করে পুকুরটি সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে পুকুর দখলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ রিট দায়ের করেন। রিটে স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ২১ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিলর কার্যালয়’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সময় যে পুকুরে গোসল, ধোয়ামোছা চলতো, এখন সেই পুকুর মৃতপ্রায়। চারপাশে ভবনের পর ভবন। পুকুরের ভেতরে এমনভাবে দোকান ও মার্কেট করা হয়েছে যে দোকানের পেছনে যে পুকুর রয়েছে সেটি সড়ক থেকে বোঝাই যাচ্ছে না। দিনের বেলা মার্কেট নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকলেও এখনো রাতের বেলা দোকান তুলে পুকুর দখলের অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের এ পুকুরটি দখলের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বলছে, যারা দখল করছে তারা মামলার পর মামলা করায় আমরা পেরে উঠছি না। জনস্বার্থে পুকুরটি রক্ষায় সবারই এগিয়ে আসা উচিত।

রাজউক ১৯৬৩ সালে গেন্ডারিয়ায় ১৩ দশমিক ৫৭ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে। এর মধ্যে দুই একরের একটি পুকুরও ছিল। পুকুরটির বয়স বর্তমানে প্রায় ১০০ বছর। সেই পুকুরটিই ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে এখন ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, গেন্ডারিয়া পুকুরের চারপাশে মার্কেট, দোকান ও বেশ কয়েকটি রিকশার গ্যারেজ। রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান সবই সেখানে রয়েছে। এ ছাড়া পুকুর দখল নিশ্চিত করতে মার্কেটের একাংশে দোতলা ভবনে নিজের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর সাহানা আক্তার।

এলাকাবাসী জানায়, এখানে বেশির ভাগ দোকানের ভাড়া তোলেন বর্তমান কাউন্সিলরের বাবা শহিদুল ইসলাম।

রাজউকের সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পুকুরটি রাজউকেরই। এটি দখলে নেওয়ার জন্য প্রভাবশালীরা ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে একটি মামলা করে। সে মামলা বহু বছর ধরে চলছিল। এরই মধ্যে বেশির ভাগই দখল হয়ে যায়।

এ বিষয়ে রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম বলেন, যারা দখল করছে তারা মামলার পর মামলা করায় আমরা পেরে উঠছি না। সর্বশেষ আমরা রিভিউ পিটিশনে হেরে গিয়েছি। আমরা চাই পুকুরটি রক্ষায় রাজউকের বাইরেও কেউ কথা বলুক। জনস্বার্থে পুকুরটি রক্ষায় সবারই এগিয়ে আসা উচিত।

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ