আজকের শিরোনাম :

জামিন পেলেন পাবনার সেই ১২ কৃষক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৩:০১

পাবনার ঈশ্বরদীর চাঞ্চল্যকর ঋণ খেলাপি মামলায় গ্রেপ্তার ১২ কৃষকের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। একইসঙ্গে এই মামলার অন্য ২৫ জনকে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক) মো. শামসুজ্জামান এ আদেশ দেন।

জামিনপ্রাপ্তরা হলেন উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের শুকুর প্রামানিকের ছেলে আলম প্রামাণিক (৫০), মনি মন্ডলের ছেলে মাহাতাব মন্ডল (৪৫), মৃত কোরবান আলীর ছেলে কিতাব আলী (৫০), হারেজ মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৩), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ মজনু (৪০), মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০), মৃত সোবহান মন্ডলের ছেলে আব্দুল গণি মন্ডল (৫০), কামাল প্রামানিকের ছেলে শামীম হোসেন (৪৫), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ প্রামানিক (৪৩), মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে নূর বক্স (৪৫), রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (৪৬) এবং লালু খাঁর ছেলে মোহাম্মদ রজব আলী (৪০)। গ্রেপ্তারদের সবাই প্রান্তিক কৃষক। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষকের একটি গ্রুপ বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে জন প্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়। ঋণ খেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তৎকালীন ম্যানেজার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন। 

এদিকে বুধবার (২৩ নভেম্বর) পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পরোয়ানাভুক্ত ৩৭ জনের মধ্যে ১২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

এসব কৃষকের পরিবারের দাবি, ঋণ নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন। তার পাশ বই ও জমা স্লিপও রয়েছে। অথচ সেই অর্থ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তাদের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। 

আদালত চত্বরে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় সভাপতি, বঙ্গবন্ধু জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান কুল ময়েজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বুধবার যখন এসব কৃষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়, তখন তারা সবাই গাজরের ক্ষেতে কাজ করছিল। বাড়িতে ও বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। 

তিনি বলেন, যে কৃষক সকালে ঘুম থেকে ওঠে সারা দেশের মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদনে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন, তাদের হয়রানি করা মোটেও ঠিক হয়নি। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানি মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। 

মামলার বাদী বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বলেন, কৃষকরা ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আমাদের অফিশিয়াল ব্যবস্থা নিয়েছি। তারা তাদের আইনি সহায়তা পেয়েছেন। 

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সুমন, অ্যাডভোকেট কাজী সাজ্জাদ ইকবাল লিটন ও অ্যাডভোকেট মইনুল ইসলাম মোহন। 

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ